অনলাইন ডেস্ক : এআইইউডি এফের গঠনের সময় হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন দুজনে। তবে পরবর্তীতে সম্পর্ক আর মোটেই অন্তরঙ্গ থাকেনি। এআইইউডিএফ ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন আতাউর রহমান মাঝারভূঁইয়া। এই বিচ্ছেদ পর্বে কাটিগড়ার প্রাক্তন বিধায়ক আতাউর রহমানকে যেমন বদর দ্দিন আজমল -এর সমালোচনায় মেতে উঠতে শুনা গেছে, তেমনি আজমলও পিছিয়ে থাকেননি পাল্টা বিষোদগার করতে। সম্পর্কের এই শীতলতার মাঝে বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে দেখা যায় সপার্ষদ আজমল হাজির আতাউরের বাড়িতে। এ নিয়ে উপত্যকার রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নানা চর্চা।
বর্তমানে বরাক উপত্যকা সফররত এ আই ইউ ডি এফ সুপ্রিমো বদরুদ্দিন আজমল এদিন সন্ধ্যা ছটা নাগাদ দলের দুই বিধায়ক আমিনুল ইসলাম ও করিম উদ্দিন বড়ভূঁইয়া (সাজু) কে সঙ্গে নিয়ে হাজির হন আতাউর রহমানের শিলচর শহর সংলগ্ন বেরেঙ্গা দ্বিতীয় খন্ডের বাড়িতে। প্রায় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট আজমল ছিলেন আতাউরের বাড়িতে। অতিথি আজমলকে চা ও পিঠে দিয়ে আপ্যায়িত করেন আতাউর।
এভাবে হঠাৎ করে রাজনৈতিক বৈরি আতাউরের বাড়িতে আজমলের হাজির হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে সৃষ্টি হয় তীব্র উৎস্যুকের। দুজনের মধ্যে ঠিক কি আলোচনা হয়েছে তা জানা না গেলেও, পরবর্তীতে আজমল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন পর গতকাল বুধবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল আতাউরের। আতাউর তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমন্ত্রণ রক্ষা করতেই তিনি হাজির হন তার বাড়িতে। কথা বলার সময় আজমলকে বেশ আবেগিক মনে হয়। বলেন একসঙ্গে সৃষ্টি করেছিলেন দল। পরবর্তীতে ভুল বুঝাবুঝির দরুন আতাউর চলে যান দল ছেড়ে। তবে এমন ভুল বোঝাবুঝি তো ভাই- ভাই ও বাবা ছেলের মধ্যেও হয়ে থাকে। একটা সময় যখন সবার মধ্যেই “ম্যাচিওরিটি” এসে যায় তখন উভয় পক্ষই ভুলে যান তিক্ততা। আতাউর রহমানের বাড়িতে আগেও বহুবার গেছেন তিনি। এদিন ফের তার বাড়িতে গিয়ে মনে পড়ে গেছে পুরানো সে সব দিনের কথা। খুব ভালো লেগেছে তার।
দীর্ঘদিন পর বুধবার ঠিক কোথায় দুজনের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়েছিল আজমল একথা না বললেও, আতাউর জানিয়ে দেন সোনাইর বিধায়ক করিম উদ্দিন বড় ভূঁইয়া তার নিজের বাড়িতে ভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তাকেও। সেই আসরে ছিলেন বদরুদ্দিন আজমলও । সেখানে দুজনের সাক্ষাতের পর ভদ্রতা বশত তিনি আজমলকে তার নিজের বাড়িতে “হান্দেশ”(পিঠে) খেতে আমন্ত্রণ জানান। আজমল সাহেব তার এই আমন্ত্রণ রক্ষা করায় তিনি খুবই খুশি। আজমল আমন্ত্রণ রক্ষা করায় তিনি খুশি একথা ব্যক্ত করলেও, আতাউর রহমান বলেন, এদিন দুজনের কথাবার্তায় রাজনীতির কোনও প্রসঙ্গই উঠেনি। আজমল সাহেব তার পুরানো বন্ধু, এই পুরনো বন্ধুকে বাড়িতে পেয়ে কথাবার্তা হয়েছে শুধু সৌজন্যমূলক, এতে রাজনীতির কোনও গন্ধও ছিল না। তিনি এও বলেন, এ আই ইউ ডি এফ- এ যখন ছিলেন তখন বিজেপি এবং কংগ্রেসের অনেকের সঙ্গেই অনেক সময় উঠাবসা করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি রয়েছেন কংগ্রেসে, তাই এ আই ইউ ডি এফ সুপ্রিমো আজমল সাহেবের তার বাড়িতে হাজির হওয়াকে ঘিরে রাজনৈতিক কোনও গন্ধ শুকার মানে নেই।
আতাউর রহমান এভাবে বললেও মঙ্গলবার রাতে করিম উদ্দিন বড় ভূঁইয়া ওরফে সাজুর বাড়িতে দুজনের একসঙ্গে ভোজনের আসরে যোগ দেওয়া এবং এরপর বৃহস্পতিবার তার বাড়িতে হঠাৎ করে এতদিন পর “পুরানো বন্ধু” আজমলের হাজির হওয়াকে ঘিরে চর্চা কিন্তু থেমে নেই। বুধবারই আজমল করিমগঞ্জ লোকসভা আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে নিজের ভাই সিরাজ উদ্দিন আজমল এবং কেএম বাহারুল ইসলামের নাম খোলসা করে জানিয়েছিলেন, রয়েছেন আরও একজন “সিক্রেট” দাবিদার, যার নাম নিয়ে তার কাছে দাবি জানানো হচ্ছে ভোটারদের পক্ষ থেকেও। আজমলের সেই বক্তব্য ও এদিন তার আতাউর রহমানের বাড়িতে হাজির হওয়াকে ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে, তবে কি আতাউর রহমানই করিমগঞ্জে আজমলের সেই “সিক্রেট” প্রার্থী। এর সূত্র ধরে স্বাভাবিকভাবেই এমন চর্চাও শুরু হয়েছে যে, আতাউর রহমান কি শীঘ্রই কংগ্রেস ছেড়ে ফের যোগ দিচ্ছেন এ আই ইউ ডি এফ- এ।