করিমগঞ্জ, ১১ ডিসেম্বর : ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকা হিন্দুদের নিঃশর্তে মুক্ত না করলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দিলেন আন্তঃরাষ্ট্রীয় হিন্দু পরিষদের সভাপতি প্রবীণভাই তোগাড়িয়া। তাঁর মন্তব্য, নথি থাকুক কিংবা না থাকুক, কোনও হিন্দু মানুষকে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি করে রাখা যাবে না। কেন্দ্র সরকার যদি এক্ষেত্রে শীঘ্র কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তবে ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। রবিবার করিমগঞ্জে হিন্দু সম্মেলনে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তোগাড়িয়া।
জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে দলীয় সভা শেষে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রবীণভাই বলেন, ভারতে হিন্দুদের সুরক্ষিত ভাবে বসবাস করতে হবে। বিভিন্ন সময় নির্যাতিত হয়ে হিন্দুরা ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছে, সুতরাং নথি না থাকলেও হিন্দুরা ভারতে বাস করবে আর এক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকারকে যাবতীয় ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন শীঘ্রই কার্যকর করতে হবে। তাঁর মন্তব্য, ভারতবর্ষ হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে খুব শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে, আর প্রবীণভাই তোগাড়িয়ার হিন্দু রাষ্ট্রে সাংবিধানিক কোনও পদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ বসতে পারবেন না। তবে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণার আগে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন পাস করতে হবে ও দেশে প্রয়োগ করতে হবে। এই আইন না থাকার ফলে এক সম্প্রদায়ের মানুষ নিজেদের সংখ্যা বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর এর প্রভাব পড়ছে দেশের বিকাশের ক্ষেত্রে। তাই এই আইন খুব জরুরি।কেন্দ্র সরকারকে শীঘ্রই এই আইন পাশ করতে হবে। যেভাবে রাম মন্দির নির্মাণে বাধ্য হয়েছে সরকার, একই ভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইনও পাশ করতে হবে। বিকাশের ইস্যুতে তোগাড়িয়া বলেন, ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশে আমি বিশ্বাসী নই। আমার উদ্দেশ্য, শুধু হিন্দুদের সাথে হিন্দুদের বিকাশ।’
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার প্রশংসা করে তোগাড়িয়া বলেন, বর্তমানে দেশের প্রগতির ক্ষেত্রে হিমন্তবিশ্ব শর্মার গুরুত্বপূর্ন অবস্থান দেখা যাচ্ছে। গুজরাট নির্বাচনেও তাঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়। হিন্দুদের জন্য যেভাবে তিনি কাজ করছেন সেটা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, রাহুল গান্ধী যদি হিন্দু দেবতার মন্দিরে প্রণাম করেন তবে নিশ্চয় তিনিও হিন্দু। আর যারা নিজেদের হিন্দু বলে পরিচয় দেয় তারা সবাই তোগাড়িয়ার আপনজন। কিন্তু কোনও ইসলামিক সংগঠনের ক্ষমতায় বলবান হয়ে যদি কেউ হিন্দুদের সম্পর্কে কুমন্তব্য করে থাকে তবে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতেই হবে।
এদিন তিনি আরও বলেন, করিমগঞ্জের নাম বদলে শীঘ্রই শ্রীভূমি করা হবে। করিমগঞ্জ নামটি ভুল রাখা হয়েছিল, তাই এই নাম বদল করা হবে। এদিন সকাল থেকে জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে এক হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনের বিভিন্ন স্থানের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।