অনলাইন ডেস্ক : সম্প্রতি গুয়াহাটির মালিগাঁও এলাকায় এক অজ্ঞত-পরিচয় মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল এবং প্রাথমিক তদন্তের পর উঠে আসে এক ভয়ানক হত্যার কাহিনী। অবৈধ প্রেমে জড়িত থাকার অভিযোগে উত্তর প্রদেশের এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন গুয়াহাটির বাসিন্দা। তাকে বাড়িতে ডেকে প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় এবং পরে তার চোখ-কান কেটে নেওয়া হয়, খুলে ফেলা হয় দাঁতের পাটি। ঘটনায় এপর্যন্ত চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং এর মধ্যে রয়েছেন দুজন মহিলা।
উত্তর প্রদেশের বাসিন্দারা রাঘবেন্দ্র কুমার গুপ্তা তার স্ত্রী এবং সন্তানকে নিয়ে গুয়াহাটির পল্টনবাজার এলাকায় থাকতেন। সোমবার রাতে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন এবং বৃহস্পতিবার সকালে মালিগাঁও এলাকায় এক বস্তার ভেতর তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তে জানা গেছে অন্তত দু-তিনদিন আগে তার মৃত্যু হয়েছিল এবং শরীরে রয়েছে এমন কিছু ক্ষতের দাগ যাতে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যার আগে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছিল।
মালিগাঁও এলাকার বাসিন্দারা রাজু এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত। পুলিশ বিভাগের সূত্র অনুযায়ী, তার স্ত্রীর সঙ্গে রাঘবেন্দ্র ওরফে রঘুর অবৈধ সম্পর্ক ছিল এবং সম্প্রতি তার স্ত্রী অন্তঃসত্তা হয়েছেন। এদিকে রাঘবের স্ত্রীও অন্তসত্ত্বা এবং তিনি তার পরিবারের লোকেদের সঙ্গে থাকেন। রাজু একসময় রাঘবকে প্রস্তাব দেয়, সে বিষয়টি মিটমাট করতে চায় এবং যাতে এসব জনসমক্ষে না আসে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চায়। সোমবার রাতে রাজু রাঘবকে ডেকে পাঠায় এবং স্থানীয় এক দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, রাত বারোটা নাগাদ দুজনের দেখা হয়। যে ফ্ল্যাটের পাশে বৃহস্পতিবার সকালে রঘুর মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল, সোমবার রাতের পর থেকে বুধবার পর্যন্ত সেখানের সিসিটিভি রহস্যজনকভাবে বন্ধ ছিল।
পুলিশের ধারণা, পরিকল্পিতভাবে রাঘবকে ডেকে প্রথমে নেশাদ্রব্য খাওয়ানো হয়েছে এরপর তার ওপর পাশবিক অত্যাচার করেছে রাজু। চাকু দিয়ে তার দুই চোখ উপরে ফেলা হয়েছে, দুই কান কাটা হয়েছে এবং গলার আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় চাকু দিয়ে বহুবার আঘাত করা হয়েছে। হাতুড়ি দিয়ে তার সবগুলো দাঁত একটা একটা করে ভাঙ্গা হয়েছে। পুরোটাই হয়েছে রঘু জীবিত থাকা অবস্থায়। এরপর তাকে উলঙ্গ অবস্থায় বস্তায় পুড়ে এক ফ্ল্যাটের পাশে থাকা নালায় ফেলে দেওয়া হয়। সেখান থেকেই পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে।
রঘুর পরিবারের লোকেরা রাজু সহ চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এবং চারজন অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরিবারের লোকেরা বলেন, ‘মানসিকভাবে সুস্থ মানুষ এভাবে কাউকে হত্যা করতে পারে না। রঘুর সন্তান এখনও পৃথিবীতে আসেনি এবং এর আগেই সে পিতৃহারা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।’