অনলাইন ডেস্ক : কোনও সরকারি বিভাগের অভ্যন্তরে কান পাতলেই কর্মী সংকট নিয়ে শোনা যায় নানা কথা। প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মীর অভাবে কাজকর্ম ঠিকমতো চালানো যাচ্ছে না, বিভাগীয় অধিকর্তাদের সঙ্গে কথা বললেই শোনা যায় এমন আক্ষেপ। তবে কাছাড়ে পশুপালন ও পশু চিকিৎসা বিভাগে বিরাজ করছে এর সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। প্রয়োজনের তুলনায় জেলায় ওই বিভাগে কর্মী সংখ্যা অনেকটাই বেশি। এই পরিস্থিতিতে কাছাড় থেকে ওই বিভাগের কর্মীদের অন্য জেলায় স্থানান্তরের নির্দেশ দিলেন বিভাগীয় মন্ত্রী অতুল বরা।
পশু পালন ও পশু চিকিৎসা, কৃষি, দুগ্ধ উন্নয়ন ও সীমান্ত সুরক্ষা ইত্যাদি বিভাগের মন্ত্রী অতুল বরা শুক্রবার শিলচরে এসে জেলা শাসকের কার্যালয়ে বরাক উপত্যকার তিন জেলার এসব বিভাগের আধিকারিক ও প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের নিয়ে এক পর্যালোচনা বৈঠকে মিলিত হন । ওই বৈঠকেই বেরিয়ে আসে কাছাড়ে পশুপালন ও পশু চিকিৎসা বিভাগে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক সংখ্যক কর্মী থাকার কথা। জানা গেছে, বৈঠকে মন্ত্রী পশুপালন ও পশু চিকিৎসা বিভাগের করিমগঞ্জের আধিকারিকদের কাছে বিভাগীয় কাজকর্ম সম্পর্কে রিপোর্ট চাইলে তাকে জানানো হয় ওই জেলার নয় জন ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট “অ্যাটাচমেন্ট”-এ রয়েছেন কাছাড় জেলায় । যার দরুন করিমগঞ্জে “ফিল্ড এসিস্ট্যান্ট”-এর অভাবে কাজকর্মের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। একথা শুনে মন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত কাছাড়ের বিভাগীয় আধিকারিক জিতেন ভূঁইয়া এবং বরাক উপত্যকার দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সঞ্চালক মনোরঞ্জন সরকারের কাছে ব্যাপারটা জানতে চান। তারা মন্ত্রীকে জানান কাছাড়ের ১৮৭ জন ফিল্ড এসিস্ট্যান্ট- এর পদ থাকলেও সেই স্থলে রয়েছেন ২০০জন। একথা শুনে মন্ত্রী বৈঠকে বসেই মোবাইলে যোগাযোগ করেন গুয়াহাটিতে থাকা বিভাগীয় সঞ্চালকের সঙ্গে। এবং নির্দেশ দেন অতিরিক্ত এই কর্মীদের “অ্যাটাচমেন্ট” বাতিল করে মূলত তারা যে সব জেলায় নিযুক্ত রয়েছেন সেসব জেলায় ফেরত পাঠাতে।
এসবের মাঝে বৈঠকে উপস্থিত উধারবন্দের বিধায়ক মিহির কান্তি সোম উষ্মা ব্যক্ত করে কাছাড়ের বিভাগীয় আধিকারিকদের উদ্দেশ্য করে বলে ওঠেন-“ফিল্ড এসিস্ট্যান্টদের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হওয়া সত্ত্বেও এজেলায় কাজের স্থলে এদের খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। বিধায়ক এ কথা বলার পর, আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মন্ত্রী। ফিল্ড এসিস্ট্যান্টরা যাতে কাজের ক্ষেত্রে সক্রিয় থাকেন এর জন্য কড়া হাতে ব্যবস্থা নিতে বলেন বিভাগীয় আধিকারিকদের।
জানা গেছে বৈঠকে মন্ত্রী জানান,, সমগ্র রাজ্যে পশুপালন ও পশু চিকিৎসা বিভাগে শীঘ্রই ৬০০ জন চিকিৎসক নিযুক্ত করা হবে। এছাড়া গোবাদি পশুর কৃত্রিম প্রজননের উপর বিশেষ জোর দেন তিনি। কৃষি বিভাগের আধিকারিকরা কাছাড় জেলায় তাদের বিভাগে কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম রয়েছে বলে জানালে মন্ত্রী শীঘ্রই নতুন কর্মী নিযুক্তি দেওয়া হবে বলে জানান। এছাড়া পিএম কিষাণ প্রকল্পের অধীনে যাতে এক শতাংশ উপযুক্ত ও যোগ্য কৃষকদের বাছাই করা এবং ফার্ম মেশিনারি কম্বাইন হারভেস্টার, মিনি রাইস মিল ওয়েল মিল ইত্যাদি রেহাই মূল্যে বিতরণের প্রক্রিয়া, শীঘ্র শেষ করারও নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী শিলচরে কৃষি বিভাগের কার্যালয়ে থাকা ফলমূল সংরক্ষণ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানালে মন্ত্রী শীঘ্রই অর্থ মঞ্জুরের আশ্বাস দেন। এছাড়া তিনি কাছাড়ে ১ লক্ষ লিটার উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্প স্থাপনের ব্যাপারেও কথাবার্তা বলেন।