অনলাইন ডেস্ক : শহরের তারাপুর মদনমোহন রোডের নাগাপুঞ্জি থেকে মাংস উদ্ধারকে ঘিরে সোমবার ঈদের দিনে বেশ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিশ এই ঘটনায় নাগাপুঞ্জির বাসিন্দা থাইনাং রংমাই (৪৫) ও জেইনপুনা রংমাই (২৬)কে আটক করেছে। এই দুজন সম্পর্কে মামা ও ভাগ্নে।
নাগাপুঞ্জির আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এদিন বিকেলের দিকে দেখা যায় থাইনাং রংমাইদের ঘরে গোমাংস কাটা হচ্ছে। মিশ্র জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এভাবে গোমাংস কাটতে দেখে কিছু লোক আপত্তি জানান। যদিও থাইনাংরা কোনও কথা কানে তুলতে রাজি হননি। একথা ছড়িয়ে পড়ার পর জড়ো হন প্রচুর সংখ্যক লোক। হাজির হন বজরং দলের সদস্যরাও। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ পৌঁছে মাংস উদ্ধারের পাশাপাশি থাইনাংকে আটক করে নিয়ে আসে তারাপুর পুলিশ ফাঁড়িতে। তখন স্থানীয় লোকজন এবং বজরং দলের সদস্যরা পিছু পিছু এসে ভিড় জমান ফাঁড়ির সামনে।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মাঝে বাহিনী নিয়ে ফাঁড়িতে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত সেন, সদর থানার ওসি অমৃত কুমার সিং সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরাও। হাজির হন বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তীও ।এদিকে জমায়েত লোকেদের মধ্যে থেকে দাবি উঠতে থাকে, গো হত্যা করেছে জেইনপুনা রংমাই, পাকড়াও করতে হবে তাকেও। এছাড়া ওই পুঞ্জিতে জেইনপুনারা মদের ঠেক চালিয়ে থাকে বলেও অভিযোগ করে তা উৎখাতের দাবি জানানো হয়। বেশ কিছুক্ষণ ধরে এসব চলার পর পুলিশ খোঁজখবর চালিয়ে পুঞ্জি সংলগ্ন এলাকা থেকে জেইনপুনাকেও আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে, ফাঁড়ির সামনে জমায়েত ভিড় ধীরে ধীরে হালকা হয়ে যায়। জেইনপুনাকে আটক করার আগে পর্যন্ত জমায়েত লোকেরা পুলিশকে গালমন্দ করলেও, তাকে আটক করার পর এদেরই শোনা যায় ” অসম পুলিশ জিন্দাবাদ” ধ্বনি দিতে।
এদিকে পুঞ্জির গাঁওবুড়া লুংথানপাও নাগা জানিয়েছেন, জেইনপুনারা তাকে যে বয়ান দিয়েছে সে অনুযায়ী, মামা থাইনাং রংমাই কোনও কাজে অন্নপূর্ণা ঘাটে গিয়েছিল। সেখানে তার নজরে পড়ে নদী দিয়ে ভেসে আসছে গরুর ভড়। সে এসব উঠিয়ে মোবাইলে খবর দেয় ভাগ্নে জেইনপুনাকে। জেইনপুনা গাড়ি নিয়ে সেখানে গিয়ে এসব বাড়িতে নিয়ে যায়। তারা এসব খাবার হিসেবে খেয়ে থাকে। পুলিশও জানিয়েছে, নাগাপুঞ্জিতে গো হত্যা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। মাংস বলতে যা বলা হয়েছে, দেখে মনে হচ্ছে তাতে রয়েছে শুধু ভড়ই। নদী দিয়ে ভেসে আসার কাহিনী পুলিশ পুরোপুরি মেনে না নিলেও, অনুমান করা হচ্ছে ভড় আনা হয়েছে অন্য কোথাও থেকে। বর্তমানে ব্যাপারটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।