অনলাইন ডেস্ক : গত কয়েকদিন ধরে প্রকৃতির তাণ্ডবে কাছাড়ের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ কাছাড়ের সোনাই এবং ধলাই এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তুলনামূলকভাবে বেশি। ধলাইর গঙ্গানগর জিপির গঙ্গানগর দ্বিতীয় খন্ড বুরঙ্গাবস্তিতে বৃহস্পতিবার বজ্রপাতে মৃত্যু ঘটেছে দুই নাবালকের, আহত হয়েছে আরও দুজন।
মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে দুপুর দুটো নাগাদ। মৃত্যু ঘটেছে দিলোয়ার হোসেন (১৭) ও জিয়াউল হোসেন (১৪) নামে দুই নাবালকের। এই দুজন সম্পর্কে খুড়োতুতো এবং জেঠতুতো ভাই। অন্য দুজন নেকবুল হোসেন (১৪) ও ফারুক আহমদ (১৫) গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে এই চারজন একটি ফিশারির পারে প্রহরার জন্য তৈরি করা ছোট্ট টিনের ছাউনিতে বসেছিল। হঠাৎ প্রচন্ড শব্দে বজ্রপাত হলে চারজনই লুটিয়ে পড়ে। তাদের উদ্ধার করে কচুদরম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দিলোয়ার ও জিয়াউলকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আর আহত নেকবুল ও ফারুককে চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে পাঠানো হয় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এদিকে সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার দিনের ভাগে ঝড় বৃষ্টিতে সোনাই এবং ধলাই এলাকায় গঙ্গানগর দ্বিতীয় খন্ড সহ গোবিন্দপুর প্রথম খন্ড, গুরুদয়ালপুর ও বিদ্যারতনপুর এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শিলচর সদর চক্রে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আইরংমারা গ্রান্ট, শিলকুড়িগ্রান্ট, বারিকনগর প্রথম খন্ড, ধোয়ার বন্দ গ্রান্ট, ভজন্তীপুর প্রথম খন্ড, কাঁঠাল গ্রান্ট ইত্যাদি এলাকায়। কাটিগড়া চক্রে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তারাপুর, জগদীশপুর প্রথম খন্ড, নূননগর, চন্ডিনগর প্রথম তৃতীয় এবং চতুর্থ খন্ড, নিজ হরিটিকর প্রথম খন্ড, সেলিমাবাদ, সৈদপুর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় খন্ড, নাতানপুর, খেলমা প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম খন্ড সহ ভৈরবপুর দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং পঞ্চম খন্ডে। এছাড়া লক্ষ্মীপুর চক্রের কনকপুর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় খন্ড, ছাত্রদয়াল সহ উধারবন্দ চক্রের ঠালিগ্রামেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার দিনের ভাগে ঝড় তুফানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জেলার ৩৬ টি রাজস্ব গ্রামে।
বৃহস্পতিবার ধলাইর গঙ্গানগর জিপির দ্বিতীয় খন্ডে বজ্রপাতে দুই নাবালক দিলোয়ার হুসেন ও জিয়াউল হোসেনের বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনার খবর পেয়ে মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য জেলা পরিষদ সদস্য স্বপন কুমার দাস ও বিজেপি ওবিসি মোর্চার কর্মকর্তা কৃষ্ণ জীবন দেবনাথকে সেখানে পাঠান। তারা দুই নাবালকের পরিবারের সদস্যদের মন্ত্রীর পক্ষ থেকে সমবেদনা জানান। সঙ্গে জানান মন্ত্রী দুই পরিবারকে সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল থেকে চার লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন।