লন্ডন, ২২ ডিসেম্বর : ব্রিটেনের জনপ্রিয় খাবার চিকেন টিক্কা মসালার প্রবর্তক আলি আহমেদ আসলাম আর নেই। গ্লাসগোয় তাঁর শিশমহল রেস্তোরাঁর পক্ষ থেকে মৃত্যুর বিষয়টি জানানো হয়। মৃত্যুকালে এই পাচকের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। আলি আসলামের সম্মানে শিশমহল দুই দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। রেস্তোরাঁটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আলি আসলাম সোমবার সকালে মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে আমরা একেবারেই বিধ্বস্ত ও বেদনাহত।’ গত মঙ্গলবার গ্লাসগোর কেন্দ্রীয় মসজিদে আলি আসলামের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সরকারি কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্ট অনুযায়ী, আলি আসলাম পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন। অল্প বয়সেই তিনি পরিবারের সঙ্গে গ্লাসগোয় পাড়ি জমান। পরে ১৯৬৪ সালে গ্লাসগোর পশ্চিমে তিনি শিশমহল রেস্তোরাঁ চালু করেন। আলি আসলাম পাঁচ সন্তানের জনক ছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে ১৯৭০ সালে চিকেন টিক্কা মসালার প্রচলন নিয়ে আলি আসলাম বলেন, একজন গ্রাহক জানতে চেয়েছিলেন, চিকেন টিক্কা বেশি শুকনো না করে তাঁকে পরিবেশনের কোনও উপায় আছে কি না। সমাধান হিসেবে তিনি তাতে কিছু ক্রিমি টমেটো সস দিয়ে দেন। আলি আসলাম বলেন, ‘এই রেস্তোরাঁয় চিকেন টিক্কা মসালা খাওয়া চালু হয়েছিল। আমরা চিকেন টিক্কা বানাতাম। একদিন এক গ্রাহক বললেন, আমি এর সঙ্গে একটু সস নেব, এটা কিছুটা বেশিই শুকনো।’
তিনি বলেন, ‘তখন আমরা ভাবলাম, চিকেন রান্না করে কিছু সস দিয়ে পরিবেশন করলে কেমন হয়। এর পর থেকে দই, ক্রিম ও মসলার সস দিয়ে আমরা চিকেন টিক্কা পরিবেশন শুরু করি। গ্রাহকের স্বাদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমরা খাবারটি চালু করি। সাধারণত তাঁরা ঝাল খাবার খেতে চান না, সে জন্য আমরা দই ও ক্রিম দিয়েই এটা পরিবেশন করি।’
গ্লাসগো সেন্ট্রাল থেকে নির্বাচিত তৎকালীন পার্লামেন্ট সদস্য মোহাম্মদ সরোয়ার ২০০৯ সালে শিশমহলকে চিকেন টিক্কা মসালার উদ্ভাবকের স্বীকৃতি দিতে শহর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। এই খাবারের উৎসস্থল হিসেবে যাতে গ্লাসগোকে এ–সংক্রান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বীকৃতি দেওয়া হয়, সে জন্য তিনি প্রচার চালিয়েছেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসে একটি প্রস্তাবও উত্থাপন করেছিলেন তিনি। তবে ওই ব্রিটিশ সাংসদের এসব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। কারণ, যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি হোটেল ও রেস্তোরাঁ জনপ্রিয় খাবারটি প্রথম চালু করার দাবি করেছিল।