অনলাইন ডেস্ক : আলফার সঙ্গে চুক্তির আগে সরকার এরাজ্যের বাঙ্গালীদের মতামত না নিলে সৃষ্টি হতে পারে জটিল পরিস্থিতির। এই অভিমত ব্যক্ত করলেন সিআরপিসির মুখ্য উপদেষ্টা গৌহাটি হাইকোর্টের বরিষ্ঠ আইনজীবী হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরী।
শনিবার বরাক উপত্যকা সফরে এসে রবিবার রাতের দিকে তিনি ফের গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান। রওয়ানা হওয়ার আগে সন্ধ্যায় শিলচর সার্কিট হাউসে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন। আলোচনা কালে এভাবে অভিমত ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আসুর সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রে সরকার বাঙ্গালীদের অবজ্ঞা করেছিল। বাঙ্গালীদের কোনও মতামত নেওয়া হয়নি। তাই সৃষ্টি হয় যত জটিলতার। এবার ডিমাসা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে চুক্তির সূত্র ধরেও জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই আলফার সঙ্গে চুক্তিতে উপনীত হওয়ার আগে সরকারের অবশ্যই বাঙালিদের মতামত নেওয়া উচিত।
সিআরপিসির কর্মকর্তা সাধন পুরকায়স্থ, জেলা বার সংস্থার সভাপতি নীলাদ্রি রায়, আইনজীবী ইয়াসিন আলী বড়ভূঁইয়া, কিশোর ভট্টাচার্য, আব্দুল হাই লস্কর সহ অন্যান্যদের উপস্থিতিতে আলোচনা কালে চৌধুরী বলেন এসব চুক্তি বা নাগরিকত্ব নিয়ে যেসব প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হচ্ছে এসব আসলে বাঙ্গালীদের চাপে রাখার কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়। আর এসবের সূত্র ধরে
যাতে যথাযথ প্রতিবাদ না হয় এর জন্য বিভিন্ন প্রসঙ্গ টেনে বাঙ্গালী হিন্দু -মুসলিমদের মধ্যে সৃষ্টি করা হচ্ছে বিভেদ। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি যেদিকে এগিয়ে চলেছে তা মাথায় রেখে বাঙালি হিন্দু-মুসলিমদের একজোট হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে, এটা সময়ের আহবান। অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।
তিনি বলেন, বাঙালিরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য হতেই পারেন। কেউ বিজেপি ,কেউ কংগ্রেস, কেউবা এআইইউডিএফ, তাই বলে নিজেদের জাতিসত্তা ভুললে চলবে না। যেখানে জাতির উপর বিপদ ঘনিয়ে আসছে সেখানে রাজনীতি বড় হতে পারে না। জাতির স্বার্থ মাথায় রাখতে হবে সবার আগে। তবে সঙ্গে তিনি সতর্ক করে দেন, জাতির স্বার্থের কথা মাথায় রেখে কেউ যেন অতি বাঙালিয়ানায় না ভোগেন। এটাও এক বড় ধরনের বিপদ। নিজের জাতির স্বার্থ রক্ষার মানে অন্য জাতির বিরুদ্ধাচারণ নয়।
কথাপ্রসঙ্গে তিনি “কা”-র প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, প্রচার চালানো হচ্ছে এই আইনের বলে বাঙালি হিন্দুদের নাগরিকত্ব নিয়ে সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু বাস্তব সম্পূর্ণ উল্টো। “কা” ছিন্নমূল হিন্দুবাঙ্গালীদের নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে কোনও সুবিধাই দিতে পারবে না। মৌখিক প্রচারে বাঙালি হিন্দুদের এই সমস্যা মেটার নয়।
আলোচনা কালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চৌধুরীর সঙ্গে ডিব্রুগড় থেকে আসা সিআরপিসির সাধারণ সম্পাদক চন্দন মজুমদার, সমীরণ চৌধুরী, সিহাব উদ্দিন আহম্মদ প্রমুখ।
সার্কিট হাউসে আলোচনার পর তিনি রাজ্যসভা সাংসদ সুস্মিতা দেবের বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বলে জানা গেছে।