অনলাইন ডেস্ক : হাইলাকান্দি জেলায় প্রকাশ্যে এলো অবাক করার মতো এক কাণ্ড। দুই জিপির ভোটার হওয়ায় মিলছে না সরকারি সুযোগ-সুবিধা। আর এ নিয়ে সরব হয়ে উঠেছেন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি তথা রাইজর দলের নেতা জহির উদ্দিন লস্কর,স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে সেলিম উদ্দিন মজুমদার সহ অন্যান্যরা। এনিয়ে সোমবার লালার উত্তর জষ্ণাবাদ প্রথম খণ্ড গ্রামে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। জহির উদ্দিন লস্করের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়,আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে হাইলাকান্দি জেলা পরিষদ সিইও কার্যালয় ঘেরাও করা হবে। এরপর এই সমস্যার কোনও সুরাহা না হলে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবেন জহির উদ্দিনরা। উল্লেখ্য,এখানকার মানুষ বিধানসভা ভোটে জষ্ণাবাদ-উমেদনগর জিপির ভোটার আর পঞ্চায়েত ভোটে লালামুখ জিপির ভোটার। আর এই দ্বৈরথে এসব ভোটার পাচ্ছেন না সরকারি কোনও ধরনের সুযোগ-সুবিধা। ফলে বিষয়টি চিন্তায় ফেলে দিয়েছে উত্তর জষ্ণাবাদ প্রথম খণ্ড গ্রামের দুই শতাধিক ভোটারকে।দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে এখানকার এই দু’শতাধিক ভোটার পড়েছেন ভীষণ বেকায়দায়। দুই জিপিতে থাকার দরুন কোনও জিপি থেকে তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন এ নিয়ে পড়েছেন বিড়ম্বনায়। সঙ্গে উভয় জিপি সভাপতি তাদের ভোটার নয়, বলে তাদেরকে সরকারি সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন বলে অভিযোগ আলিম উদ্দিন লস্কর,তাজ উদ্দিন লস্কর,হবিবুর রহমান শেখ,জুয়াইদ আলি লস্কর, ফখর উদ্দিন লস্কর,আমির উদ্দিন লস্কর,সিফত আলি শেখ,তজমুল শেখ,ময়না বিন,মন্নান শেখ, মণির উদ্দিন লস্কর,রমিজ উদ্দিন লস্কর,জমির উদ্দিন লস্কর সহ কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি ও রাইজর দলের কর্মকর্তাদের। এসব ভোটারা জষ্ণাবাদ-উমেদনগর জিপির বাসিন্দা বটে।কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থে একসময় কিছু নেতা এসব ভোটারকে জষ্ণাবাদ-উমেদনগর জিপি থেকে কেটে নিয়ে যান লালামুখ জিপিতে। আর বর্তমানে এসব ভোটার লালামুখ জিপির ভোটার হিসেবে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করা সত্ত্বে মিলছে না কোনওধরনের সুযোগ-সুবিধা।কিন্তু বর্তমানে এসব ভোটারের মধ্যে অনেকের নাম জষ্ণাবাদ-উমেদনগর জিপির বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে থাকায় পড়েছেন চরম বেকায়দায়। তারা না পাচ্ছেন জষ্ণাবাদ-উমেদনগর জিপি থেকে কোনও ধরণের সরকারি সুবিধা। না পাচ্ছেন লালামুখ জিপি থেকে কোনও সুবিধা। বর্তমানে উন্নয়ন বঞ্চিত জষ্ণাবাদ প্রথম খণ্ড গ্রামের দুই শতাধিক ভোটার কোন জিপির বাসিন্দা এনিয়ে পড়েছেন দ্বিধায়। শুধু কাটাখাল নদীই তাদের করেছে দুই জিপির বাসিন্দা। এসব ভোটার লালামুখ জিপিতে বসবাস করলেও বিধানসভায় ভোট দেন জষ্ণাবাদ-উমেদনগর জিপিতে এসে। বর্তমানে এসব বাসিন্দা বসবাস করে চলেছেন কাটাখাল নদীর পূর্বপারে ভরতপুর এলাকায়। তাই কোন জিপি থেকে উন্নয়ন বঞ্চিত লোকেরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন এ নিয়ে ইতিমধ্যে তারা দ্বারস্থ হয়েছেন হাইলাকান্দি ডিস্ট্রিক্ট লিগাল সার্ভিসেস অথরিটির। মামলা নম্বর ৯/২২। গরিব,অসহায় ও খেঁটে খাওয়া লোক হওয়া সত্ত্বেও কেন তাদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে এর কোনও সদুত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না এসব উন্নয়ন বঞ্চিত লোকেরা। আজও তারা সরকারি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা,রেশন কার্ড,জবকার্ড,স্যানিটেশন ইত্যাদি থেকে বঞ্চিত। এছাড়া লালা উন্নয়ন খণ্ড আধিকারিকের কাছেও একটি আবেদনপত্র তুলে দিয়ে একই দাবি জানিয়েছেন তারা। এদিকে এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৬ জুলাই লালা উন্নয়ন খণ্ড আধিকারিক মনোজকুমার দত্ত এক চিঠি দিয়ে জষ্ণাবাদ-উমেদনগর জিপি সচিবের কাছে এসব তুলে ধরে সাতদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সহ রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ দিলেও কোনও পদক্ষেপ কিংবা রিপোর্ট জমা হয়েছে কি না সেটা জানা যায়নি। ফলে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে পড়েছেন এসব উন্নয়ন বঞ্চিত লোকেরা। তারা দুই জিপির সভাপতি সহ স্থানীয় বিধায়ককের দ্বারস্থ হলেও মিলছে না কোনও সুরহা। তাই শীঘ্র এ জ্বলন্ত সমস্যা সমাধানে জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথমে জেলা পরিষদের সিইও কার্যালয় ঘেরাও করা হবে বলে জানিয়েছেন জহির উদ্দিন লস্কর ও সেলিম উদ্দিন মজুমদার।