অনলাইন ডেস্ক : রাজ্য সরকার কৃষিজমিতে বহুমুখী উৎপাদনের উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে । যাতে করে লাভজনক সব ফসল উৎপাদন করে কৃষকরা তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারেন। একথা বলেছেন রাজ্যের কৃষি, উদ্যানশষ্য, পশুপালন ও পশু চিকিৎসা, সীমান্ত সুরক্ষা ইত্যাদি বিভাগের মন্ত্রী অতুল বরা।
বরাক উপত্যকা সফরে এসে মন্ত্রী সোমবার শিলচরে জেলাশাসকের কার্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে এক পর্যালোচনা বৈঠকে মিলিত হন । বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি কৃষিক্ষেত্রের বহুমুখীকরণে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান। বরাক উপত্যকায় কৃষিক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার কৃষি জমিতে জল সেচের জন্য পাম্প সরবরাহ করছে। কিন্তু বরাক উপত্যকায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর রাজ্যের অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেকটাই নিচে রয়েছে। তাই এই উপত্যকায় পাম্প ব্যবহার করে কৃষি জমিতে জলসেচের ব্যবস্থা করতে গিয়ে অনেক সময়ই সমস্যায় পড়তে হয়। তবে এরপরও সরকার গোটা রাজ্যের সঙ্গে উপত্যকায়ও কৃষি ক্ষেত্রের উন্নতিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য কৃষি ক্ষেত্রের বহুমুখীকরণ সহ লাভজনক সব ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। বহুমুখীকরণের ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, কোনও নির্দিষ্ট জমিতে একই ধরনের ফসল উৎপাদন লাভজনক হতে পারে না। লাগাতার বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করলে তা যেমন আর্থিক দিক দিয়ে যেমন লাভজনক হবে তেমনি সহায়ক হবে জমির উর্বরতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নতুন নতুন নগরায়ন ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে কৃষি জমির পরিমাণ কমছে। যার দরুন ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে বহুমুখীকরণ ছাড়া আর গত্যান্তর নেই।
কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত দিনে বরাক উপত্যকা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকারের জমানায় রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে চলেছে বরাকের তিন জেলাও।
এর আগে পর্যালোচনা বৈঠকে তিনি কৃষি ক্ষেত্রের খতিয়ান শুনার পর এক্ষেত্রে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছ থেকে অবহিত হন। মন্ত্রী কৃষকদের পিএম কিষাণ বীমা যোজনার অধীনে আনা, ফসল বীমা যোজনা, কৃষি সিঞ্চন যোজনা, বীজ বিতরণ এসব ক্ষেত্রে প্রকৃত কৃষকরা যাতে উপকৃত হন এর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। কৃষকদের যাতে আয় বৃদ্ধি হয় এ নিয়ে বিশেষ নজর দিতে নির্দেশ দেন কৃষি বিভাগের আধিকারিকদের। মন্ত্রী অন্যান্য বিভাগ সহ শিলচর সোনাই এবং লক্ষীপুর পুরসভার কাজকর্মেরও খতিয়ান নেন।
পর্যালোচনা বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী ও মিহির কান্তি সোম, জেলাশাসক রোহন কুমার ঝা, পুলিশ সুপার নূমল মাহাতো, বিজেপি কাছাড় জেলা কমিটির সভাপতি বিমলেন্দু রায় ও কৃষি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক যুবরাজ বরঠাকুর প্রমূখ।