অনলাইন ডেস্ক : অসমে পাওয়ার প্ৰজেক্ট করার কোনও সম্ভাবনা নেই। রাজ্য বিধানসভার শরৎকালীন অধিবেশনের প্ৰথম দিন বিরোধীদের আনিত রাজ্যে বিদ্যুৎ সংকট, লোডশেডিং এবং অত্যধিক বিদ্যুৎ মাশুল সম্পর্কে আলোচনার ওপর ভাষণ দিতে গিয়ে এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, অসমে হঠাৎ বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে, চাহিদার চেয়ে বিদ্যুতের উৎপাদন কম।
মুখ্যমন্ত্ৰী জানান, রাজ্যে প্রতি বছর বিদ্যুতের চাহিদা ১০ শতাংশ করে বৃদ্ধি হলেও গত কয়েকদিন থেকে এই চাহিদা হঠাৎ অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে গেছে। এর প্ৰকৃত কারণ সরকারেরও জানা নেই। তিনি বলেন, ভৌগোলিক কারণে অসমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক সীমাবদ্ধতা আছে। এখন পর্যন্ত অসমে পাওয়ার প্ৰজেক্ট করারও কোনও সুবিধা নেই। গ্যাস ও জলের দ্বারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করারও কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে কয়লা দিয়ে কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভবনা রাজ্যে আছে।
শর্মা বলেন, অসমে বিদ্যমান বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ৰকল্পগুলি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম নয়। তাই অসমে এখন সৌরশক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা ছাড়া কোনও বিকল্প নেই বলেও জানান মুখ্যমন্ত্ৰী। তিনি জানান, অসমে শিল্প আসছে। তখন প্ৰতি দিন বিদ্যুতের চাহিদা আরও বাড়বে। উদাহরণ স্বরূপ তিনি নুমলিগড় তেল শোধানাগারকে ৪০০ মেগাওয়াট ও পেপসিকো প্রভৃতি কোম্পানিকে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্ৰয়োজন হবে বলে তথ্য তুলে ধরেছেন।
এদিকে প্ৰতিদিন রাজ্যে লোডশেডিং হয় বলে বিরোধী শিবিরের অভিযোগ খণ্ডন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত তিনদিন গুয়াহাটি, শিবসাগর, যোরহাট সহ বিভিন্ন অঞ্চলের কোথাও লোডশেডিং হয়নি। এর কয়েকদিন আগে কেবল বিদ্যুৎ সরবরাহ অনিয়মিত হয়েছিল, জনসাধারণকে তাই তিনি বিদ্যুৎ-সংকট হয়েছে বলেছিলেন। কিন্তু ভবিষ্যতে অসমে আর বিদ্যুতের সংকট হবে না। এ সম্পর্কে কেন্দ্ৰীয় বিদ্যুৎমন্ত্ৰী আরকে সিঙের সঙ্গে দিল্লিতে দুদিন আগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি বিস্তারিত জানিয়েছিলেন। কেন্দ্ৰ কম করেও ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, রাজ্যে এখন পিক আওয়ারে ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি হচ্ছে। তিনি বলেন, মহারাষ্ট্ৰে ২০০০ মেগাওয়াট ঘাটতি হয়। ঠিক এভাবে বিহারে ১২২০ এবং ঝাড়খণ্ডে ২৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি হয়।
এদিকে, ২০২৪ সালের মধ্যে নিম্ন সুবনশিরি জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্প থেকে ২০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আশা, তখন কিছুটা সংকট দূর হবে। গত তিনদিন রাজ্যে কোনও লোডশেডিং হয়নি। ৪৫ মিনিটের কম বিদ্যুৎ কৰ্তন হলে তাকে লোডশেডিং বলা হয় না, ট্ৰ্যান্সফৰ্মারে কোনও গোলযোগ বা বিদ্যুৎ পরিবাহী তারে শর্ট ইত্যাদি হলে কিছু সময় কৰ্তন করা হয়, বলেন মুখ্যমন্ত্ৰী। সঙ্গে এ-ও বলেন, নিকট ভবিষ্যতে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা আরও বহু বাড়বে।
হিমন্ত বলেন, আগের তুলনায় পরিবারবর্গের অৰ্থনৈতিক অবস্থা ভালো হয়েছে। বহুজন নতুন চাকরি পেয়েছেন। ফলে তাঁরা বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক উপকরণ কিনছেন। এর ফলেও বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি হয়েছে বলে তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্ৰী। তবে ধীরে ধীরে এই সমস্যারও সমাধান হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।