অনলাইন ডেস্ক : ধর্ষণ তারপর বিষ খাইয়ে খুন! লোমহর্ষক এই ঘটনা ঘটেছে কাটিগড়ায়। খবর মতে, ঘটনা গত শনিবারের। কিন্তু থানায় মামলা হয়েছে বৃহস্পতিবার। জানা যায়, কাটিগড়া থানাধীন একটি গ্রামে ওইদিন রাতে তিনটিকরি গ্রামের আনর উদ্দিনের ছেলে ছয়ফুল উদ্দিন বছর ঊনিশের এক যুবতীকে তার বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। মেয়েটির সঙ্গে ছয়ফুলের প্রেমের সম্পর্ক আগে থেকেই ছিল। এদিন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যুবতীকে নিয়ে গ্রামেরই কোনও এক নির্জন স্থানে ধর্ষণ করে। পরে মেয়েটি যায় ছয়ফুলের বাড়িতে। সেখানে বাড়ির লোকজন যুবতীকে প্রথমে প্রচন্ড মারধর করেন। কেন এ বাড়িতে এলো, এপ্রশ্নে মারধরের পর একসময় জোর করে বিষ পান করানো হয়। এখানেই শেষ নয়, মারধর ও বিষের যন্ত্রণায় কাতরানো মেয়েটিকে ছয়ফুলের বাড়ির সবাই মিলে গ্রামেরই রাস্তায় ফেলে আসতে চাইছিলেন। তখন এলাকার আরও কিছু লোক ঘটনাটি দেখে ফেলেন। অগত্যা ছয়ফুলের বাড়ির কয়েকজন মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর মেয়েটিকে নিয়ে আসেন কাটিগড়া মডেল হাসপাতালে। আর এখানে রেখেই চম্পট দেন তারা।
এদিকে, গ্রামেরই কোনও এক সুত্রে নির্যাতিতার বাড়ি খবর পৌঁছে যায়। বাড়ি থেকে তার মা, বাবা দৌড়ে হাসপাতালে আসেন। মেয়ের অবস্থা আশংকাজনক থাকায় তৎক্ষনাৎ তাকে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। রাত অনেকটা হয়ে গেলেও মা-বাবা তড়িঘড়ি শিলচর মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখানে শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু সোমবার বিকেলে ধর্ষিতা মেয়েটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর ঘুংঘুর পুলিশ মেডিকেলে উপস্থিত হয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সহযোগে সুরতহাল নীরিক্ষার পর মংগলবার সম্পন্ন হয় ময়নাতদন্ত। বুধবার তার দেহ কবরস্থ করেন নিকটাত্মীয়রা। বৃহস্পতিবার ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে কাটিগড়া থানায় মামলা করেন নিহতের মা। পরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, মেডিকেল কলেজে ভর্তির পর এক সময় জ্ঞান ফিরেছিল নির্যাতিতার। তখন সে পুরো বিবরণ জানায় উপস্থিত সবাইকে। কীভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কোথায় ধর্ষণ হয়, ছয়ফুলের বাড়ি যাওয়ার পর কে কে মারধর করেছে ইত্যাদি সবিস্তারে জানায় সে। নির্যাতিতার মা আরও বলেন, ছয়ফুলের সঙ্গে তার মেয়ের দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল। সেদিন প্রেমের নাটক করে মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। কীভাবে বিষ পান করানো হয়েছিল, কে কে এতে সহযোগী ছিলেন, তাও মেয়ে মৃত্যুর আগে জানিয়েছে।
বলেন, ওই জঘন্য কাজে যারা সহযোগী ছিলেন সেই ৯ জনকে অভিযুক্ত করে তিনি মামলা করেছেন থানায়। লক্ষনীয় বিষয়, বিষপান করানো ও মারপিটে সব চাইতে সক্রিয় ছিলেন রুকিয়া বেগম ও রবতেরা বেগম নামের দুই মহিলা, নিহত যুবতীর মায়ের অভিযোগ এমনটাই। এদিকে, জঘন্য এই ঘটনা সম্পর্কে কাটিগড়া থানার ওসি ইন্সপেক্টর যোশেফ কেইভম জানান, মামলাটি নথিভুক্ত করে তারা তদন্ত শুরু করেছেন। বলেন, পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট হাতে এলে সব কিছু পরিষ্কার হবে। তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ যে কঠোর, তা ওসি-র কথায় বুঝা গেছে।