অনলাইন ডেস্ক : চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত বন্দর নির্মাণে আদানিদের সহায়তা চায় বাংলাদেশ। এই বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের সহায়ক হবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। প্রস্তাবিত বন্দরে সামিল হতে ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে দুবাই পোর্ট, সিঙ্গাপুর পোর্ট। ভারত থেকে রাষ্ট্রীয় সফরে আসা সাংবাদিকদের এ কথা জানান বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাসান মাহমুদ। ভারতের কোনও লগ্নিকারীর সঙ্গে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘আদানির কাছে আমরা প্রস্তাব করেছি। কিন্তু ওরা এখনও কিছু জানায়নি। ওদের গতি বড্ড ধীর। তবে প্রস্তাবিত বন্দর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে যে মুক্ত বানিজ্য অঞ্চল তৈরি হবে, সেটির জন্য ভারত প্রায় এক হাজার একর জমি নেবে। জাপানও ওই প্রকল্পে সম পরিমান জমি নিতে অঙ্গীকার করেছে।’
চট্টগ্রাম বন্দর প্রায় ৭০০ বছরের প্রাচীন। এই মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সিপাহী বিদ্রোহের পর বৃটিশদের নজরে পড়ে এই বন্দর। একসময়ে অসম রেলের সদর দফতর ছিল চট্টগ্রামে। উত্তর পূর্ব ভারতে বানিজ্যবৃদ্ধির সম্ভাবনায় ব্রিটিশরা সেখানে বন্দর তৈরির কথা ভাবে। এখন এই বন্দর বাংলাদেশের জীবনরেখা। এদেশের ব্যবসার অন্তত ৯০ শতাংশ হয় চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে।
বর্তমান বন্দরের ১০ কিলোমিটার ব্যবধানে তৈরি হচ্ছে নতুন বন্দর। বর্তমান বন্দরের গভীরতা যেখানে প্রায় সাড়ে নয় মিটার, নয়া বন্দরের গভীরতা ১২ মিটারের মত। এ কথা জানিয়ে ডঃ হাছান মাহমুদ বলেন, “বর্তমান বন্দরের তুলনায় অন্তত দ্বিগুন হবে নতুন বন্দরের ব্যবসার পরিমাণ। বেশি উপকৃত হবে ত্রিপুরা। ওরা ইতিমধ্যে ‘কন্টেইনার ডিপো’ তৈরি করেছে। প্রায় ৭০ কিলোমিটার ব্যবধানে তৈরি হবে মুক্ত বানিজ্য অঞ্চল। আয়তন হবে ৩৫ হাজার একরের মত। সেখানে জমির ব্যাপারে ভারত আগ্রহ দেখিয়েছে।চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত বন্দরের জন্য কত খরচ ও সময় লাগতে পারে, তার আভাষ অবশ্য দিতে পারেননি ডঃ হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে হবে এটা। প্রথম পর্যায়ের কাজ হতে আরও বছর দুই লাগবে। এখন জমি ভরাটের কাজ চলছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের দক্ষিণে পায়রা সমুদ্র বন্দরের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্রের খবর, এসব প্রকল্প বাবদ মোট খরচ ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৭২ কোটি টাকা। যার পুরোটাই বাংলাদেশের রিজার্ভের টাকা দিয়ে তৈরি করা তহবিল থেকে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এই তহবিলের নাম ‘বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিদেশী অর্থায়নে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। এজন্য রিজার্ভের টাকা দিয়ে এই বন্দরের কাজ শুরু করা হচ্ছে। এতে ঘরের টাকা ঘরেই থাকবে।’ চলতি বছরের শেষ নাগাদ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে এবং এর ফলে বন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে জানাচ্ছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।