অনলাইন ডেস্ক : এবার অসমের প্রসিদ্ধ কামাখ্যা মন্দিরে গিয়ে সেখানে কর্মরত গৃহরক্ষীদের মারপিট করার দায়ে মামলা হয়েছে বিতর্কিত বীর লাচিত সেনার ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে। শনিবার পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার। প্রজাতন্ত্র দিবসের বিকেলে বীর লাচিত সেনার সদস্যরা কামাখ্যা মন্দিরে গিয়েছিলেন এবং সেখানে তাদের গাড়ি পার্ক করা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। সেখানে কর্মরত থাকা সুরক্ষা কর্মীদের প্রথমে জাত তুলে গালাগাল দেন তারা এবং মারধর করেন। এরপর কামাখ্যা মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। তাদের বয়ান, ‘সুরক্ষা কর্মীদের মারধোর করা ছাড়াও বীর লাচিত সেনার সদস্যরা তাদের বিহারী বলে গালি দিয়েছে। এটা অত্যন্ত গর্হিত একটা কাজ এবং এর বিরুদ্ধে পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ রাখছি আমরা।’ যদিও ঘটনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বীর লাচিত সেনার সদস্যরা জানান ওই বিহারী সুরক্ষা কর্মী স্থানীয় একটি ছেলের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছিল, তাই তারা কাজটি করেছেন। তারা বলেন, ‘অসমীয়া যুবক-যুবতীদের উপর কেউ আক্রমণ করলে বা তাদের অপমান করলে আমরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। একজন বিহারী বাইরে থেকে এসে অসমের যুবককে অপমান করছিল তাই তাকে আমরা মারধর করেছি।’ শনিবার পুলিশ লাকিট সেনার কামরূপ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিকাশ অসম, সহ সম্পাদক তপন শর্মা এবং সদস্য মতিউর রহমান, রবি দিহিঙ্গিয়া, মনোজ ডেকা এবং বিক্রান্ত কলিতাকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে মারধর, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা, এক ব্যক্তির যা তুলে আপত্তিকর মন্তব্য করা সহ কয়েকটি ধারায় মামলা গ্রহণ করেছে। রবিবার তাদের আদালতে পেশ করা হবে, বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত বছর দূর্গা পূজার সময় বিশ্বনাথ জেলায় বাংলায় পোস্টার লাগানো ছিল বলে মণ্ডপে চড়াও হয় বীর লাচিত সেনা সদস্যরা। তারা সেই পোস্টার ছিড়ে ফেলে দিয়েছিল এবং এর বিরুদ্ধে গোটা রাজ্যে আওয়াজ ওঠে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও তাদের সাবধান করেন। তখন এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘অসমের সম্মান বাড়ানোর জন্য তারা কি কাজ করছে? আমার কাছে যতটুকু খবর তারা গাড়ি নিয়ে গুয়াহাটি সহ অন্যান্য এলাকায় ঘোরাফেরা করে এবং ভয় দেখিয়ে টাকা সংগ্রহ করে। আমরা একদিকে রাজ্যের বিভিন্ন সংস্কৃতি বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পরিশ্রম করছি আর তারা এসব কাজ করে অসমের লোকেদের মাথা হেট করছে।’ একসময় মন্ত্রী পীযুষ হাজারিকার এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির উপর তারা চড়াও হয়েছিল এবং বহু টাকা দাবি করেছিল। এর বিরুদ্ধে মন্ত্রী সোচ্চার হওয়ায় তারা সরে দাঁড়ায়। এবার রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী কামাখ্যা মন্দিরে গিয়ে ভাংচুর এবং দাদাগিরি করে পুনরায় শিরোনামে বীর লাচিত সেনা।