অনলাইন ডেস্ক : পূর্ব আক্রোশের জেরে প্রকাশ্য দিবালোক এক স্কুল ছাত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করল প্রতিবেশী যুবক।বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে তারই প্রতিবেশী যুবতী স্কুল ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে চম্পট দেয় ঘাতক। যদি ঘটনার ঘন্টা তিনেকের মধ্যে ঘাতক যুবককে পাকড়াও করতে সক্ষম হয় পুলিশ।চাঞ্চল্যকর এই খুনের ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ কালীগঞ্জ এলাকার মনোসাংগন গ্রাম পঞ্চায়েতের বানিয়াগুল গ্রামে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে বানিয়াগুল গ্রামের দিন মজুর ফখর উদ্দিনের মেয়ে মনোয়ারা বেগম( ১৮) কালীগঞ্জ পাবলিক হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।তারই সহপাঠি হল পাশের বাড়ির শাহিদা বেগম। এই শাহিদা বেগম আবার ঘাতক যুবকের বোন। শুক্রবার দুপুরে মনোয়ারা বাড়িতে ছিলেন।তখন শাহিদা বেগম কাজের কথা বলে মনোয়ারাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর শাহিদা মনোয়ারার মাকে এসে বলে মনোয়ারা অজ্ঞান হয়ে তাদের বাড়ির পাশেই পড়ে রয়েছে। হন্তদন্ত হয়ে ছুটে যান মনোয়ারার মা।সেখানে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় মনোয়ারার নিথর দেহ খুনির ঘরের পাশে থাকা টিলাভুমিতে পড়ে রয়েছে। মনোয়ারার ঘাড়ের উপর দায়ের কোপ রয়েছে। তিনি জানতে পারেন শাহিদা ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর প্রতিবেশী উস্তার আলির ছেলে বছর কুড়ির জমিল আহমেদ আচমকা দা দিয়ে মনোয়ারার ঘাড়ে কোপ বসিয়ে দেয়। দায়ের কোপেই ঘটনাস্থলে বেঘোরে প্রাণ হারান হতভাগ্য স্কুল ছাত্রী মনোয়ারা বেগম।শাহিদার সামনেই তার ভাই জমিল মনোয়ারাকে হত্যা করে। এই ঘটনার জমিলকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করছে তার পরিবারের লোকেরা। যদিও মনোয়ারা পিতা ফখর উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, জমিল আমার মেয়ে পরিকল্পিতভাবে খুন করে।তার কথায় মানসিক ভারসাম্যহীন বলে খুনের ঘটনাকে হাল্কা করা নিতে চাইছে তার পরিবারের লোকজন। ফখর উদ্দিন বলেন জমিলরা তার নিকট প্রতিবেশী হলেও দু বাড়ির মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল।জমিলের পিতার বিরুদ্ধে একটা মামলা সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তিনি।তখন থেকে প্রতিশোধ স্পৃহা নিয়ে ক্ষতির অপচেষ্টা লিপ্ত ছিল জমিল এবং তার পিতা উস্তার আলি।এমনকী তাকে খুন করার হুমকিও দিয়েছিল জমিল।দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ থাকলেও মনোয়ারা এসবে কোনও দিনই জড়িত ছিল না। বরং জমিলের বোনের সংগে মনোয়ারার সখ্যতা ছিল। তারা এক সাথেই স্কুলে আসা যাওয়া করত।তারা দুজনেই এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে।শুক্রবার মনোয়ারাকে বাড়িতে ডেকে নেয় জমিলের বোন শাহিদা। বান্ধবির ডাকে সাড়া দিয়ে তাদের বাড়িতে যায় মনোয়ারা।কিন্তু কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই ধারালো দা নিয়ে তার উপর চড়াও হয়। জমিল। এক কোপেই হতভাগ্য মনোয়ারার প্রান কেড়ে নেয় জমিল।মনোয়ারাকে খুন করে দা নিয়ে পালিয়ে যায় এবং রক্তমাখা দাটি জংগলের মধ্যে ফেলে দেয় সে। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন পুলিশ সুপার পার্থপ্রতীম দাস,সদর থানার ওসি এবং স্থানীয় পুলিশের ইনচার্জ জয় চন্দ্র সিংহ।ঘটনাস্থলে পৌছেই মনোয়ারার খুনি জমিল আহমেদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হত্যায় ব্যবহৃত দা টি উদ্ধার করতে ধৃতকে নিয়ে চারিদিকে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দা টি উদ্ধার হয় নি।পুরনো আক্রোশের জেরে এই খুন নাকি এর পেছনে অন্য রহস্য রয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।