অনলাইন ডেস্ক : ‘আমি বক্তা হতে চাইনি, গায়ক-লেখক কিস্যু না। আমি একজন নিপাট সিনেমা করিয়ে হতে চেয়েছিলাম।’ তাবড় দর্শককুল যাকে সুবক্তা, তার্কিক ও প্রখর পাণ্ডিত্যপূর্ণ ব্যক্তি বলে চেনেন, তিনি আদৌ আদ্যপ্রান্ত একজন চলচ্চিত্রের মানুষ, সেটা হলফ করে জানিয়ে দিলেন করিমগঞ্জ ঋত্বিজ সিনে আর্ট সোসাইটির ৩১তম চলচ্চিত্র উতসবের উদ্বোধক ও সুজিত চৌধুরী স্মারক বক্তব্যের বক্তা চন্দ্রিল ভট্টাচার্য।
বৃহস্পতিবার তিনি এসে পৌঁছন বরাকে। তাঁকে ঘিরে উদ্দীপনা ছিল আগে থেকেই। তাই, উপত্যকার চলচ্চিত্রপ্রেমী ও বোদ্ধাদের আগ্রহ খুব স্বাভাবিক কারণেই ব্যাপক। সেটা চন্দ্রিল নিজেও আচ করতে পারলেন কিনা,তার থেকেও বড় কথা, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। কেননা, তাঁকে নিয়ে শুক্রবার ডাকা সাংবাদিক সম্মেলনের কারণ নিয়েই কথার শুরু। কেন সাংবাদিক সম্মেলন, এ নিয়ে একটা গোলাকধাঁধা বাঁধলেও কথার পাহাড় জমার আগেই আলোচনা ঢিবি বাঁধতে শুরু করে। আর এর কৃতিত্ব চন্দ্রিলের।বাংলা সিনেমা শুধু নয়, সামগ্রিকভাবে ভারতীয় ছায়াছবির নিদারুণ দৈন্যের কথা উঠে আসে। দর্শকরা সিনেমার নিয়ন্ত্রক না প্রযোজক, নাকি পরিচালক? পরিচিত কণ্ঠে ও ভাষা প্রয়োগে বলেন, উভয়দিক থেকেই। এরপরই প্রশ্ন আসে, বাংলা টিভি সিরিয়ালের চর্বিতচর্বন ফর্মুলা ‘লোক খাচ্ছে’ বলে প্রযোজক-পরিচালকরা সেটাই ‘খাওয়াচ্ছেন’? উত্তর,’একদম ঠিক’। দর্শকরাও নিয়ন্ত্রণ করেন। আর প্রযোজকরা নিচ্ছে বলে সেটাই দিয়ে যাচ্ছেন। যারফলে দর্শকদের চয়েজ ঘরপাক খাচ্ছে একই সীমানা অর্থাৎ ফর্মুলা ধরে।আর্ট ও কমার্শিয়াল সিনেমা নিয়ে চন্দ্রিলের সোজাসাপটা মন্তব্য, যে কোনও আর্ট ফিল্মও বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সফল হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে চার্লি চ্যাপলিনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। তাছাড়া ইদানীংকালের একটি সংলাপহীন বাংলা সিনেমা ‘ আসা-যাওয়ার মাঝে’-র কথা তুলে ধরেন। অর্থাৎ , শিল্পোন্নত যেকোনও ছবিই তার শিল্পগুণে উন্নীত। এই কথাটাই তাঁর বক্তব্যের মোটামুটি মূল সুর।
বরাক-করিমগঞ্জকে তিনি চিনেছেন সৌগত পুরকায়স্থের সহপাঠী হওয়ার সুবাদে। প্রসঙ্গত, সৌগত কলকাতার সত্যজিত রায় ফিল্ম ইন্সটিটিউটের ফার্স্ট ব্যাচের ছাত্র। চন্দ্রিল তার সহপাঠি। বরাকে চলচ্চিত্র ইতিহাস তাঁর কাছেই শোনা। আর পার্থপ্রতিম মৈত্রের সঙ্গে সখ্যের সুবাদে এখানে সুপার-৮ ফর্ম্যাটে সিনেমা নিয়ে যে কাজ হয়েছে, সে খবরও অল্পবিস্তর জানেন বলে জানান চন্দ্রিল। বাংলাগানে কবীর সুমনের ভুমিকা বিশেষত নয়ের দশকে নব-পর্যায়ের গানে তাঁর অবদান নিয়ে জানান,’অনবদ্য’। ব্যান্ডকে কীর্তনের সঙ্গে মেলানো তার অপছন্দ।