অনলাইন ডেস্ক : দিগরশ্রীকোনা এলাকার বাসিন্দা অটোচালক বীরেন ঘাটোয়ারের হত্যাকাণ্ডে ধৃত রতন খন্ডাইক (২২)কে প্রেরণ করা হলো হাজতে । হেফাজত পর্বে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার পুলিশ রতনকে ফের আদালতে পেশ করে । এরপর আদালতের নির্দেশে তাকে প্রেরণ করা হয়েছে হাজতে। পুলিশের এক সূত্র দাবি করেছেন, জিজ্ঞাসাবাদে শ্রীকোনা মাছঘাট এলাকার বাসিন্দা রতন হত্যার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, এর পেছনে রয়েছে প্রণয় ঘটিত কারণ।
গত ২ জুলাই বাদ্রিপার চতুর্থ খন্ডে বাইপাসের পাশে বীরেনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার গলায় ছিল গামছা দিয়ে ফাঁস পরানো এবং নাক দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসার চিহ্নও দেখা যায়। ২ জুলাই মৃতদেহ উদ্ধার হলেও সঙ্গে সঙ্গে তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে খবর পেয়ে পরিজনরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে শনাক্ত করেন মৃতদেহ। পরিজনরা পুলিশকে জানান, ১ জুলাই বীরেন অটো নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। এরপর আর ফেরেননি। পরদিন বীরেনের মৃতদেহ উদ্ধার হলেও সেখানে ছিল না অটো। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ শীঘ্রই
রতনের কথা জানতে পারে। তবে রতনকে কিছুদিন নাগালে পাওয়া সম্ভব হয়নি। গা ঢাকা দিয়ে ছিল সে। পরবর্তীতে গত ৫ আগস্ট সে বাড়িতে এলে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশের এক সূত্র জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে রতন যে তথ্য দিয়েছে সে অনুযায়ী,১ আগস্ট বীরেন অটো নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর পরিকল্পনা অনুযায়ী সে তার সঙ্গী হয়। বীরেনের অটোতে চড়েই প্রথমে তারা শিলচর রামনগর আইএসবিটি সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে মদ্যপান করে। মদ্যপানের পর সেখানে এক ধাবায় খাওয়া-দাওয়া সেরে বীরেনের অটোতে চড়েই বড়খলার ময়নাগড় এলাকায় যায়। সেখানে রয়েছে বীরেনের এক সঙ্গিনী, তার সঙ্গে সাক্ষাতের পর বেরিয়ে এসে দুজন মিলে ফের মদ্যপান করে। রাত ১২টা নাগাদ তারা ছিল ময়নাগড়ে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সে নিজে কম পরিমাণ মদ্যপান করে বীরেনকে বেশি খাইয়েছিল। এতে বীরেন অনেকটা বেসামাল হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে যায় বাদ্রিপার চতুর্থ খন্ড এলাকায় বাইপাসের নির্জন স্থানে। এরপর বীরেনের গলায় গামছা দিয়ে
ফাঁস পরিয়ে হত্যার পর মৃতদেহ ফেলে দেয় পাশের জমিতে। এভাবে হত্যার পর মৃতদেহ ফেলে রেখে সে চলে যায়। রাতে বাইরে কাটিয়ে পরদিন সকাল সাতটা নাগাদ সে পৌঁছে নিজের বাড়িতে । এরপর পুলিশ তাকে সন্দেহ করতে পারে অনুমান করে গা ঢাকা দেয়। কিছুদিন বাইরে কাটিয়ে তার মনে হয়েছিল হয়তো পুলিশ তাকে সন্দেহ করতে পারেনি। তাই ৫ আগস্ট ফিরে আসে বাড়িতে।
পুলিশের সূত্রটি জানান, হত্যার কথা স্বীকার করলেও বীরেনের অটো সম্পর্কে রতন বিশেষ কোনও তথ্য দেয়নি। সে জানিয়েছে, হত্যার পর বাইপাসেই অটো রেখে গিয়েছিল। কে বা কারা অটো সেখান থেকে নিয়ে গেছে, এ নিয়ে তার কিছু জানা নেই । অটো নিয়ে রতন এভাবে বয়ান দিলেও পুলিশ তা ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না। সন্দেহ করা হচ্ছে হত্যাকাণ্ডে রতনের সঙ্গে হয়তো ছিল আরও এক বা একাধিক ব্যক্তি। আর অটো নিয়ে গেছে তারাই। আর এদের আড়াল করতে রতন একাই হত্যার কথা বলেছে। যদিও জিজ্ঞাসাবাদে বারবার তাকে এই প্রশ্ন করা হলেও সে অটো নিয়ে আউড়ে গেছে একই কথা।
পুলিশের সূত্রটি এটুকু জানিয়ে বলেন রতন হত্যার কারণ হিসেবে বয়ান দিয়েছে প্রনয়ঘটিত কান্ডের জেরে প্রতিহিংসা নিতে সে ঘটনাটা ঘটিয়েছে। যদিও কোন নারীর সঙ্গে প্রনয়ঘটিত সম্পর্কের জেরে ঘিরে ঘটনাটা ঘটেছে তদন্তের স্বার্থে এ নিয়ে সূত্রটি মুখ খুলতে রাজি হননি।