অনলাইন ডেস্ক : ১১ নভেম্বর মনিপুরের জিরিবামে সিআরপিএফের সঙ্গে সংঘর্ষে ১০ জন দুষ্কৃতী নিহত হওয়ার পর জঙ্গিরা ৮ মাসের শিশুর সহ মৈতৈ সম্প্রদায়ের ছয়জনকে তুলে নিয়ে যায়। শুক্রবার তাদের মধ্যে তিনজনের পঁচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। শনিবার পর্যন্ত আরও তিনজনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে জানায় আসাম রাইফেলসের এক সূত্র। তিনজনের মৃতদেহ শুক্রবার রাতেই নিয়ে আসা হয় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরবর্তীতে আনা হয় বাকিদের মৃতদেহ। এখানে এদের ময়নাতদন্ত হবে এবং পরবর্তীতে নিয়ে যাওয়া হবে মনিপুর। পুলিশ সূত্রে খবর অনুযায়ী, শুক্রবার বিকেলে অসম-মনিপুর সীমান্ত সংলগ্ন জিরিমুখ এবং সংলগ্ন এলাকায় তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। আসাম রাইফেলসের অভিযানে এগুলো পাওয়া যায় এবং পরবর্তীতে খুব সাবধানে নিয়ে আসা হয় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখানে আগে থেকেই মনিপুর রাজ্যের ১২জন ব্যক্তির মৃতদেহ রাখা ছিল। এই তিনজনকে সনাক্ত করতে তাদের পরিবারের লোকেদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হলে শুরু হবে ময়নাতদন্ত। মনিপুর পুলিশের সূত্রে খবর অনুযায়ী শুক্রবার শেষ রাতে আরো তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তবে এগুলো শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে কিনা, এনিয়ে তারা কিছু বলেননি। হাসপাতাল সূত্রে খবর অনুযায়ী, শুক্রবার সকালে তিনটি পঁচাগলা মৃতদেহ এসেছে। তবে এগুলো মণিপুরের নিখোঁজ হওয়া বাসিন্দাদের মৃতদেহ কিনা, এটা তারা স্পষ্ট করে বলতে পারবেন না। কাছাড়ের পুলিশ সুপার, নুমাল মাহাত্তাকে এব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনিও সরাসরি উত্তর দেননি। যারা নিহত হয়েছেন এদের মধ্যে ছিলেন একজন ৬০ বছরের মহিলা, একজন ৩৫ বছরের মহিলা এবং আরেকজন ২৯ বছরের মহিলা। এছাড়া একটি আট বছরের মেয়ে, আড়াই বছরের এবং আট মাসের দুই ছেলে। এরা নিখোঁজ হওয়ার পর মণিপুরে অনেকেই তাদের খুঁজে বের করার দাবি জানান। তবে কেউ কেউ আশঙ্কা করেন, জঙ্গিরা প্রথম দিলেই এদের হত্যা করেছে। সেই আশঙ্কায় শেষমেষ ঠিক প্রমাণিত হয়। মৃতদেহ দেখার পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এরা অন্তত তিন দিন আগে মারা গেছে। জঙ্গিরা একটি আট মাসের শিশুকেও ছেড়ে দেয়নি। শিশুদের মৃতদেহ বস্তায় ভরে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় মণিপুরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বলেছে এবং প্রশাসন তড়িঘড়ি কিছু কিছু এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। বিভিন্ন জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র সরকারের তরফে মণিপুরে থাকা বাহিনীদের বলা হয়েছে তারা যেন পরিস্থিতি সামাল দিতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়।