অনলাইন ডেস্ক : নালা থেকে উঠানো আবর্জনা নদীতীরে ফেলা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল শিলচর জেলা কংগ্রেস। এর পেছনে পুরসভার বিরাট দূর্নীতি রয়েছে বলে অভিযোগ এনে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জনস্বার্থে মামলা করারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার জেলা কংগ্রেস কার্যালয় ইন্দিরা ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জেলা কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ পাল সহ দলের অন্যান্য কর্মকর্তারা বলেন, বিজেপি সরকারের জমানায়ই
নমামি বরাক উৎসবের মাধ্যমে পূজো করা হয়েছে বরাক নদীর। আর বর্তমানে একই দলের সরকারের জমানায় যেভাবে নালা থেকে উঠানো আবর্জনা ফেলে নদীকে দূষিত করা হয়েছে, তার নিন্দা জানানোর কোনও ভাষা নেই।
অভিজিৎ বলেন, আবর্জনা ফেলার জন্য মেহেরপুরে পুরসভার নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। কিন্তু সেখানে আবর্জনা না ফেলে তুলনামূলকভাবে অনেক কম দূরত্বে শিববাড়ি রোডে নদী তীরে ফেলার পেছনে রয়েছে বড় মাপের দুর্নীতি। জ্বালানি তেলের খরচ বাঁচিয়ে অর্থ পকেটস্থ করার উদ্দেশ্যেই আবর্জনা ফেলার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে শিববাড়ি রোডকে।
এতে জল দূষিত হয়ে মানুষ মরলেও কোনও পরোয়া নেই পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক রাজীব রায়দের।
এর সূত্র ধরে অভিজিৎ আরও বলেন, দুর্নীতি চালাতে গিয়ে সরকারি আধিকারিক হয়েও রাজীব রায় যেন বর্তমানে গেরুয়া বসন পরে নিয়েছেন। আর গেরুয়া বসন পরে তিনি সাংসদ রাজদীপ রায় এবং বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তীর তল্পিবাহক হয়ে উঠেছেন। অভিজিতের কথায়, আসলে বিধায়ক দিপায়ন চক্রবর্তী ব্যক্তিগত স্বার্থে পুরো নিগমের ললিপপ দেখিয়ে পুরসভার নির্বাচন আটকে রেখেছেন। আর পুরসভাকে পরিণত করে নিয়েছেন নিজের ব্যক্তিগত কোম্পানিতে। নির্বাহী আধিকারিক রাজীব রায়ের কাজকর্মের ধরন দেখে মনে হচ্ছে, তিনি কাজ করছেন বিধায়কের কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে।
তিনি ক্ষোভের সুরে বলেন, রাজীব রায় নদীতে আবর্জনা ফেলে যে গর্হিত কাজ করেছেন, তা এক কথায় ক্ষমার অযোগ্য। এর জন্য জেলা আয়ুত্তের উচিত তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা। জেলা আয়ুক্ত যদি সেই পথে না যান এবং পরবর্তীতে যদি খবর পাওয়া যায় আবর্জনা ফেলার দরুন জল দূষিত হয়ে কারো ক্ষতি সাধন হয়েছে তবে কংগ্রেসই এগিয়ে যাবে মামলা করতে।
রাজীব রায়কে বিঁধতে গিয়ে তিনি আরও বলেন ওই আধিকারিক, আবর্জনা ফেলার পেছনে নদীর ভাঙন স্থল ভরাট হবে বলে মন্তব্য করেছেন। একজন সরকারি আধিকারিক কিভাবে এমন উদ্ভট ভাবনা ভাবতে পারেন এই প্রশ্ন তোলেন তিনি। এরপর প্রদূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেন, আবর্জনা ফেলে নদীর জল দূষিত করা হলো, কিন্তু বোর্ডের যেন হুশই নেই। এমন অভিযোগ তুলে তিনি তোপ দেগে বলেন, প্রদূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড কি শুধু বিভিন্ন ইটভাটা এবং স্টোনক্রাসারের মালিকপক্ষের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার জন্যই। কোথায় কি প্রদূষন হচ্ছে তা দেখার দায়িত্ব কি তাদের নেই।
এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে দলের অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সীমান্ত ভট্টাচার্য, ইফতিকার আলম লস্কর, জুনাইদ আহমদ মজুমদার ও তরুণ দেব প্রমুখ।