অনলাইন ডেস্ক : শিলচর তারাপুর কালীমোহনরোড দুর্গা পূজা কমিটির পূজাস্থলে পুরসভার পাবলিক টয়লেট তৈরির চেষ্টাকে ঘিরে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র উত্তেজনার।
বেশ কিছুদিন ধরে এই জমি নিয়ে চলছে টানাহ্যাঁচড়া । ব্যাপারটা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এবার পুরসভা পাবলিক টয়লেট তৈরির চেষ্টা শুরু করার উত্তেজিত হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। গত ২৬ জুলাই পুরসভার পক্ষ থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালানোর পর সোমবার পূজো কমিটির সদস্যরা এ নিয়ে জেলাশাসকের কাছে স্মারকপত্র তুলে দিতে যান।
তারা ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে জানান, এই জমি ভরাট করে দীর্ঘ বছর আগে তারাই পূজোর উপযোগী করে তুলেছেন। সরকারি জমি হলেও দীর্ঘদিন ধরে ওই জমিতে পুজো চলে আসায় তারা পুরসভার কাছে জমিটি তাদের লিজ দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। এসবের মাঝে ২০২১ সালে পুরসভার তৎকালীন নির্বাহী আধিকারিক জমিটি সিং পদবীর এক ব্যক্তিকে “লিজ” দেওয়া হয়েছে বলে নথি তৈরি করেন। আর এক্ষেত্রে জালিয়াতি করে অনেক আগের তারিখ ব্যবহার করা হয়। ব্যাপারটা জানতে পেরে তারা গৌহাটি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট সবকিছু বিবেচনা করে নির্দেশ দেয় পুজো কমিটি ওই জমিতে পূজা করতে পারবে যথারীতি। তবে এর জন্য পুরসভাকে “ফি” দিতে হবে। সঙ্গে হাইকোর্ট এ নিয়ে নির্বাহী আধিকারিক এর বিরুদ্ধে তদন্তের জন্যও নির্দেশ দেয় রাজ্যের মুখ্য সচিব কে। যদিও কোনও রহস্যজনক কারণে তদন্ত প্রক্রিয়া হয়ে উঠেনি।
এসবের পর এবার তারা পুজোর জন্য যখন প্রস্তুত হচ্ছেন তখন হঠাৎ করে গত ২৬ জুলাই দেখা যায় পুরসভার আধিকারিক দুজন ম্যাজিস্ট্রেট ও নিরাপত্তারক্ষী এবং লোকলস্কর সহ হাজির হয়েছেন জমিতে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে। পুরসভার পক্ষ থেকে বলা হয় ওই জমিতে নাকি পাবলিক টয়লেট তৈরি করা হবে। এসব বলে তারা পুজো কমিটির দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেলেন। তখন এতে আপত্তি জানানো হয়। এতে পুরসভার পক্ষে উচ্ছেদ অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি। পুজো কমিটির সদস্যরা বলেন পুরসভা যে অপচেষ্টাই চালাক না কেন, তারা তা হতে দেবেন না ।প্রয়োজনে এর জন্য দারস্ত হবেন সুপ্রিমকোর্টের। তাদের অভিযোগ এর পেছনে রয়েছে ক্ষমতাশালী এক ব্যক্তি বিশেষের ষড়যন্ত্র। যাতে করে কালীমোহন রোডের পুজো বন্ধ করে দেওয়া যায়।
কালীমোহনরোডের বাসিন্দা পুজো কমিটির পৃষ্ঠপোষক রাজ্যসভা সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, পুরসভার এই চেষ্টার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে পুজো কমিটি ওই জমিতে পুজো করে আসছে। বর্তমানে আদালতের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা করে পুরসভা চাইছে যে কোনওভাবে পুজো বন্ধ করে দিতে। এর জন্য শৌচাগার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। তিনি হাইকোর্টের নির্দেশ সত্বেও কেন পুরসভার প্রাক্তন নির্বাহী অধিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না এ নিয়ে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। এ দিকে পুরসভার বর্তমান নির্বাহী আধিকারিক ভানলাল লিমপুইয়া নামপুই দাবি করেছেন হাইকোর্টের রায়ের কোনও ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে না।, হাইকোর্টের রায়ে এই জমি পুরসভা পেয়েছে। রায়ে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে এটি সরকারি জমি। ফলে পুরসভার এই জমিকে উন্নত করার অধিকার রয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে পুরসভা এই জমিকে সুরক্ষিত করতে খুব শীঘ্রই চারপাশে দেওয়াল তুলবে। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, কালীমোহন রোড পুজো কমিটি এই জমিতে দুর্গাপুজো করার আবেদন জানালে পুরসভা ওই আবেদনে সাড়া দিয়ে নির্ধারিত “ফি” -র বিনিময়ে পুজো করার অনুমতি দিতে পারে। তাই পুজো কমিটি নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে এবারও তাদের পূজো করার অনুমতি দেওয়া হবে।