অনলাইন ডেস্ক : অসম চুক্তির ৬ নং ধারা কার্যকর করার ব্যাপারে পনেরো দিনের মধ্যে পদক্ষেপ না করা হলে আগুন জ্বলবে বরাকে ! জেলাশাসক কার্যালয় চত্বরে দাঁড়িয়ে মঙ্গলবার এই হুমকি দিলেন বরাক উপত্যকা খিলঞ্জিয়া ফোরামের সভাপতি জিষ্ণু সিংহ। বরাক উপত্যকায় অসম চুক্তির ৬ নং ধারা কার্যকর করার দাবিতে এদিন জেলা কমিশনার মারফত প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে স্মারকপত্র প্রেরণ করে ২১টি জনগোষ্ঠীর যৌথমঞ্চ ‘বরাক উপত্যকা খিলঞ্জিয়া ফোরাম’। জেলা শাসকের হাতে স্মারক পত্র তুলে দেন ফোরামের সভাপতি জিষ্ণু সিংহ, সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চন সিংহ। পরে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কার্যত আগুন ঝরান জিষ্ণু সিংহ। কোনও রাখঢাক না রেখে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ভূমিপুত্রদের সাংবিধানিক রক্ষাকবচ হিসেবে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় অসম চুক্তির ৬নং ধারা কার্যকর করার ঘোষণা হলেও আশ্চর্যজনকভাবে বরাক উপত্যকাকে এর বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, সংখ্যায় কম হলেও বরাকেও এমন জনগোষ্ঠী রয়েছে যারা ভূমিপুত্র। সরকারের একপেশে নীতির জন্য অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়েছেন এই ভূমিপুত্ররা। তিনি বলেন, এদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য উপত্যকায় অসম চুক্তির ছয় নং ধারা অত্যন্ত জরুরি। তা-ই এক ছত্রছায়ায় এসেছে ২১টি জনগোষ্ঠী। মঞ্চের পক্ষ থেকে স্মারকপত্র প্রেরণ করে সরকারকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ না করা হলে গড়ে তোলা হবে তীব্র আন্দোলন। বনধ ডেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্তব্ধ করে দেওয়া হবে বরাক উপত্যকা।
সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চন সিংহ বলেন, অসম চুক্তির ৬ নং ধারা কার্যকর করা থেকে বরাক যেন বঞ্চিত না হয়। কারণ, এই উপত্যকাও অসমের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। মহাসভার কার্যকরী সভাপতি ডঃ প্রভাত সিনহা বলেন, অসম আন্দোলনে সামিল ছিল বরাকও ! এই ভূখণ্ডের অনেকেই অসম আন্দোলনের সময় কারাবরণ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, অসম আন্দোলনের জেরে ওইসময় শিক্ষা বর্ষে অনেক ক্ষতি হয়েছে। আবারও যেন এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। তাই সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে ৬ নং ধারা কার্যকর করার ক্ষেত্রে বরাকের ভূমিপুত্ররা যেন বঞ্চিত না হয়। কোচ রাজবংশী সমাজের পক্ষ থেকে ফোরামের সহ-সভাপতি সুনির্মল রাজবংশী বলেন, কোচ জনগোষ্ঠী বীর চিলারায়ের সময় থেকে বরাক উপত্যকায় রয়েছে। ফলে তারা নিঃসন্দেহে অসমের ভূমিপুত্র। ৬ নং ধারা বরাকেও জরুরি। উপত্যকাকে অসম চুক্তির ৬ নং ধারায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে এদিন ফোরামের ছত্রছায়ায় সামিল হন রংমাই, খাসি, চা জনগোষ্ঠী, হিন্দিভাষী সহ ২১টি জনগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দরা। বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর শতাধিক প্রতিনিধি নিজেদের পরম্পরাগত পোশাক পরিধান করে দাবি পত্র পেশ করতে জমায়েত হন অফিস পাড়ায়।