ত্রিপুরায় উল্টোরথে বিপত্তি। সেখানে উলটো রথ যাত্রার সময়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২০ জন। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। আহতের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট এলাকায়। সেখানে যাচ্ছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। পুলিশ এবং প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সেখানের ওই রথ কোনও কারণে হাইটেনশন তারের সংস্পর্শে চলে আসে। সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হয় ৬ জনের। তবে, সাড়ে সাতটা পর্যন্ত ২০ জন মারা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মৃতদের মধ্যে বেশ কিছু মহিলা এবং শিশুও আছে। আহতদের নিয়ে আসা হয়েছে কৈলাসহরের হাসপাতালে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিন ওই দুর্ঘটনা ঘটে বিকাল সাড়ে চারটা নাগাদ। এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। মৃতদের পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।সোশ্যাল মিডিয়াতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘কুমারঘাটে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় উলটো রথ টানার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন পূণ্যার্থী এবং আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। এই ঘটনায় আমি অত্যন্ত মর্মাহত। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’
জানা গিয়েছে, ওই রথটি লোহার তৈরি। ওই রথের যাত্রাপথের ওপর দিয়েই গিয়েছে ১৩৩ কেভির বিদ্যুতের তার। সেই সময় রথটি টানছিলেন কয়েক হাজার ভক্ত। ত্রিপুরার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইন শৃঙ্খলা) জ্যোতিস্মান দাস চৌধুরী জানান, কোনও কারণে তারের সংস্পর্শে চলে আসে রথটি। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছেন ৬ জন এবং আরও ১৫ জনের দেহ ঝলসে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সেখানের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েকজনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক বলে জানা গিয়েছে। কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে, আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আগে তাঁদের কাজ সেখান থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই ওই এলাকাতে ভারী বৃষ্টি হয়। দুর্যোগ উপেক্ষে করেই এদিন উলটো রথযাত্রায় অংশ নেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। স্থানীয়রা জানান, রথযাত্রার আগে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার কথা। কিন্তু তা করা হয়নি। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তাঁরা সেখানে রথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই হঠাৎই রথটি ওপরে থাকা হাইভোল্টেজ তারের সংস্পর্শে চলে আসে। মুহূর্তের মধ্যেই অনেকেই ছিটকে পড়েন। কী হয়েছে বোঝার আগেই সবার মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। তারপরেই দেখেন যে সেখানে অনেকেই ঝলসে গিয়ে মাটিতে পড়ে আছেন। স্থানীয়রাই তাঁদের কয়েকজনকে দ্রুত নিয়ে যান কুমারঘাটের হাসপাতালে।