অনলাইন ডেস্ক : প্রিপেইড স্মার্ট মিটার জোর করে চাপিয়ে দিয়ে জনসাধারণকে লুণ্ঠনের প্রতিবাদে আগামী ১৫ মে সোমবার নাগরিক মিছিলের ডাক দিয়েছে অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছাড় জেলা কমিটি। শনিবার সংগঠনের উকিলপট্টিস্থিত কার্যালয়ে কমিটির জেলা সভাপতি মন্মথ নাথের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত জেলা কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, শহরের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ছাত্র, যুব, মহিলা সংগঠনগুলিকে আন্দোলনে যুক্ত করা হবে। সংগঠনের সভাপতি মন্মথ নাথ জানান, গত ২০ এপ্রিল শিলচরের মেহেরপুরে অবস্থত এপিডিসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজারের কার্যালয়ের সামনে স্মার্ট মিটার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছিল।
সেখানে অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক স্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরিদাস দত্ত, নাগরিক অধিকার রক্ষা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক অতনু ভট্টাচার্য, সমাজকর্মী সাধন পুরকায়স্থ, ফোরাম ফর সোশাল হারমনি-র অরিন্দম দেব, প্রদীপ নাথ, মানস দাস, কোরাস সাংস্কৃতিক সংস্থার বিশ্বজিত দাস, এআইডিএসও-র প্রশান্ত ভট্টাচার্য সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এছাড়া গত ২৫ এপ্ৰিল গুয়াহাটির বিজুলি ভবনের সামনেও একই দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বিদ্যুৎ গ্ৰাহকরা। এতসবের পরও রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি গ্ৰাহকদের জোর করে প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার প্রতিস্থাপনে বাধ্য করছে। এমনকি প্রিপেইড মিটার গ্রহণে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদের মোবাইলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকিমূলক মেসেজ পাঠিয়ে প্রিপেড ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য করানো হচ্ছে। যা সম্পূৰ্ণ গ্ৰাহক আইন বিরোধী পদক্ষেপ।
এই ব্যবস্থা চালুর পর থেকে জনগণ এপিডিসিএল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক হারে বিদ্যুৎ মাশুল সংগ্রহের অভিযোগ করছেন। অথচ এই অভিযোগের নিষ্পত্তি ক্ষমতা স্থানীয় বিদ্যুৎ কার্যালয়ে হচ্ছে না। তারা গ্রাহকদের অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য গ্রাহকদের গুয়াহাটিতে যেতে পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, গ্রাহকদের উপর নেমে আসা এই সর্বনাশা আক্রমণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।
প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার সংস্থাপনের আসল উদ্দেশ্য বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার ব্যক্তিগতকরণ ঘটানো। ফলে ভবিষ্যতে অনেক গরিব সাধারণ মানুষ বিদ্যুতের আলো জ্বালাতে পারবেন না। এছাড়া গ্রাহকদের হয়রানি শোনার জন্য সরকারি কোনও বিভাগ বা ‘ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটারি কমিশন’-এর মতো কোনও সংস্থাও থাকবে না।
সাধারণ বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদের স্বাৰ্থের পরিপন্থী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ১৫ মে শিলচরের নাগরিক মিছিলে যোগদান করতে বেলা সাড়ে এগারোটায় শহিদ ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে উপস্থিত থাকতে অল আসাম ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সম্পাদক অঞ্জনকুমার চন্দ, রাহুল রায়, হানিফ আহমেদ বড়ভুইয়াঁ, কনক পাল, খাদেজা বেগম লস্কর প্রমুখ।