অনলাইন ডেস্ক : প্রত্যাশা পূরণের দিকে আরও একধাপ। এমনটাই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। মন্ত্রিসভার ঘোষণার পর গত দেড় মাসে শিলচরে দ্বিতীয় বারের মতো প্রস্তাবিত ৩টি উড়ালপুল নির্মাণের সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখল এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত দিল্লির কনসালটেন্সি সংস্থা ‘রাইস’। পূর্ব বিভাগের শিলচর ও ওয়ারশন টেরিটোরির এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অনিরুদ্ধ নাগ, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার জয়রন থাওসেনদের সঙ্গে নিয়ে বুধবার রামনগর, তারাপুর, ট্রাংক রোড, ক্যাপিটাল পয়েন্ট, রাখিরখাড়ি সহ শহরের বেশ কয়েকটি ব্যস্ততম এলাকা ঘুরে দেখেছেন কনসালটেন্সি সংস্থার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সায়ন বর্মণ। পরিদর্শন করেছেন তারাপুর শিববাড়ি ‘সিঙ্কিং জোন’। পরে পূর্ত বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অনিরুদ্ধ নাগ বলেন, ঐতিহ্যবাহী ইন্ডিয়া ক্লাব ভবনকে অক্ষত রেখে রামনগর থেকে ট্রাঙ্ক রোড অবধি উত্তোলিত পথ। (এলিভেটেড রোড) নির্মাণের চিন্তাভাবনা চলছে। সেই সঙ্গে চিন্তাচর্চা চলছে তারাপুরের বর্তমান ওভারব্রিজকে বহাল রাখারও। পাশাপাশি তারাপুর শিববাড়ি উড়ালপুল নির্মাণের পাশাপাশি এলাকাটি নদীভাঙন থেকে রক্ষা করার ব্যাপারেও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, রামনগর থেকে ট্রাংক রোড অবধি উত্তোলিত পথের দৈর্ঘ্য হবে ৩ কিলোমিটার। ক্যাপিটাল মোড় থেকে জানা গিয়েছে, অন্য এক জরিপের কাজে আগরতলা গিয়েছিলেন রাইটস-এর ডিজিএম সায়ন বর্মণ। পূর্ত বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অনিরুদ্ধ নাগের অনুরোধে সেখান থেকে ফেরার পথে এদিন শিলচর আসেন তিনি। অফিসপাড়ার পূর্ব কার্যালয় থেকে বেরিয়ে প্রথমে তাঁরা পরিদর্শন করেন সেন্ট্রাল রোডের এমাথা ওমাথা। ইসমাইল মার্কেট এবং অরিয়েন্টাল সিনেমা হলের সামনে রাস্তার মানুজোগ করা হয়। পরে নাজিরপটি হবে প্রেমতলার কিছু আশ পরিদর্শন করে দলটি। বেশ কয়েকটি বহুতল ভবনের অবস্থানও খতিয়ে দেখা হয়। সেখান থেকে দলটি পথ পরিবর্তন করে চলে যায় ক্যাপিটাল পয়েন্ট এলাকায়। সেখানে রামনগর- রোড এলিভেটেড করিডর এবং ক্যাপিটাল পয়েন্ট-বাঙ্গির শাড়ি উড়ালসেতুর ল্যান্ডিং পয়েন্ট খতিয়ে দেখেন। কার্যনির্বাহী বা কার অনিরুদ্ধ নাথ বলেন, শুধু উড়ালপুল নির্মাণ করলেই হবে না। ট্রাফিক পয়েন্ট নিয়েও ভাবতে হবে। কারণ উড়ালসেতু যে জায়গায় এসে রাস্তার সঙ্গে মিলিত হবে, সেই জায়গায় যানজট সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তাই সেতুর পাশাপাশি প্রশস্ত ট্রাফিক পয়েন্ট নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। এক প্রশ্নে তিনি জানিয়েছেন, রামনগর-ট্রাংক রোড এলিভেটেড রোডের জন্য দুটি ল্যান্ডিং পয়েন্ট রাখা যায় কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা । এরপর কাছাড় কলেজের সম্মুখভাগ হয়ে ট্রাংক রোড এলাকা পরিদর্শন করে দলটি সোজা চলে যায় ইন্ডিয়া ক্লাব মোড়ে। সেখানে সবকিছু পরিদর্শন করার পর বাস্তকার নাগ বলেন, ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ভবনটিকে বাঁচিয়ে রেখে রামনগর-টাংক রোড উড়ালপথ নির্মাণের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। ভাবনাচিন্তা চলছে, ইন্ডিয়া ক্লাব ভবনটি বাঁচাতে ঠিক ওই জায়গায় উড়ালপথকে বাঁক নেওয়ানো যায় কি-না। এটা করতে গিয়ে রোটারি ক্লাব ভবনকে নিয়ে আবার সমস্যা হবে না তো? পূর্তকর্তা জানিয়েছেন, রোটারি ক্লাব ভবনকে পাশে রেখেই উড়ালপথকে তার নির্ধারিত জায়গা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এরপর দলটি তারাপুর ওভারব্রিজ এবং তারাপুর শিববাড়ি এলাকা পরিদর্শন করে। তারাপুরে বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে কথা বলেন বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী । বিস্তারিত আলোচনার পর সংবাদমাধ্যমে বিধায়ক বলেন, রামনগর-ট্রাংক রোড উড়ালপথের অন্তত ৩টি খসড়া ডিপিআর সরকারকে পেশ করা হবে। এরমধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ডিপিআর-কে জানানো হবে অনুমোদন। এজন্য তিনি শিলচরবাসীর তরফে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৯ নভেম্বর শিলচরে অনুষ্ঠিত রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিলচরের যানজট সমস্যা নিরসনে ক্যাপিটেল ট্রেভেলস পয়েন্ট থেকে রাঙ্গিরখাড়ি এবং রামনগর থেকে ইন্ডিয়া ক্লাব ছুঁরে ট্রাঙ্ক রোড পর্যন্ত দু’টি উড়ালপুল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি তারাপুর শিববাড়ির সংলগ্ন এলাকা নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য উড়ালপুল নির্মাণের প্রস্তাব নেওয়া হয় সেদিন। এর দিন কয়েক পর গত ৫ ডিসেম্বর উড়ালসেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখতে শিলচরে আসেন রাইটস-এর ডিজিএম সায়ন বর্মণ। প্রাথমিক পর্যায়ে সমীক্ষার পর দিল্লি ফিরেও যান তিনি। ইত্যবসরে গত ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে আরও একদফা শিলচর শহরকে যানজট মুক্ত করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মন্ত্রিসভা স্থির করে, ৩৭ নং জাতীয় সড়কের রামনগর থেকে ট্রাঙ্ক রোড অবধি উত্তোলিত পথ (এলিভেটেড রোড) নির্মাণ করার সম্ভাব্যতা যাচাই ক হবে। একইভাবে ৩০৬ নং জাতীয় সড়কের ক্যাপিটেল ট্রেভেলস পয়েন্ট থেে রাঙ্গিরখাড়ি পয়েন্ট পর্যন্ত অনুরূপ আরেকটি উত্তোলিত পথ নির্মাে সম্ভাব্যতাও অধ্যয়ন করে দেখা হবে। সদর্থক প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবা পদক্ষেপ নেবে সরকার। একইসঙ্গে তারাপুর শিববাড়ির কাছাকাছি বর্তমান সিি জোনে পথ নির্মাণের জন্য ডিপিআর তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিস ডিপিআর-এর বরাত দেওয়া হয় রাইটস লিমিটেডকে।