অনলাইন ডেস্ক : স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার কাবুগঞ্জ শাখার ম্যানেজার কুলদীপ দাসগুপ্তের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে চিফ ম্যানেজার (অডিট) যোগেন্দ্র পান্ডেকে। যোগেন্দ্রর অনৈতিক দাবি মেটাতে না পারায় কুলদীপ আত্মঘাতী হয়েছেন বলে মনে করছে পুলিশ। অথচ এই যোগেন্দ্র অডিটের জন্য এসে শিলচরে হোটেলে উঠার পর তার জন্য প্রতিদিন খাবার যেত কুলদীপের বাড়ি থেকেই।
কুলদীপের পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, পান্ডে কুলদীপকে বলেছিলেন হোটেলের খাবার তার ঠিক সহ্য হয় না, তাই তাকে যেন তার (কুলদীপের) বাড়ি থেকে খাবার পাঠানো হয়। এই অবস্থায় কুলদীপের মা অলকা দাশগুপ্ত প্রতিদিন খাবার তৈরি করে দিতেন। তা পৌঁছে দেওয়া হতো হোটেলে।
কুলদীপের পরিবারের লোকেদের কথায়, এসবের পরও লোকটা লোভী হয়ে অনৈতিকভাবে বিভিন্ন সামগ্রী ও আর্থিক সুবিধা আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে কুলদীপকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবেন তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি তারা। কুলদীপের বাড়ি থেকে যে তার জন্য খাবার পাঠানো হতো এ কথা স্বীকার করেছেন যোগেন্দ্র পান্ডেও। তবে তিনি দাবি করেন, এর জন্য তিনি কুলদীপকে অনুরোধ করেননি। কুলদীপ নিজে থেকেই বাড়ি থেকে খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সঙ্গে তিনি এও দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে কুলদীপের উপর চাপ সৃষ্টি করে বিভিন্ন সামগ্রী আদায়ের যে অভিযোগ উঠেছে তা ঠিক নয়। কুলদীপ নিজে থেকেই, আগ্রহী হয়ে তাকে দিয়েছেন এসব। সঙ্গে তিনি এও দাবি করেন, ব্যাংকে কয়েকটি ফাইল না মেলার দরুন কুলদীপ বাস্তবিকই উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন। এসব লক্ষ্য করে তিনি তাকে দুশ্চিন্তা না করে সময় নিয়ে ফাইল খুঁজতে বলেন। তার দাবি, তিনি নির্দোষ, ফেঁসে গেছেন পরিস্থিতির চাপে।
যোগেন্দ্র পান্ডে এভাবে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেও জেলার ব্যাংক কর্মী মহলে কান পাতলেই বর্তমানে শোনা যাচ্ছে নানা কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ব্যাংক কর্মীই উদ্বেগ ব্যক্ত করে বলেছেন, বর্তমান সময়ে অডিট মানেই তাদের কাছে এক বিভীষিকা। তাদের কথায়, কাজের ক্ষেত্রে অনিচ্ছা সত্ত্বেও কিছুটা ফাঁকফোকর থেকে যায়। এসবকেই হাতিয়ার করে একাংশ অডিটর বিভিন্ন সুবিধা আদায় করে নেওয়ার তালে থাকেন। এদিকে কুলদীপের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সুবিচার চেয়ে ব্যাংক কর্মীরা সোমবার সন্ধ্যায় শিলচরে এক মোমবাতি মিছিল বের করেন। নরসিংটোলা ময়দান থেকে যাত্রা শুরুর পর তারা বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করেন।