পক্ষে বিপক্ষে কম কথা হয়নি। বিতর্কের ঢেউ পদসিঞ্চন করেছিল এস এম দেব স্টেডিয়ামের প্রবেশদ্বার থেকে পুরো চত্বর। অবশেষে ফরমেশন থেকে শুরু করে গভর্নিং বডির ( জিবি ) প্রথম বৈঠকটা করে নিল জেলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন কমিটি। শনিবার সংস্থার তুলসি বণিক প্রেক্ষাগৃহে জিবির প্রথম বৈঠক সেরে নেয় টিম শিবব্রত – অতনু। এর অন্তসার নিয়েই রবিবাসরীয় সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সচিব অতনু ভট্টাচাৰ্য।
বেশ কিছু এজেন্ডা নিয়ে শনিবার জিবি অনুষ্ঠিত হয়। এদের মধ্যে অন্যতম ছিল ডিএসএর সম্পত্তির অংশস্বরূপ জে সি ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের বিবাদের সমাধান। সেইসূত্র ধরে এই বিষয়টা উত্থাপিত হয়। সচিবের ভাষ্য অনুযায়ী বাকবিতণ্ডাও হয়েছে অতিসামান্য। অনেকদিন ধরেই জেসির বিষয়টা নিয়ে একটা জটলা রয়েছে। এমনকি আর্থিক বিষয় এবং নতুন চুক্তির অচলবস্থা কাটাতে নিয়ে ডিএসএকে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছিল। অবশেষে কিছু সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সেই অচলবস্থায় ফুলস্টপ পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগে স্কয়ার ফুট হিসেবে জেসি কর্তৃপক্ষ ২৫ টাকা করে দিত। সচিব অতনুর প্রস্তাবে শনিবার জিবিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শুধুমাত্র (!) জেসির জন্য সেই পরিমাপটা স্কয়ার ফুট হিসেবে ৫০ করা হয়েছে। যদি এতে আগের জেসি কতৃপক্ষ রাজি না হয় তাহলে ভাড়ার জন্য নিলাম আহ্বান করবে ডিএসএ। আর সেই পথেই নতুন সবকিছু চূড়ান্ত হবে। প্রয়োজনে আগের জেসি কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। অবশ্য এরআগে তাদের উকিলের মাধ্যমে আইনি পথে জেসির পাশাপাশি ডিএসএ চত্বরে থাকা অন্যান্য ভাড়াঘরগুলি নিয়েও কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। জিএসটি সহ কর বিষয়ক অন্যান্য আনুসাঙ্গিক সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে গত এপ্রিল থেকে এই দোকানগুলি থেকে কোনও ভাড়া আসেনি। তাই সেই দোকান মালিকগুলির সঙ্গে বসে যাবতীয় সমস্যার সমাধান করা হবে বলে জানান সচিব অতনু।এছাড়াও সংস্থার আইনি বিষয়গুলির তদারকির জন্য ডিএসএরই সদস্য – সুদ্দসত্যি চৌধুরী, দীপক কুমার দেব, অজয় কুমার রায়, অমরেন্দ্র পাল, শশাঙ্ক দেবকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে লিগ্যাল সেল।
শনিবার জিবিতে নতুন সদস্যদের পরিচিতি পর্বের পাশাপাশি বিভিন্ন শাখার সম্প্রসারণও করা হয়। টিম গঠনের ক্ষেত্রে শাখা সচিবদের ইচ্ছা অনিচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতনু। জিবিতে অনেকদিনের দাবিকে বাস্তবায়িত করে রেফারি এবং আম্পায়ারদের পারিতোষিক বাড়ানো হয়েছে। আগের ফি থেকে এখন থেকে ম্যাচ প্রতি একশো টাকা বেশি পাবেন রেফারি এবং
আম্পায়াররা। ডিএসএর নিরাপত্তার জন্য এজেন্সির মাধ্যমে একজন নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হবে। সেইসঙ্গে অফিসের কার্যকলাপ দেখাশোনার জন্য একজন বেতনভুগি কর্মী নিয়োগের বিষয়টাও অনুমোদন করেছে জিবি। সাফল্যের সঙ্গে রাঙ্কিং টিটি আয়োজনের জন্য জিবিতে ডিএসএর নতুন কমিটিকে সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি প্রশংসার জোয়ারে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও আসাম টিটি সংস্থা যে শংসাপত্র পাঠিয়েছে, এ ব্যাপারেও কমিটির পক্ষ থেকে জিবি সদস্যদের অবগত করা হয়েছে।
সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন এবং অসম ফুটবল সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী বয়স ভিত্তিক জোনাল ফুটবল প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে হবে। শিলচরে অনুষ্ঠিত হবে অনুর্ধ ১৩ র আসরটি। এতে একাডেমি, যেকোনো ক্লাব, কোচিং সেন্টার এই আসরে খেলতে পারবে। জিবির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুজোর আগেই শেষ হবে এই প্রতিযোগিতা। উল্লেখ্য শিলচরের পাশাপাশি লক্ষীপুরে অনুর্ধ ১৫ এবং করিমগঞ্জে অনুর্ধ ১৭ র আসর অনুষ্ঠিত হবে।
আর সচিবের প্রতিশ্রুতির ক্যাপ্টেন গুপ্ত ট্রফি? জিবিতে ঐতিহ্যবাহী আসরটা আয়োজনের বিষয়ও উত্থাপিত হয়েছে। আপাতত এই আসর আয়োজনের বিষয়ে জিবির সিলমোহর পড়েছে। আগামী শীতে এই মেগা ফুটবল প্রতিযোগিতা আয়োজনের টার্গেট করেছেন অতনুরা। প্রাথমিকভাবে ছয়দলীয় আসর আয়োজনের চিন্তাধারা করে এগোচ্ছে তারা।চমক দিয়ে কোনও বড় দল আনা যায় কিনা সেটা বাজেটের উপর নির্ভর করছে বলে জানান অতনু। সেইসঙ্গে এস এম দেব স্টেডিয়ামের পাশাপাশি লক্ষীপুর, ধলাই, সোনাইর মত ভেন্যুতে আসরের এক দুটি ম্যাচ আয়োজনের চিন্তাধারা রয়েছে তাদের।
সবশেষে আক্ষেপের জলাশয়ে ডুব দেন অতনু। জিবি গঠনের বিলম্বে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল এ নিয়ে হতাশার কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আগের কমিটিরও তো প্রথম জিবি করতে অনেকটা দেরি হয়েছিল। তখন তো কেউই কিছু বলেনি। তাহলে আমাদের বেলাতেই এত কথাবার্তা কেন?’
সত্যিই কি তাই? রিয়েক্টটা ‘ হাহাহাহা ‘ ছাড়া কিছুই হবে না!!