অনলাইন ডেস্ক : অভিভাবকরা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় রশি দিয়ে কোমরের সঙ্গে কোমর বেঁধে হাতে হাত ধরে নদীতে কাপ দিলেন যুবক-যুবতী। যদিও কিছুদূর ভেসে যাওয়ার পর ভাগ্যক্রমে জীবন্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়। রবিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে শিলচরে।
বছর ২১-এর এই যুবক শিলচর শহর সংলগ্ন দুধপাতিল লার্সিংপার এলাকার বাসিন্দা। আর বছর ১৯-এর যুবতীর বাড়ি সোনাই চাঁদপুর এলাকায়। দুজনেরই পদবী ঘোষ । রবিবার রাতে দুজনে একসঙ্গে সদরঘাটের পুরনো সেতু থেকে বরাক নদীতে ঝাঁপ দেন। যদিও কিছুদূর ভেসে যাওয়ার পর করাতিগ্রাম এলাকায় তারা নিজেরাই সাঁতরে নদী তীরের দিকে এগোতে শুরু করেন। তখন মনসা মূর্তি ভাসানে যাওয়া লোকেরা নৌকা নিয়ে এগিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। এরপর যুবক-যুবতী কে সমঝে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে।
পুলিশের এক সূত্র জানান, যুবক- যুবতী যে বয়ান দিয়েছেন সে অনুযায়ী যুবকটি পেশায় রাজমিস্ত্রির সহযোগী। তারা দুজন আবার দূর সম্পর্কের আত্মীয়ও। আত্মীয়তার সম্পর্ক সত্ত্বেও প্রায় আড়াই বছর ধরে দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। যুবতীর বাড়ির লোকেরা এই সম্পর্ক মেনে নিলেও আত্মীয়তার দরুন যুবকের পরিবারের লোকেরা এতে রাজি নন। যুবকটি বারবার বাড়ির লোকেদের বোঝানোর চেষ্টা চালালেও তারা বিয়েতে রাজি হননি। মাসকয়েক আগে যুবকটি কাজের ক্ষেত্রে গিয়েছিল ইম্ফলে। তিন দিন আগে ইম্ফল থেকে ফিরে যুবতীর বাড়িতে যায়। তখন যুবতী তাকে বিয়ের কথা বললে সেও রাজি হয়ে যায়। সোনাই চাঁন্দপুরের বাড়ি থেকে রবিবার যুবতীকে নিয়ে দুধ পাতিল লার্সিংপারে নিজের বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হয় যুবকটি। তখন সাহস করে যুবতীকে নিয়ে রওয়ানা হলেও রাতে শিলচরে পৌঁছে তার মনে হয় বাড়িতে গেলে তো ধুন্দুমার কান্ড ঘটে যাবে। তাই বেশ কিছুক্ষণ শিলচরে ঘুরাঘুরির মাঝে তারা সিদ্ধান্ত নেয় তাদের সম্পর্ক যখন পূর্ণতা পাবার নয়, তখন একসঙ্গে তারা প্রাণ বিসর্জন দেবে। তাই সেতুতে ওঠে একজনের কোমরের সঙ্গে অন্যজনের কোমর বেঁধে হাতে হাত ধরে ঝাঁপিয়ে পড়ে নদীতে। যদিও ঝাঁপিয়ে পড়ার পর প্রাণ বিসর্জনের ভাবনা মন থেকে উবে যায়। তারা সাঁতার কেটে তীরের দিকে এগুতে থাকে। তখন অন্যান্যরা তাদের উদ্ধার করেন।
পুলিশের এক সূত্র জানান,উদ্ধারের পর “মেডিকেল চেকআপ” করিয়ে যুবতীকে রাতেই পাঠানো হয়েছে হোমে। আর যুবককে চমকে দেওয়া হয়েছে তার অভিভাবকদের কাছে ।