অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতীক্ষার ইতিটেনে ৪ এপ্রিল পদ্মায় পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। গত বছরের জুন মাসে পদ্মা সেতু চালুর পর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে এবং আগরতলা থেকে বহু মানুষ সড়কে পথে পদ্মা সেতু দিয়ে বাংলাদেশ হয়ে কলকাতা গিয়েছেন। কলকাতা থেকেও কবি, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ পদ্মা পেরিয়ে বাংলাদেশে আসেন এবং বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করেছেন। পদ্মা সেতু ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোতে যোগাযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। পদ্মা ট্রেন চলাচল শুরু হলে, তা আরও একধাপ এগুবে। মংলা বন্দর থেকে কোন পণ্য ট্রেন সরাসরি অসম ও ত্রিপপুরার আগরতলাসহ বিভিন্ন রাজ্যে সাশ্রয়ী পণ্যপরিবহন গতিশীল হবে। শেখ হাসিনার হাত ধরে খড়স্রোতা পদ্মা জয়ের পর এবারে সেই সেতু দিয়ে ৪ এপ্রিল পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাত্র সাড়ে নয় মাস পর ৪ এপ্রিল সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চলানোর ঘোষণা দিল রেলভবন। এর আগে বিদায়ী বছরের ২৫ জুন বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সেতু চালুর মধ্য দিয়ে খুলে যায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতির দোয়ার। বিশেষ করে পদ্মা সে তুতে ট্রেন চলাচল শুরুর পর ঢাকা-কলকতায় ট্রেন চলাচলের সময় লাগবে মাত্র ৪ ঘণ্টা। আর উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্য ত্রিপুরার আগরতলা থেকে কোন ট্রেন ছেড়ে কলকাতায় পৌছাবে ৮ ঘন্টায়। বর্তমানে আগলতলা থেকে ট্রেনে কলকতায় আসতে সময় লাগছে কমপক্ষে ৩৬ ঘণ্টা। পদ্মায় পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের তথ্য নিশ্চিত করে মঙ্গলবার রেলপথ মন্ত্রকের উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শরিফুল আলম বলেন, পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের সম্ভাব্য তারিখ ৪ এপ্রিল। আর জুনের মধ্যেই কাজ শেষ হবে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথের। এখানের ৩২ কিলোমিটার রেলপথের ট্রায়াল রান সফলভাবে আগেই সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে রেল সেতুর প্রায় ৯৮ দশমিক ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন। রেলভবন সূত্রের খবর, মূল সেতুতে মাত্র সাত মিটার স্প্যান বসানোর কাজ বাকি। সেতুতে ভায়াডাক্টের ওপর পাথরবিহীন সাড়ে ছয় কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন হচ্ছে মূল সেতুতে। পুরো প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। দ্রুত কাজের সুবিধার্থে পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ তিন শতাংশ করা হয়েছে। ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত অংশের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৭৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। আর মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে ৯১ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং ভাঙ্গা-যশোর অংশে ৬৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে পদ্মা লিংক রুটের কাজ চলছে দিনরাত।