অনলাইন ডেস্ক : পঁয়তাল্লিশ বছরের বেশি বয়সীদের মণ্ডল সভাপতি পদে বসানো যাবে না। শুধু কাছাড় বা অসম নয়, সারা দেশেই এই ফরমান জারি করেছিল বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু কাছাড়ের ঘোষিত ১৮ সভাপতির মধ্যে ৩ জনের বয়স পঁয়তাল্লিশের বেশি! এ নিয়ে দলের মধ্যেই দেখা দিয়েছে ক্ষোভ, অভিমান। অভিযোগ, স্টেট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশকে তোয়াক্কা না করেই ঘোষিত হয়েছে কাছাড়ের তালিকা।
জানা যায়, শাসক দল বিজেপির মণ্ডল সভাপতি পদের জন্য এবার এক বিশেষ নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলে তারুণ্যে ভরপুর করতে মন্ডল সভাপতিদের বয়সের ঊর্ধসীমা ৪৫ বছর করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। একইভাবে জেলা সভাপতি পদেও কিছু নয়া নিয়মনীতি আনা হয়। বলা হয়, যাঁদের বয়স ৪৫ তাঁরা যেন স্বেচ্ছায় সভাপতি পদের দৌড় থেকে সরে যান। ফলে বিজেপিকে অন্যান্য দল থেকে আলাদা প্রমাণ করতে গিয়ে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ান অনেকই। আর যাঁরা ৪৫-এর কম বয়েসী, তাঁরা মন্ডল সভাপতি পদের জন্য আবেদন করেন। এতে রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে কাছাড়ের প্রত্যাশীরাও সামিল হন। কাছাড়ের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয় হাইলাকান্দির সুব্রত নাথকে। বরাক উপত্যকার তিন জেলার সার্বিক দায়িত্বে থাকেন মন্ত্রী পীযুষ হাজরিকা। এজন্য মন্ত্রী পীযুষ তাঁর সদ্য সমাপ্ত বরাক সফরের সময় এনিয়ে স্থরে স্থরে দলীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি গুয়াহাটি ফিরে যাওয়ার পর জেলা রিটার্নিং অফিসার ঘোষণা করেন নতুন মন্ডল সভাপতিদের নাম। কাছাড়ের ২৩ মন্ডলের মধ্যে ১৮ মন্ডলের নাম ঘোষণা দিয়ে এঁদের দায়িত্ব নিতেও বলেন রিটার্নিং অফিসার।
খবর মতে, ঘোষিত ১৮ মন্ডল সভাপতির মধ্যে ৩ জনের বয়স পঁয়তাল্লিশ পেরিয়ে গেছে! এঁরা হলেন চাতলা মন্ডলের সভাপতি মানব সিং, মালুগ্রাম-রংপুরের পুলক দেব ও পশ্চিম কাটিগড়ার নিরাপদ দেব। এনিয়ে দলের মধ্যে বেশ অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নতুন মন্ডল সভাপতিদের তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই অনেকের চোখ কপালে ওঠে। অভিযোগ, কারচুপি করে, সংশ্লিষ্টদের ভুল বুঝিয়ে পদ আদায় করে নিয়েছেন এই ‘বুড়ো’ মন্ডল সভাপতিরা।
জানা যায়, এই তিন জনের বয়স যে বেশি তা স্টেট রিটার্নিং অফিসার তথা রাজ্যসভা সাংসদ মিশনরঞ্জন দাসকে আগেই জানানো হয়েছিল। মিশনবাবুও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে কাছাড়ের তালিকা প্রকাশ না করতে জেলা রিটার্নিং অফিসার সুব্রত নাথকে নির্দেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু স্টেট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশকে পাশ কাটিয়ে ঘোষণা করা হয় কাছাড়ের তালিকা। অতচ একই অভিযোগ থাকা আরও কিছু জেলায় তালিকা প্রকাশ না করতে চিঠি দিয়েছিলেন মিশনরঞ্জন দাস। ফলে সেসব জেলায় ঘোষণা হয়নি তালিকা। শুক্রবার কাছাড়ের নয়া মন্ডল সভাপতিদের তালিকা প্রকাশের পর দলের অভ্যন্তরে বেশ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখন কী ব্যবস্থা নেন, এটাই দেখার!