অনলাইন ডেস্ক : ঝন্ডি চার-মুন্ডা তিন, উৎসবের মরশুমে বিভিন্ন বাগান এলাকায় এমন সব আওয়াজ যেন হয়ে পড়ে অতি স্বাভাবিক। উৎসবের মরশুমে বোনাসের নামে শ্রমিকদের হাতে আসে কিছু অতিরিক্ত অর্থ। আর এই অর্থ নিজেদের হাতে নিয়ে যেতে ওৎ পেতে থাকে জুয়াড়ি, মদ বিক্রেতা থেকে ধরে অন্যান্য অনেক অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত লোকেরা। শেষ পর্যন্ত এসবের দরুন বোনাসের অতিরিক্ত অর্থ কোনও কাজে আসে না অনেক শ্রমিকের। মদ- জুয়ার পেছনেই নিষেশ হয়ে যায় সবকিছু। এসবের দিকে লক্ষ্য রেখে এবার উৎসবের মরশুমে কাছাড়ের বাগানগুলোতে মদ- জুয়ার প্রচলন রুখতে গুরুত্ব আরোপ করা হলো প্রশাসনের সভায়।
জেলায় বাগান শ্রমিকদের পুজোর বোনাস পর্ব যাতে শান্তিপূর্ণভাবে মিটে যায় এ নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার শিলচরে জেলা শাসকের কার্যালয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক বৈঠক আহ্বান করা হয়। ওই বৈঠকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক অন্তরা সেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত সেন, সহকারী শ্রম আয়ুক্ত কৃপাময় দেব, বাগানের মালিক পক্ষের সংগঠন টাই ও আই টি এ-র কয়েকজন কর্মকর্তা, বিভিন্ন বাগানের ম্যানেজার ও শ্রমিক সংগঠন বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়নের রাজদীপ গোয়ালা, সনাতন মিশ্র, রবি নূনিয়া ও দুর্গেশ কুর্মি, ভারতীয় চা মজদূর সংঘের কাঞ্চন সিং, রঞ্জিত সাহু, ও রাজিব রাই সহ অন্যান্যরা।
জানা গেছে বৈঠকে শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ার দাবি জানানো হয়। সঙ্গে পুজোর অন্তত ১৫ দিন আগে যাতে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের হাতে বোনাসের অর্থ তুলে দেন এই দাবিও জানানো হয়।
আলোচনায় উঠে আসে শ্রমিকদের বোনাস প্রাপ্তির পর বাগানে বাগানে জুয়া ও মদের রমরমার প্রসঙ্গও। শ্রমিক ইউনিয়ন গুলোর কর্মকর্তারা এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, অনেক শ্রমিকের বোনাসের সিংহভাগই চলে যায় এসবের পেছনে। এতে বোনাস পেয়েও এই শ্রমিকদের কোনও লাভ হয় না। ইউনিয়ন গুলোর কর্মকর্তারা এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে উৎসবের সময়কালে বাগানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েনের জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত সেন জানান, বাগানে বাগানে হয়তো প্রচুর সংখ্যক নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা সম্ভব হবে না। তবে মদ ও জুয়ার প্রচলন রুখতে প্রতিটি বাগানে নিয়মিত টহলদারির ব্যবস্থা করা হবে।
বৈঠকের পর বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে রাজদীপ গোয়ালা বলেন, শ্রমিকরা যাতে আনন্দমুখর পরিবেশে উৎসব উদযাপন করতে পারেন এর জন্য তারা সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই কথা বলেন ভারতীয় চা মজদুর সংঘের কাঞ্চন সিং-ও।