অনলাইন ডেস্ক : দেশেরনতুন সংসদ ভবনের ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছে রবিবার। কিন্তু রাষ্ট্রপতির পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী নয়া সংসদের উদ্বোধন করায় অনুষ্ঠান বয়কট করে কংগ্রেস-সহ প্রায় কুড়িটি রাজনৈতিক দল। এ নিয়ে বিরোধীদের প্রবল কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তাঁর মন্তব্য, ‘কংগ্রেস যদি আজ ক্ষমতায় থাকত আর মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী পদে থাকলে ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করতেন।’
হিমন্ত এদিন বলেন, কংগ্রেসের মূল সমস্যা হচ্ছে তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না গান্ধী পরিবারের বাইরে গিয়েও কেউ এত বড় প্রকল্পের সুচনা করতে পারেন। আসলে এখনও সামান্য পরিবার থেকে উঠে আসা নরেন্দ্র মোদিকে সহ্য করতে পারেন না রাহুল গান্ধীরা। তাই যাবতীয় বিরোধ করে যাচ্ছেন তাঁরা। এরপরেই তাঁর সংযোজন, ছত্তিশগড় বিধানসভার নতুন ভবনের সূচনা করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী। তখন রাজ্যপালকে ডাকা হয়নি। হিমন্তের প্রশ্ন, কোন পদাধিকার বলে সোনিয়া গান্ধী বিধানসভা ভবনের উদ্বোধন করলেন?
অসমের মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, রাষ্ট্রপতির সম্মান নিয়ে কথা বলা কংগ্রেসের মানায় না। তাঁরা বারবার রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল ইত্যাদি পদের অবমাননা করে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর জন্য যদি এতই চিন্তা থাকে কংগ্রেসের, তাহলে বিজেপির আবেদন সত্ত্বেও দ্রৌপদীর বিরুদ্ধে যশবন্ত সিনহাকে প্রার্থী না করলেই হত।’
এদিন সংসদ ভবনের অনুষ্ঠান বয়কট করা বিরোধীদের পরিবারতান্ত্রিক দল আখ্যা দিয়েছেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তাঁর কথায়, ‘কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, কেসিআর রাও-র দল ইত্যাদি সব পরিবারভিত্তিক দল। একটি পরিবারই এ সমস্ত দলকে চালায়। ফলে তাঁদের বিরোধিতাকে এতটা গুরুত্ব দেওয়াই নিষ্প্রয়োজন।’
এদিকে আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপির জয় নিয়ে কোনও শঙ্কা নেই বলেই দাবি করেছেন হিমন্ত। তিনি বলেন, ‘ফের একবার তিনশো পার করবে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদি তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হবেন। আমাদের সবার চিন্তা যে কীভাবে তিনি শপথ নেবেন।’
সংসদের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের এককাট্টা হওয়াকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘শূন্যের সঙ্গে আরেকটি শূন্য মিললেও ফল শূন্যই হয়। তবে বিরোধীরা কিছুটা শক্তি লাভ করতে পারলে ভালই। কারণ ফাঁকা মাঠে বিনা গোলকিপারে গোল দিতে কোনও মজা নেই। তাই আমরা চাইছি বিরোধী দলগুলি কিছুটা অক্সিজেন পাক।’
সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা পবন খেরা অভিযোগ করেছিলেন যে, সারদা মামলায় সিবিআই-র হানা পড়ায় ভয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর র প্রতিক্রিয়া, ‘সিবিআই চার্জশিটে আমার নাম রেখেছিল ২০১৪ সালে। এ কথা ২০১৫-র ফ্রেব্রুয়ারি মাসেই স্পষ্ট হয়ে যায়। তখন আমি কংগ্রেসেই ছিলাম। সোনিয়া গান্ধীর কাছে গিয়ে সেসময় আমি এ কথা স্পষ্ট জানাই। সিবিআই-র নথিও দেখাই। আর বিজেপিতে যাই এর আরও কয়েক মাস পরে।’ তিনি আরও বলেন, ‘লুই বার্গার নিয়ে কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আমার বিরুদ্ধে মামলা আছে বলেছিলেন। আমি তখন আদালতে গিয়ে বলি যে ওই মামলার নম্বর আমায় জানানো হোক। পরে কোর্টই তরুণ গগৈকে নির্দেশ দিয়েছিল যে, এভাবে বিনা তথ্যে কারও নামে অভিযোগ করা উচিত নয়।’
২০১০ সালে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা টুইটারে লিখেছিলেন যে, রাহুল গান্ধী একসময় দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কংগ্রেসে থাকার সময় এ কথাই শিখেছিলাম যে প্রথমে ইন্ধিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী তারপর রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর সন্তান এমনটাই চলতে থাকবে। তাই লিখেছিলাম।’ তাঁর সংযোজন, ‘কিন্তু আমি সেই পুরনো টুইট ডিলিট করি না কারণ আমার সন্তানদের দেখাতে চাই যে আগে দেশ কেমন ছিল আর ২০১৪ সালের পর নরেন্দ্র মোদি আসার পর কী হয়েছে।’