অনলাইন ডেস্ক : সম্প্রতি যোরহাটে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল আলফা স্বাধীন এবং এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন স্থানীয় যুবককে জেরা করছে পুলিশ। টানা চারদিন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেওয়ার পর সোমবার শেষ রাতে বাড়ির পাশে এক গাছে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে স্থানীয় এক যুবক। এবার রাজ্য পুলিশের প্রধান জ্ঞানেন্দ্র প্রতাপ সিং এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং তিনি একজন আইজিপিকে তদন্ত করতে বলেছেন। নিহত যুবকটির নাম দীপঙ্কর গগৈ, তার বাড়ি যোরহাটের তিতাবর এলাকায়। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, প্রথমে তাকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ এবং একদিন থানায় রেখে বিভিন্ন শর্তে বাড়ি ফিরতে দেয়। তবে তার পরের দিন থেকে শুরু হয় নতুন পদ্ধতি। রোজ সকালে পুলিশের গাড়ি এসে তাকে তুলে নিয়ে যেত এবং রাতে সে ফিরে আসত। এতে ধীরে ধীরে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে দীপঙ্কর এবং বাড়ির লোকেদের জানায় সে আর বেশিদিন এই শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে পারবেনা। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পাশে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান পরিবারের লোকেরা। তারা বলেন, ‘যোরহাটে যখন গ্রেনেড বিস্ফোরণ হয়েছিল, তখন দীপঙ্কর বাড়িতেই ছিল এবং রান্না করছিল। একসময় সে আলফার সদস্য ছিল তবে সরকার এবং পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে সে ফিরে আসে। সে সরকারের কথা মতোই মূল স্রোতে ফিরে সাধারণ জীবনযাপন করছিল। তাকে এভাবে হেনস্থা করার কি দরকার ছিল আমরা জানি না। মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য পুলিশের প্রধান বারবার জঙ্গিগোষ্ঠীতে যোগ দেওয়া যুবকদের ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন। তবে তারা ফিরে আসার পর যদি এভাবে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়, তাহলে তাদের কথা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য, এনিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন উঠবে।’ জিপি সিং মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে টুইটারে লেখেন, ‘দীপঙ্কর গগৈ নামের যুবকের আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। সম্প্রতি যে গ্রেনেড হামলা হয়েছিল সেটাকে কেন্দ্র করে একটা তদন্ত চলছে এবং ওই তদন্তের অংশ হিসেবেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তার আত্মহত্যার পিছনে কি কারণ থাকতে পারে এটা যাচাই করে দেখা হবে। আইজিপি স্তরের একজন আধিকারিক তদন্ত করবেন। দীপঙ্করকে থানায় যেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, সেই যায়গার সিসিটিভি ফুটেজ সহ অন্যান্য বিষয় যাচাই করে দেখা হবে। তদন্তের সময় তার যে মেডিকেল পরীক্ষা হয়েছিল, সেই রিপোর্ট এবং মৃতদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট যাচাই করে দেখবেন আইজিপি।