অনলাইন ডেস্ক : ২০০১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত (তদানীন্তন কংগ্রেস আমল) গৃহীত ঋণের অধিকাংশই পরিশোধ করেছে রাজ্যের বর্তমান সরকার। বাকি টাকা খুব শিগগির সরকার পরিশোধ করতে চলেছে। এজন্য অসমের বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানানো উচিত। মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন প্রশ্নোত্তর পর্বে বিধায়ক অখিল গগৈয়ের অর্থ দফতর সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন অর্থমন্ত্রী অজন্তা নেওগ।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, অসম সরকার এখন পর্যন্ত যত ঋণ নিয়েছে তা এএফআরবিএম আইনের অধীনে। এই আইন অনুযায়ী অসম সরকার তার মোট স্থানীয় উৎপাদনের ৩.৫ শতাংশ ঋণ নিতে পারে। একই সময় মোট স্থানীয় উৎপাদনের অনুপাত এবং গৃহীত ঋণের পরিমাণ ৩২ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে, যেখানে অসম সরকার এই অনুপাত ২৩.৪৭ শতাংশে রেখেছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এ ক্ষেত্রে অসম ২৭-তম স্থানে রয়েছে। অসম সরকার চাইলে আরও ঋণ নিতে পারে।
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী অজন্তা বলেন, ভারতের সংবিধানের ২৯৩ (৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে আরআইডিএফ, ডব্লিউআইএফ, এলটিআইএফ আর্থিক প্রতিষ্ঠান নাবার্ড থেকে ঋণ নিয়েছে অসম সরকার। এছাড়া, অসম সরকার কেন্দ্রীয় বাজেটে নির্ধারিত পরিমাণ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ঋণের আকারে ব্লক লোন (ইএপি) নিয়েছে, যার মধ্যে ৯০ শতাংশ কেন্দ্রীয় অনুদান এবং ১০ শতাংশ ঋণ রয়েছে। তদুপরি অসম সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে একটি বিশেষ সহায়তা ঋণ নিয়েছে, যার উপর ৫০ বছরের জন্য সুদ দিতে হবে না। এগুলি ছাড়াও অসম সরকার প্রভিডেন্ট ফান্ডের নিয়ম অনুসারে রাজ্য ভবিষ্যনিধি তহবিল থেকে টাকা নিয়েছে।
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের মোট স্থানীয় উৎপাদন ২০১৫-১৬ সালে ছিল ২,২৭,৯৫৯ কোটি টাকা, যেখানে রাজ্যের মোট দেশীয় পণ্য ২০২২-২৩ সালে বেড়ে হয়ে ৪,৯৩,১৬৭ কোটি টাকা। এজন্যই রাজ্য সরকার আরও ঋণ নেওয়ার সুবিধা পেয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ২০১৬-১৭ অৰ্থবৰ্ষে অসম সরকার ৫,৬৪৯.৪৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। এর পর ২০১৭-১৮ সালে ১০,৪৭৬.০২ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ সালে ১৪,০০৩.৮৮ কোটি টাকা, ২০১৯-২০ সালে ১৬,৬৩৪.৫৩ কোটি টাকা, ২০২০-২১ সালে ১৯,২৫৬.৫৯ কোটি টাকা, ২০২১-২২ সালে ১৭,১৪৮.৪১ কোটি টাকা এবং ২০২২-২৩ সালে ২৫,৯০২.১৬ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী নেওগ বলেন, ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত অসম সরকারের মাথায় মোট ৩৫,৬৯০.২২ কোটি টাকা ঋণ ছিল। ২০২২-২৩ সালের মধ্যে ২২,৭৯০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে রাজ্য। বাকি ঋণের টাকাও নির্ধারিত সমেয়ের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। তিনি বলেন, অসম সরকার আগের চেয়ে ৫০ বছরের অনেক বেশি সুদমুক্ত ঋণ পেয়েছে। এতে আজকের ১০০ টাকার মূল্য ৫০ বছর পর কত হবে তা সহজেই অনুমান করা যেতে পারে।
মন্ত্রী অজন্তা আরও বলেন, ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত অসম সরকারের ঋণ ছিল ৮২,৭৪১.০৭ কোটি টাকা, যেখানে ২০২৩ সালের ৩১ পর্যন্ত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১,১৫,৭৫১.৩২ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী বলেন, ঋণের শর্ত অনুযায়ী সময়মতো ঋণ পরিশোধ করছে অসম সরকার। সব ঋণ সময়মতো সরকার পরিশোধ করবে। অর্থমন্ত্রী আজ সদনে অর্থ দফতর সংক্রান্ত একাধিক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।