অনলাইন ডেস্ক : মূখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মার দূর্নীতি বিরোধী হুঙ্কার এবং শিক্ষা মন্ত্রী ড. রনোজ পেগু স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে শিক্ষার অগ্রাধিকারের যত বড়াই করুন না কেন সবই আসলে বৃথা বলেই প্রমাণিত হয় কাছাড় জেলার জয়পুর রাজাবাজার প্রাথমিক শিক্ষা খন্ডের একাংশ বিদ্যালয়ের শৈক্ষিক পরিবেশ ও স্কুলের বাস্তব পরিকাঠামো। দূর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নিয়ে পূর্বের সরকারের কটাক্ষ করা বর্তমান বিজেপি সরকারের আমলেই সবচেয়ে বেশি দূর্নীতি চলছে রাজাবাজার শিক্ষা খন্ড এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এই প্রতিবেদনে রাজাবাজার শিক্ষা খন্ডের মাত্র একটি বিদ্যালয়ের অবিশ্বাস্য হলেও সত্য কাহিনী জনসমক্ষে তুলে ধরা হবে।। এই শিক্ষা খন্ডের জিরিঘাট চুরপুন্জির ৬১৯ নম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়।যে বিদ্যালয় টি প্রতিষ্টিত হয়েছিল ১৯৫৬ সালে। বহু পুরানো ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয়ের অবস্থা আজ একেবারে তথৈবচ। যোগাযোগের অপ্রতুলতার কারনে সরকারি উচ্চপদস্থ কোন কর্তা,বিভাগীয় কোন আধিকারিক এই বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন না। আশ্চর্যের বিষয় চারজন শিক্ষক শিক্ষিকা ছিলেন কিন্তু কোনদিন কোন শিক্ষক শিক্ষিকা এই বিদ্যালয়ে পা রাখেননি। একদিনও স্কুলে না গিয়ে রীতিমত মাসের পর মাস বেতন পেয়ে গেছেন চারজন শিক্ষক শিক্ষিকা। চারজন শিক্ষকের বিপরীতে খাতাপত্রে ৭২ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। বাস্তবে কিন্তু ৭২ জন পড়ুয়া নেই এই বিদ্যালয়ে। আরও আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে চারজন শিক্ষক শিক্ষিকার বিপক্ষে রয়েছেন দুজন প্রক্সি টিচার।স্থানীয় একজন যুবক, একজন যুবতী প্রক্সি শিক্ষক হিসেবে গত এক বছর থেকে এই স্কুলে পাঠদান করছেন। তাদের ভাষ্যমতে এখানে চারজন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন। তারা কোনদিন বিদ্যালয়ে আসেননা। তাদের হয়ে টাকার বিনিময়ে পাঠদান চালিয়ে যান প্রক্সি টিচার ডেভিড মার ও লালহিমপুই মার। স্কুল চলাকালীন তাদের কে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়।তারা নিজেরাই স্বীকার করেন প্রক্সি শিক্ষক বলে। তারা যে বিদ্যালয়ে পাঠদান করছেন গত একবছর থেকে একথা অজানা নয় রাজাবাজার শিক্ষা খন্ডের বিইইও তপন প্রজাপতির। চারজন শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন না এব্যাপারে ওয়াকিবহাল বিইইও তপন প্রজাপতি। এখানে রয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা তমালিকা দেব। সহকারি শিক্ষক কিরন রন্জন দাস,মিসবাহ উদ্দিন লস্কর, বনানী দাস। এদের কাউকে কোনদিন দেখেননি স্থানীয় লোকজন। এখানে আরও মজার বিষয় হচ্ছে অতি সম্প্রতি গত সপ্তাহে একই নির্দেশে এই চারজন শিক্ষক শিক্ষিকা কে অন্যত্র বদলি করে স্কুল টি একেবারে ইচ্ছাকৃতভাবে টিচার লেস করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষিকা তমালিকা দেব বদলি হয়েছেন সোনাই শিক্ষা খন্ডের ৯৩ নম্বর কৃষ্ণপুর এলপি স্কুলে। বনানী দাস বদলি হয়েছেন শিলচর আরবান ব্লকের ৩৬৫ নম্বর উত্তর কৃষ্ণপুর এলপি স্কুলে। কিরন রন্জন দাস ১৮৯ নম্বর লাংলাছড়া এলপি স্কুলে বদলি হয়েছেন। মিসবাহ উদ্দিন লস্কর ১০০৭ নম্বর উত্তর দলইছড়া এলপি স্কুলে বদলি হয়েছেন।একসাথে এক স্কুল থেকে চারজন শিক্ষককে বদলি করার বিষয়টি অত্যন্ত রহস্যজনক। এখানে বড় অঙ্কের লেনদেনের বিনিময়ে চারজন শিক্ষক শিক্ষিকা নিজের পছন্দের বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে গেছেন অভিযোগ উঠেছে। বিভাগীয় আধিকারিক কিসের স্বার্থে স্কুলটি টিচার লেস করলেন তার কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। শুধু এখানেই দূর্নীতি শেষ নয়, দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে এই স্কুলের পড়ুয়াদের নামে বরাদ্দ মধ্যাহ্ন ভোজনের অর্থ, ইউনিফর্মের টাকা, পরিকাঠামো উন্নয়নের বার্ষিক বরাদ্দ, ভবন নির্মাণের অর্থ সব তহবিল হাপিশ হয়ে গেছে। স্কুল গৃহ দেখলেই অনুমান করা যায় এই স্কুল গৃহ নির্মাণ কিংবা সংস্কারে এযুগে এক টাকাও ব্যয় হয়নি। কোথায় গেল দীর্ঘদিনের বরাদ্দ অর্থ।অন্তত ম্যাজিষ্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত হলে আসল রহস্য ফাঁস হয়ে যাবে।নেই টয়লেট, নেই রান্নাঘর। একেবারে জীর্নদশা গ্রস্ত একটি নামেমাত্র গৃহ রয়েছে। যেখানে ছাত্রছাত্রীরা বসার মত কোন পরিকাঠামো নয়। রাজ্যের শিক্ষা বিভাগকে একেবারে উলঙ্গ করে দেওয়ার মত পরিস্তিতি ৬১৯ নম্বর চুরপুন্জি এলপি স্কুল।