অনলাইন ডেস্ক : একাগ্রতা ও নিষ্ঠার জোরে একজন মানুষের পক্ষে কঠিন কাজ বা নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছা সম্ভব। তারই জ্বলন্ত উদাহরণ অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলার পিঙ্কি রাই। তিনি হচ্ছেন দুবাইয়ে প্রথম ভারতীয় মহিলা ট্রামচালক। হাফলং সরকারি মহাবিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পূর্ণ করার পর প্রথমে কাজের সন্ধানে মুম্বই পাড়ি দেন পিঙ্কি। সেখান থেকেই তাঁর জীবন পাল্টে যায়। মুম্বই পাড়িদেন দুবাই। এরপর আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার দৃঢ় সংকল্পের দরুন নিজেকে দুবাইর একজন ট্রাম চালক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন হাফলং শহরের মেয়ে পিঙ্কি রাই। বর্তমানে আবুধাবিতে লোকো পাইলট হিসেবে নিয়োজিত। প্রথম ভারতীয় মহিলা ট্রামচালক হিসেবে পরিচিতি লাভের ফলে নিজভূমি অর্থাৎ ডিমা হাসাও জেলার মেয়েদের কাছে পিঙ্কি এখন আদর্শ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু বিদেশবিভূঁইয়ে পিঙ্কির এই যাত্রাপথ এত সুগম ও সহজসাধ্য ছিল না।
সাময়িক প্রসঙ্গের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পিঙ্কি রাই জানান, প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে তিনি সুদূর দুবাইয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। বলেন, ‘২০০৯ সালে দুবাইয়ে মেট্রোতে তিন বছর প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ২০১৪ সালের অক্টোবরে ট্রামচালক হিসেবে কাজ শুরু করি। তারপর পদোন্নতি পেয়ে ট্রাম চলাচলের পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে। অবশেষে, ২০২৩ সালে অবুধাবিতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর আমি লোকো পাইলটের দায়িত্ব নিই।‘ কথাগুলো বলার সময় আত্মবিশ্বাসের দ্যুতি ঝরছিল পিঙ্কি রাইয়ের চোখমুখে। পিঙ্কি আরও জানান, ‘ইতিহাস বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিলেও এই যাত্রা আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল।‘ লোকো পাইলটের দায়িত্ব নিলেও তিনি ট্রেন চালান নি। ট্রেনের গতিবিধি প্রত্যক্ষ করার দায়িত্ব তাঁর ওপর। শারদীয় দূর্গোৎসবে নিজের গৃহশহরে ছুটি কাটাতে এসে পিঙ্কি রাই তাঁর অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই তুলে ধরেন। কিভাবে শিক্ষিত যুবক-যুবতী নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, নিজের এই কর্তব্যনিষ্ঠা ও সাহসের কথা উল্লেখ যুব প্রজন্মকে অভীষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন। গন্তব্যের পথে যতই বাধা আসুক, তা কাটিয়ে এক নিজের লক্ষ্যে অটল থেকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান