অনলাইন ডেস্ক : কাছাড়ের মাদক পাচারকারীদের যোগাযোগ কতদূর বিস্তৃত। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সূত্রে যেসব খবর বেরিয়ে আসে, এথেকে স্পষ্ট প্রতিবেশী দেশ মায়ান্মার ও বাংলাদেশ সহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় শহরের মাদকের কারবারীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে এদের এ জেলার পাচারকারীদের অনেকেরই। এই প্রেক্ষাপটে এজেলার
মাদক পাচারকারী চক্রের সঙ্গে বলিউডের যোগসূত্রের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে এ জেলার সোনাই থানা এলাকার কাবুগঞ্জে অভিযান চালিয়ে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে ১’১৫ কেজি হেরোইন। খোদ পুলিশ সুপার নূমল মাহাতোর নেতৃত্বে চলা এই অভিযানে গ্রেফতার করা হয় তিনজনকে। ধৃতরা হলো ধলাই থানা এলাকার ভাগাবাজারের বাহারুল লস্কর (১৮) ও রোহিত লস্কর (১৯) এবং নর্থ হাওয়াইথাং- এর রাহুল লস্কর (১৮)। বুধবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত সেন শিলচরে সংবাদ মাধ্যমের কাছে এই অভিযানের কথা তুলে ধরে জানান, বাহারুলরা। একটি বোলেরো গাড়িতে করে হেরোইন পাচার করছে, গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে তাদের গাড়িটি আটক করা হয়। গাড়ি আটকে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় ৮৮টি সাবানের কেসে থাকা ১’১৫ কেজি হেরোইন। আন্তর্জাতিক বাজারে এসবের মূল্য প্রায় ৭ কোটি টাকা।
অভিযানের বিবরণ তুলে ধরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ধৃতরা তিনজন বাহক মাত্র। এদের পেছনে রয়েছে পাচারকারী চক্রের বড় মাথারা। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যেভাবে কাছাড়ের বুক হয়ে মাদক পাচার করা হচ্ছে, এতে নিশ্চিতভাবে বলা যায় বড়মাথাদের কেউ কেউ রয়েছে এজেলায়ই। বর্তমানে এদের সনাক্ত করে পাকড়াও করার চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে প্রতিবেশী দেশ মায়ান্মার থেকে মাদক এজেলায় আসছে মিজোরাম হয়ে। তবে যে পরিমাণ মাদক আসছে এর বেশিরভাগই পাচার হয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন বড় বড় শহরে। স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। পাচার হচ্ছে মুম্বই, বাঙ্গালুরু, গোয়ার মতো বড় বড় শহরে । অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের এমন বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রশ্ন করা হয়, মুম্বাইয়ে যখন পাচার হয়ে থাকে, তবে কি বলিউডের সঙ্গেও সংযোগ রয়েছে এ জেলার পাচার চক্রের। কারন চিত্রতারকাদের কারো কারো নেশার জগতের অবাধ সংযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময়েই উঠে থাকে এমন গুরুতর অভিযোগ। এর জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এপর্যন্ত এমন কোনও নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এই সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়েও দেওয়া যায় না।
এদিকে পুলিশের অন্য এক সূত্রে জানা গেছে, কাছাড়ে বর্তমানে যারা মাদক পাচারের কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে এদের একাংশ মূলত ত্রিপুরার বাসিন্দা। আর ত্রিপুরার বাসিন্দা এই কারবারিদের হাত হয়ে বিশেষত মাদক পাচার করা হয়ে থাকে বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরবরাহ করা হয়ে থাকে নেশার ট্যাবলেট। নেশার ট্যাবলেট পাচার হয়ে থাকে এদেশের বিভিন্ন বড় বড় শহরেও। তবে সেসব শহরে বেশি হারে পাচার হয় হেরোইন।