শিলচর, ২৬ আগস্ট : হাজার হাজার সরকারি স্কুল বন্ধ করে সর্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার অভিপ্রায়ে আসাম সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুক্রবার অল ইণ্ডিয়া ডিএসও’র আসাম রাজ্য কমিটির আহ্বানে রাজ্য ভিত্তিক প্ৰতিবাদ দিবস পালন করা হয়। শিলচর, করিমগঞ্জ, গুয়াহাটি, তেজপুর, নলবাড়ি, যোরহাট, গোয়ালপাড়া, উত্তর লখিমপুর, ধুবরী সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানের ছাত্ৰ ছাত্ৰীদের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ, প্ৰতিবাদী ধৰ্ণা, মুখ্যমন্ত্ৰীর উদ্দেশ্যে স্মারকপত্র প্ৰেরণ সহ বিভিন্ন কাৰ্যসূচী পালন করা হয়।
এদিন শিলচরের স্কুল ইন্সপেক্টর কার্যালয়ের সামনে দুপুর ১২টা নাগাদ এআইডিএসও’র কর্মী, সমর্থকেরা উপস্থিত হয়ে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এছাড়াও গুয়াহাটির আৰ্য বিদ্যাপীঠ কলেজের সামনে বিক্ষোভ চলাকালে অল ইণ্ডিয়া ডিএসও’র আসাম রাজ্য সভাপতি প্ৰজ্জ্বোল দেব বলেন, রাজ্য সরকার মেট্ৰিক পরীক্ষায় একজনও ছাত্র ছাত্রী পাশ না করার অজুহাত দেখিয়ে ৩৪টি সরকারি স্কুল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার স্বাৰ্থেই মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে রাজ্য সরকার এই শিক্ষা বিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ছাত্ৰ ছাত্ৰীর সংখ্যা হ্ৰাসের অজুহাত খাড়া করে একত্ৰীকরণের নামে স্কুল বন্ধের প্ৰক্ৰিয়া দ্রুত গতিতে চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য জনগণের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ করার ‘বিদ্যাঞ্জলি প্রকল্পের’ আড়ালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পিপিপি মডেলে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার ব্যবসায়ীকরণ ঘটানোর প্ৰক্ৰিয়া চালু করতে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, দীৰ্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষকের ও পরিকাঠামোর অভাব, অষ্টম শ্ৰেণি পর্যন্ত পাস ফেল প্ৰথা তুলে দেওয়া, পাঠদানের ক্ষেত্ৰে ফাংশনাল পদ্ধতি প্ৰৰ্বতন করে সরকারি শিক্ষার মান মারাত্মকভাবে অবনমিত করা হয়েছে। এই পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর ব্যবস্থা করা। রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মুল নায়ক। শিক্ষার সামগ্ৰিক ব্যবসায়ীকরণের ব্লু-প্ৰিন্ট জাতীয় শিক্ষা নীতি, ২০২০ রাজ্যে দ্রুত বাস্তবায়ন করার উদ্দেশ্যে হচ্ছে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার শ্মশান যাত্রার ব্যবস্থা করা।
সরকারের এই উদ্দেশ্য সফল হলে ৭০% দরিদ্র পরিবারের ছাত্ৰ-ছাত্রীরা শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। তাই শিক্ষাপ্ৰতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর এই সরকারের শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল করা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নের জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পদক্ষেপ গ্ৰহণের দাবিতে রাজ্য ভিত্তিক তীব্ৰ ছাত্ৰ ও গণ আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগামীতে সবাইকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি।