অনলাইন ডেস্ক : অম্বিকাপুর পূর্বপাড়া – হাসপাতাল রোড দুর্গাপূজা মানেই ঐতিহ্য, স্বাতিকতা এবং মনোরঞ্জনের পাঁচমিশেলি। এবারও এর হেরফের হচ্ছে না কিঞ্চিৎমাত্রও। বাংলার আদিশিল্প নকশিকাথাকে পুঁজি করে যেমন পাটের মূর্তি, কাঠের গহনায় শিঙ্গার হবে দেবী দুর্গার। তেমনি পুরুলিয়ার ছৌ শিল্পীদের দিয়ে যাত্রা পালার মাধ্যমে পল্লী বাংলার শেকরকে পুনর্জীবিত করার চেষ্টায় মাতবে তারা। এছাড়াও নাম না বললেও বলিউডের শিল্পী দিয়ে পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করা হবে বলে জানান আয়োজকরা।
‘ নতুনের সাথে পুরাতন, শিল্প থাকবে চিরন্তন ‘ – এই ট্যাগলাইনের মাধ্যমেই পুজোর পুজো থিমটা বলে দিচ্ছে অম্বিকাপুর পূর্বপাড়া – হাসপাতাল রোড। পল্লী বাংলার প্রায় হারিয়ে যেতে বসা ‘ নকশিকাথা’ শিল্পকে এবার থিম করেছে তারা। সেই সূত্র ধরেই এবার পাটের অবয়ব থাকবে দেবী দুর্গার। মূর্তি তৈরি করছেন শিল্পী নবেন্দু চক্রবর্তী। শেষবার সত্যিকারের সোনার গহনা দিয়ে দেবী দুর্গাকে সাজানো হয়েছিল। এবার জগৎময়ীর গায়ে থাকবে কাঠের গহনা। এইসব গহনা তৈরির দায়িত্বে থাকবেন মেদিনীপুরের ভুবন মোহন রাই। নকশিকাথার মত বিলুপ্তপ্রায় শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতেই এরকম থিম হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।
অন্যবারের মত এবারও বাইরে থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে ঢাকির দল। বীরভূম শিউড়ি থেকে ঢাকির দল আসছে। সেইসঙ্গে ঢোল এবং একজন সানাই শিল্পী পুজো মণ্ডপের বাইরে অস্থায়ী মঞ্চে আগত দর্শণার্থীদের মাতাবেন। এখানেই শেষ নয়। মনোরঞ্জনের বাক্সে রয়েছে আসল গুপ্তধন। পুরুলিয়া থেকে আসছে ‘ছৌ ‘ নৃত্যের দল। নগেন সিংহ সরকারের পরিচালনায় তেরো জনের ছৌ নৃত্যের দল যাত্রা পালা করবে। পুরোনো উপাখ্যান মহিষাসুর বধ, অভিমুন্য বধ এবং রক্তাসুর বধ – মঞ্চস্থ হবে। প্রত্যেক দিন তিনটি পালা হবে। দশমীতে ভাসানে যাওয়ার সময়েও এই শিল্পীরা কমিটির সঙ্গে থাকবেন। এছাড়াও দশমীর দিন ভাসানে যেতে যেতে সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হবে। প্রায় ৫০ ফুট উচ্চ মণ্ডপ তৈরি করছেন উধারবন্দের শিল্পী মলয় দে। ঐতিহ্য মেনেই নবমীর দিনে কুমারী পুজো অনুষ্ঠিত হবে। পালকি দিয়েই কুমারী আনা হবে। ১০৫ বছরের পূজাকে জমজমাট করে তুলতে আলোকসজ্জাও রয়েছে। পুজোর চারদিন মহাপ্রসাদ বিতরণের পাশাপাশি মহালয়ার দিন অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুর্গাপূজার অঙ্গ হিসেবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। এতে লিভারের পাশাপাশি চক্ষু পরীক্ষাও করা হবে।
অম্বিকাপুর পূর্বপাড়া – হাসপাতাল রোড পুজো কমিটির পুজোকে সাফল্যমন্ডিত করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন সভাপতি তমাল বণিক। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ড : অনিরুদ্ধ বিশ্বাস, হস্তীমুল বড়দিয়া প্রমুখ।