অনলাইন ডেস্ক : আচমকা জলবাহিত ডায়েরিয়া সদৃশ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে শিলচর কাঁঠাল রোডে। ইতোমধ্যে একই দিনে এই রোগে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। মৃতের তালিকায় তরতাজা যুবক শরিফ উদ্দিন লস্কর (৩৪) -সহ রয়েছেন বছর ষাটের পুতুল উদ্দিন লস্কর। এছাড়া অসুস্থ হয়ে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল -সহ বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন এলাকার আরও ৮-১০ জন। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা এতটাই গুরুতর যে, এদের চিকিৎসা চলছে আইসিইউতে রেখে। সব মিলিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে এলাকায়। ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে ওই প্লান্ট থেকে জলসরবরাহ আপাতত বন্ধ রেখেছে পিএইচই। নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে লোক পাঠিয়ে সোমবার প্লান্টের জল সংগ্রহ করে তা পাঠানো হয়েছে পরীক্ষাগারে। এদিকে, হঠাৎ করে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার পেছনে কাঁঠাল রোড-পূর্ব ভকতপুর পিএইচই প্লান্টের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। প্রশ্নের মুখে সংশ্লিষ্ট বিভাগ (পিএইচই) এবং স্যানিটেশন কমিটিও। বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্যানিটেশন কমিটি তাদের দায়িত্ব ঠিকঠাকভাবে পালন করছে না। নিয়মিত মাশুল আদায় করা সত্ত্বেও ওই প্লান্ট থেকে অপরিশোধিত জল সরবরাহ হচ্ছে এলাকায়। সেই জল পান করে গণহারে আক্রান্ত হয়েছেন বাসিন্দারা। দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এসবের জন্য পিএইচই বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট স্যানিটেশন কমিটিকে দায়ী করেছেন তাঁরা। কাঁঠাল রোডের ইমরান হোসেন লস্কর, আজমল হোসেন চৌধুরী, বদরুল লস্কররা জানিয়েছেন, গত ৬-৭ দিন ধরে আচমকা ডায়েরিয়া অর্থাৎ উদরাময় সদৃশ রোগ ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। বিশেষ করে কাঁঠাল রোড পাঞ্জেগানা মসজিদ থেকে মহর্ষি বিদ্যামন্দিরের মধ্যবর্তী এলাকায় আক্রান্ত হন অনেকে। হঠাৎ করে পাতলা পায়খানা এবং ভেদবমির শুরু হয় আক্রান্তদের। এবং মাত্র কয়েকবার পাতলা পায়খানার পর আক্রান্তরা এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েন যে, তাদের ভর্তি করাতে হয় হাসপাতালে। এ ভাবেই আক্রান্ত হয়ে দিন পাঁচেক আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শরিফ উদ্দিন লস্কর এবং পুতুল উদ্দিন লস্কর-ও। ভর্তি হওয়ার পর শরিফ উদ্দিনের শরীরে খুব বেশিমাত্রায় ধরা পড়ে ক্রিটিনিন-এর উপস্থিতি। অন্যদিকে পুতুল উদ্দিন লস্করের শরীরে রক্তচাপ সহ ধরা পড়ে অন্যান্য সমস্যাও। পরবর্তীতে মৃত্যু ঘটে দু’জনের-ই। পুতুল উদ্দিনের মৃত্যুর কারণ অত্যধিক রক্তচাপজনিত স্ট্রোক বলে উল্লেখ করেন চিকিৎসকরা। বাসিন্দাদের সন্দেহ, চিকিৎসা বিজ্ঞানে মৃত্যুর কারণ যা-ই উল্লেখ থাকুক না কেন, সংক্রমিত দূষিত জলপান থেকেই সবকিছু ঘটেছে। কেননা, এলাকায় রোগ ছড়িয়ে পড়ার শুরুতে স্থানীয়দের কয়েকজন ওই পিএইচই প্লান্টে গিয়েছিলেন। তখন তাদের নজরে পড়েছে, কীভাবে নোংরা এবং অপরিশোধিত জল সরবরাহ করা হচ্ছে নির্বিবাদে। যদিও পরবর্তীতে লোক লাগিয়ে সেসব নোংরা আবর্জনা সরিয়ে ফেলা হয়েছে।