অনলাইন ডেস্ক : পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে কাছাড়ে আসন সংরক্ষণ করা হলো সোমবার। জেলা সদর শিলচরে জেলা কমিশনারের কার্যালয়ের সভাকক্ষে সর্বদলীয় বৈঠকে জনবিন্যাসের ভিত্তিতে অনূসূচিত জাতি এবং উপজাতি জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষণের পর লটারির মাধ্যমে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করা হয় ৫০ শতাংশ আসন। সব মিলিয়ে ২৫টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে অনুসূচিত জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে-২, অনুসূচিত মহিলাদের জন্য-২ এবং সাধারণ শ্রেণীর মহিলাদের জন্য-১১টি আসন। একইভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে গাঁও পঞ্চায়েত, আঞ্চলিক পঞ্চায়েত এবং ওয়ার্ড মেম্বার স্তরেও।
অনুষ্ঠিত জাতি এবং উপজাতির জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে ২০০১ এর জনগণনার রিপোর্টের ভিত্তিতে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী জেলার পঞ্চায়েত এলাকায় মোট ১৫’৪৮ শতাংশ লোক অনুসূচিত জাতির এবং উপজাতি ১’৬০ শতাংশ। অংকের হিসেবে মোট ২৫ টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে সংরক্ষণের প্রশ্নে উপজাতির ক্ষেত্রে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১-এরচেয়েও কম ( ০’৪)। তাই উপজাতিদের জন্য জেলা পরিষদ আসন সংরক্ষণের কথা ভাবা হয়নি। অনুসূচিত জাতির ক্ষেত্রে অংকের হিসেবে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৩’৮৭। তবে ভগ্নাংশ ০’৫ এর বেশি হওয়ায় সংখ্যাটাকে পূর্ণ সংখ্যা অর্থাৎ ১ ধরে নিয়ে এই জাতি গোষ্ঠীর জন্য ৪ টি আসন সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হিসেব কষে ক্রমপর্যায়ে অনুসূচিত জাতি গোষ্ঠীর লোকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রয়েছে এমন চারটি আসন তাপাং- বড়সাঙ্গন (অনূসূচিত জাতি-৩১’৯৯ শতাংশ) গঙ্গানগর- রুকনি(অনূসূচিত জাতি -৩১’৮৯ শতাংশ), কাটিগড়া- লক্ষ্মীপুর (অনূসূচিত জাতি-২৯’৯৮ শতাংশ)এবং শিলকুড়ি- চাতলা ( অনূসূচিত জাতি -২৮”৯৪ শতাংশ) সংরক্ষিত করা হয়। এর পরবর্তী পর্বে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণে করা হয় লটারি। লটারিতে অনুসূচিত জাতির জন্য সংরক্ষিত ৪ টি আসনের মধ্যে কাটিগড়া-লক্ষীপুর ও শিলকুড়ি- চাতলা এই দুটি আসন সংরক্ষিত করা হয় ওই জনগোষ্ঠীর মহিলাদের জন্য। এছাড়া সাধারণ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে আরও ১১টি জেলা পরিষদ আসন। এই ১১টি আসন হল মোহনপুর -শালচাপড়া, ধলাই- নরসিংপুর, রংপুর, আরকাটিপুর, শ্যামাচরণপুর -শেওরারতল, কালিবাড়ি- বিক্রমপুর, লক্ষ্মীপুর-দিলখুশ, বাগপুর -সোনাবাড়িঘাট, বড়থল- হরিনগর, শিবপুর -বাশকান্দি ও শালগঙ্গা।
এদিন বৈঠকে প্রশাসনের তরফে উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিশনার মৃদুল যাদব, জেলা উন্নয়ন কমিশনার নরসিং বে, পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক ভানলাল লিমপুইয়া নামপুই ও, জেলার নির্বাচন আধিকারিক মাছি টপনো। বিভিন্ন দলের পক্ষে ছিলেন বিজেপির অমিতাভ রায়, সঞ্জয় ঠাকুর ও শশাঙ্ক চন্দ্র পাল, কংগ্রেসের অভিজিৎ পাল, সূর্যকান্ত সরকার, ইফতিকার আলম লস্কর ও জাবেদ আখতার লস্কর, সিপিএমের দুলাল মিত্র ও রেজামন্দ আলী বড় ভূঁইয়া এবং এ আই ইউ ডি এফ এর পক্ষে ছিলেন সামিনুল হক বড় ভূঁইয়া ।
বৈঠক শুরুর পর প্রথম পর্যায়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডের সংরক্ষণ পর্ব সারা হয়। সেসময় বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা শুরুতে জেলা পরিষদ আসনের সংরক্ষণ সেরে নেবার অনুরোধ জানালেও জেলা কমিশনার জানান এসওপি অনুযায়ী প্রথমে ওয়ার্ডের সংরক্ষণ করতে হবে, এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য স্তরে করা হবে সংরক্ষণ। শেষ পর্যন্ত সেভাবেই চলে প্রক্রিয়া। জেলা পরিষদ আসনের সংরক্ষণ করা হয় সবার শেষে।