অনলাইন ডেস্ক : গুয়াহাটিতে সংঘটিত এক ভয়াবহ সড়ক দুৰ্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ইঞ্জিনিয়ারিঙের সাত ছাত্ৰ। গুরুতর আহত আরও তিন পড়ুয়া। এর পাশাপাশি পড়ুয়াদের গাড়ির ধাক্কায় উল্টোদিক থেকে আসা গাড়িতে থাকা আরও তিনজন আহত হয়েছেন। সব আহতদেরই গৌহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। নিহত পড়ুয়ারা অসম ইঞ্জিনিয়রিং কলেজের ছাত্র। জানা গেছে, থার্ড সিমেস্টারের ছাত্ররা ৭ নম্বর হস্টেলের আবাসিক ছিলেন। রবিবার গভীর রাতে ঘটনার পর সোমবার সকালে অকুস্থলে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, রাজ্য পুলিশের ডিজিপি জি পি সিংহ, গুয়াহাটির পুলিশ কমিশমার দিগন্ত বরা প্রমুখ।
নিহত ছাত্ৰদের যথাক্ৰমে মঙ্গলদৈয়ের কৌশিক বরুয়া, শিবসাগরের কৌশিক মোহন, মাজুলির রাজকিরণ ভুঞা, ডিব্ৰুগড়ের ইমন বরুয়া, গুয়াহাটির অরিন্দম ভওয়াল, নগাঁয়ের উপাংশু শৰ্মা এবং গুয়াহাটির নিয়র ডেকা বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন মৃণ্ময় বরা, অৰ্ণব চক্ৰবৰ্তী ও অৰ্পণ ভুইয়াঁ নামের আরও তিন ছাত্ৰ। অপরদিকে সংঘর্ষ-পীড়িত অন্য বলেরো পিকআপ ভ্যানের মোজাম্মিল হক, ইউসুফ আলি ও রাজীব আলি নামের অন্য তিন জন আহত হয়েছেন। আহত সকলের শারীরিক অবস্থা সংকটজনক বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, রবিবার রাত ১ থেকে দেড়টা নাগাদ গুয়াহাটি মহানগরের জালুকবাড়িতে ডিসিপি কাৰ্যালয়ের সামনে ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে ভয়াবহ এই সড়ক দুৰ্ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিঙের দশ ছাত্ৰ এএস ০১ এফকে ৯৬০৫ নম্বরের একটি মাহিন্দ্রা স্করপিওয় চড়ে সাতমাইলের দিক থেকে আসছিলেন। কিন্তু জালুকবাড়িতে ডিসিপি কাৰ্যালয়ের সামনে ছাত্রবাহী দুরন্ত মাহিন্দ্ৰা স্করপিও আচমকা রাস্তায় ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে।
স্করপিওর গতি এতই তীব্র ছিল যে, গাড়িটি ডিভাইডার টপকে বিপরীত লেনে দণ্ডায়মান ব্ৰয়লার মুরগিবাহী একটি বলেরো পিকআপ ভ্যানে গিয়ে প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা মারে। দুৰ্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই স্করপিওর আরোহী সাত যুবকের মৃত্যু এবং তিনজন গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। অপর দিকে গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন বলেরো পিকআপ ভ্যানের খালাসি সহ তিনজন মোজাম্মিল হক, ইউসুফ আলি ও রাজীব আলি। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান ট্র্যাফিক ও সাধারণ পুলিশ, এসডিআরএফ, এনডিআরএফ এবং পরিবহণ বিভাগের আধিকারিক ও কর্মীরা। তাঁরা দুৰ্ঘটনায় নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে গৌহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
এদিকে দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়কে প্ৰায় আড়াই ঘণ্টা তীব্ৰ যানজটের সৃষ্টি হয়। গভীর রাতে সংঘটিত দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এত রাতে হস্টেল ছেড়ে সাতমাইলের চানডুবিতে কেন গিয়েছিলেন দশ ছাত্র, ছাত্রাবাসের ওয়ার্ডেন কোথায় ছিলেন, কী পরিস্থিতিতে স্করপিও দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে ইত্যাদি নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। জিপি সিং বলেন, কোনও যান্ত্রিক গোলযোগের ফলে স্করপিওটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, না অন্য কোনও কারণে, সে সব সব বিষয়ে খুঁটিনাটি তদন্ত করা হবে, জানান ডিজিপি। এদিকে গোটা ঘটনাক্রমে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য অসম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও টেকনিক্যাল এডুকেশনের ডিরেক্টরকে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী রণোজ পেগু।