অনলাইন ডেস্ক : বাদশা থাকবেন নাকি বাবুল হোড়? আদৌ’ ‘ কৌন বানেগা ক্রোড়পতি’র ৫০-৫০ চ্যালেঞ্জ – এ না গিয়ে বর্তমানের স্রোতে ভেসে যাওয়া মান সম্মান বাঁচাতে হবে শিলচর ডিএসএ -র। অবশ্যই কবি সাহিত্যিকের শহরটার। অসম অলিম্পিক সংস্থার (এ ও এ ) চিঠির মাধ্যমে সদস্যপদ খারিজের ইস্যুতে ব্যাকফুটে খেললো না শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা। ডিএসএ নিজ সংবিধান মেনেই ভবিষ্যতের পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন সভাপতি বাবুল হোড় এবং সচিব বিজেন্দ্রপ্রসাদ সিং উরফে বাদশা। সঙ্গে তারা এটাও বলেন যে, কারোর সঙ্গে তারা কোনো সংঘাতে যাবেন না।
গত মঙ্গলবার এক চিঠির মাধ্যমে শিলচর ডিএসএ -র সদস্যপদ বাতিলের বিষয়টা স্পষ্ট করেছিল এওএ। সেইসঙ্গে তারা রাজ্যের বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল, শিলচর ডিএসএকে যাতে কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না দেওয়া হয়। তবে এওএ-র সভাপতি লক্ষ্য কোওরের সই করা ফরমান নিয়ে তেমন একটা ভাবান্বিত নন বিজেন্দ্র – বাবুল হোড়রা। তাদের সোজাসাপ্টা জবাব, ডিএসএ নিজ সংবিধান মেনেই এগোবে। আগামী ৯ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় গভর্নিং বডির বৈঠকে এইসব বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান সচিব বিজেন্দ্র। আর জিবির আজেন্ডায় এওএ দাবির মধ্যে অন্যতম এসজিএম / বিজিএম থাকবে বলে জানান তিনি। এই এসজিএম / বিজিএমে এওএ যদি অবজার্ভর পাঠাতে চায় তাহলে দুহাত ভরে ওয়েলকাম জানানো হবে বলে জানান বাবুল, বাদশারা। বিজেন্দ্র প্রসাদের কথায়, ‘ আমাদের চিন্তাধারায় কোনো ভেজাল নেই। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এসজিএমের ডাক দিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু কিছু বাধা বিপত্তির (!) দরুণ তা আর হয়ে উঠেনি। এখন এওএ আমাদের যাদের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বার্ষিক সাধারণ সভা করানোর চাপ দিচ্ছে, তখন তাদের কণ্ঠেই ছিল বিরোধিতার সুর। লক্ষ্য বাবুরা যেসব বিষয় নিয়ে আমাদের উপর অবৈধ কমিটির আরোপ তুলেছেন সেগুলো তো এককথায় ভিত্তিহীন। কারণ সংস্থার সংবিধান মেনেই নিষ্ক্রিয় ২০ টি ক্লাব এবং প্রতিষ্ঠানকে বহিস্কার করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে তাদের দাবি আপত্তির জন্য এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন তো কেউ কিছু বলেনি। আসলে ডিএসএ -র অন্দরের কিছু লোক ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই অভিসন্ধি কোনোদিন সফল হবে না। ডিএসএ নিজ সংবিধানের দেখানো পথেই এগোবে।’
২০২১ সালের ডিসেম্বরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক বিষয়ের মিটমাটহেতু তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল এওএ। করিমগঞ্জ ডিএসএ -র সভাপতি অমলেশ চৌধুরী, হাইলাকান্দি ডিএসএ -র সচিব শৈবাল সেনগুপ্ত এবং ঋতুবরণ শর্মার কাঁধে দায়িত্ব পড়েছিল পুরো বিষয়টা মীমাংসা করার। কিন্তু এই দেড় বছরে এই কমিটির কেউ বিষয়টা নিয়ে সরকারিভাবে শিলচর ডিএসএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেননি। তাহলে কোন যুক্তিতে ডিএসএ -র বর্তমান কমিটিকে লক্ষ্য বাবুরা অবৈধ আখ্যা দিচ্ছেন, এসবের মাথামুন্ড কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না বাবুল হোড়রা। আসলে ডিএসএর অন্দরের অনেকে এ ব্যাপারে ইন্ধন যুগাচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে কারোর সঙ্গেই শিলচর ডিএসএ কোনো সংঘাতে যাবে না। এওএ কে সঙ্গে রেখেই যাবতীয় বিষয়ের সমাধান করা হবে বলে জানান তিনি। বাবুল হোড় বলেন,’ ব্যক্তিগত শত্রুতা কারোর সঙ্গে থাকতেই পারে। এইবলে সংস্থা এবং ব্যক্তিকে একসঙ্গে মিশিয়ে নেওয়া ঠিক নয়। বাদশা, বাবুল হোড় হয়তো একদিন থাকবে না, কিন্তু শিলচর ডিএসএ থাকবে। যারা সংস্থার এই হাল দেখে উপভোগ করছে, তারা সঠিক সময়ে এর সদত্তর পাবে। আমরাও সেই সময়ের অপেক্ষায় রয়েছি। এওএ -র যাবতীয় নিয়ম নীতি মেনেই কাজ করেছি। তাই আমাদের দোষটা কোথায়, তা বুঝে উঠতে পারছি না। আমাদের চিন্তাধারা যদি নোংরা হত তাহলে বিজিএম করানোর সিদ্ধান্ত নিতাম না।’
এওএ বনাম শিলচর ডিএসএ – র ঠান্ডা লড়াইর বিষয়টা এইমুহূর্তে শহরের হটকেক হয়ে উঠেছে। আলোচনায় সমালোচনায় বারবার উঠে আসছে ডিএসএ – র অসম অলিম্পিক সংস্থা কতৃক বহিস্কারের বিষয়টা। তবে শিলচর ডিএসএকে নতুনভাবে কোনো বহিস্কার করা হয়নি বলে জানান তারা। তারপরও এখানকার পাশাপাশি গুয়াহাটির সংবাদপত্রগুলিতে যেভাবে এই ইস্যুতে খবরগুলি নেতিবাচকভাবে ছাপানো হচ্ছে, সেজন্য ডিএসএ -র পাশাপাশি শহরের নামও কলুষিত হচ্ছে বলে জানান বিজেন্দ্র, বাবুল হোড়।
এই বিষয়টা আরও পরিস্কার হবে ৯ এপ্রিল জিবির পর। তবে বিজেন্দ্ররাও যে চাপে রয়েছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিতর্কের জল এখন কতটুকু গড়ায় সেটাই দেখার।