অনলাইন ডেস্ক : অনেকটাই পাল্টেছে ভূস্বর্গের চালচিত্র। তাও আবার মোদি জমানায়। জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্ট নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্কের। দীর্ঘ রিপোর্টের মূল বক্তব্য হল, “একদা সন্ত্রাসের ঘাঁটি সরকারের প্রচেষ্টায় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।” গত অক্টোবরে কাশ্মীরে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, কাশ্মীরে আর পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটে না, সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narandra Modi) ‘সুশাসনে’র জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। শাহের বক্তব্যের প্রতিধ্বনিই পাওয়া গেল তাঁর মন্ত্রকের পেশ করা রিপোর্টে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্টে রীতিমতো পরিসংখ্যান তুলে ধরে দেখানো হয়েছে, ২০২২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত কাশ্মীরে অন্তত ২৫ লক্ষ পর্যটক বেড়াতে এসেছেন। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ এবং রাজ্যটিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার পর সেখানে সন্ত্রাসবাদী ঘটনা যে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে, তা-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে এই রিপোর্টে। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালে কাশ্মীরে ৪১৭টি সন্ত্রাসবাদী হামলা হলেও ২০২১ সালে তা কমে এসেছে মাত্র ২২৯টিতে। এই ধরনের হামলায় ২০১৮ সালে ৯১ জন মারা গিয়েছিলেন। ২০২১ সালে মারা যান ৪২ জন। তবে রিপোর্টের ‘রাজনৈতিক ভাষ্য’ নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। এক জায়গায় বলা হয়েছে, কাশ্মীরের ৪২ হাজার মানুষ সন্ত্রাসবাদের শিকার হলেও দীর্ঘ দিন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সন্ত্রাসবাদকে ‘নিয়ন্ত্রণে’ আনতে সক্ষম হয়েছে সামরিক বাহিনী।
শুধু তাই নয়, ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আগে কাশ্মীরের গণতন্ত্র মানে ছিল ৩টি পরিবারের গণতন্ত্র। কিন্তু এখন কাশ্মীরের সবাই গণতন্ত্রের অর্থ বুঝতে পেরেছেন বলে জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে।কাশ্মীর উপত্যকার উন্নয়নের জন্য গত সত্তর বছরে মাত্র ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হলেও গত ৩ বছরে ৫৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে বলেও ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের বয়ানেই এই ‘মিথ্যা’ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।