অনলাইন ডেস্ক : আরও এক জঘন্য ঘটনার সাক্ষী হল গুয়াহাটি মহানগর। জনৈক দিব্যাঙ্গ মা ও তাঁর মেয়েকে উপর্যুপরি ধৰ্ষণ করে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে আট নরপিশাচ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে চার অভিযুক্ত তথা ঘটনার মূল মাস্টারমাইন্ড অমিত প্ৰধান এবং তার তিন সাঁকরেদ বিমল ছেত্ৰী, ছায়া প্ৰধান ও সন্ধিয়া সোনারকে পুলিশ গ্ৰেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
মানব সমাজকে লজ্জাবনতকারী ঘটনাটি গত ১৭ মে সংগঠিত হলেও কোনওভাবে মঙ্গলবার তা প্রকাশ্যে এসেছে। প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, ১৭ মে সাতগাঁওয়ের বাসিন্দা বছর ৬৫-এর দিব্যাঙ্গ মা ও তাঁর ২২ বছর বয়সি মেয়ের ঘরের দরজা ভেঙে আটজনের এক দল ঢুকে। ওই আটজন দলবদ্ধভাবে তাঁদের ধৰ্ষণের পর উভয়ের যৌনাঙ্গে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটেয়ে পাশবিক নিৰ্যাতন চালিয়েছিল। ধৰ্ষক দলের নিৰ্যাতন সহ্য করতে না পেরে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিলেন মা ও মেয়ে, দুজনেই।
পরের দিন স্থানীয়রা ৬৫ বছরের মা এবং ২২ বছর বয়সি মেয়েকে মুমূৰ্ষ অবস্থায় দেখে সাতগাঁও থানায় খবর দেন। স্থানীয়দের সহায়তায় সাতগাঁও পুলিশ মা-মেয়েকে গৌহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (জিএমসিএইচ) নিয়ে আসে। জিএমসিএইচে চিকিৎসকের দল যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে উভয়ের চিকিৎসা করে তাঁদের সুস্থ করে তুলেন।
ঘটনা সম্পর্কে সাতগাঁও পুলিশ ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪৫৬/২৯৮/৩৫৪/৩৫৪ (বি) ধারায় ৯২/২৩ নম্বরে এক মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের ভিত্তিতে এ পর্যন্ত চার ধৰ্ষক তথা ঘটনার মূল মাস্টারমাইন্ড অমিত প্ৰধান, বিমল ছেত্ৰী, ছায়া প্ৰধান এবং সন্ধিয়া সোনার গ্ৰেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। এদিকে জিএমসিএইচের চিকিৎসা-প্ৰতিবেদনে ঘটনাকে এক দলবদ্ধ ধৰ্ষণকাণ্ড বলে উল্লেখ করার পর পুলিশ মামলার সঙ্গে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ নম্বর ধারা যোগ করেছে।
এদিকে স্থানীয়দের কাছে জানা গেছে, জনৈক অরুণ প্ৰধান নামের ৫৫ বছরের ব্যক্তির সঙ্গে ভুক্তভোগী ২২ বছর বয়সি বিবাহ বিচ্ছেদিত যুবতীর সঙ্গে ছিল অবৈধ সম্পৰ্ক। এই সম্পৰ্ক মানতে পারেনি অরুণ প্ৰধানের ছেলে অমিত প্ৰধান (গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত)। তাই সে তার সাত সাঁকরেদকে সঙ্গে নিয়ে ১৭ মে রাতে ওই ঘটনা সংগঠিত করেছিল।
এদিকে স্থানীয় জানা যায়, মূল অভিযুক্ত অমিত প্ৰধানকে তার অপকৰ্ম থেকে রক্ষা করতে বাবা অরুণ প্ৰধান ভুক্তভোগী বিবাহ বিচ্ছেদিত যুবতীকে বিয়ে করে ফেলেন। এর পর এ সম্পর্কে এক শপথনামা তৈরি করে মামলা প্রত্যাহার করতে সাতগাঁও থানায় আবেদন জানায় বাবা অরুণ। কিন্তু দলবদ্ধ ধৰ্ষণের মামলা রুজু হওয়ায় তা প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করে পুলিশ।
অন্যদিকে গোটা ঘটনা পুলিশ চেপে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে একটি মহল থেকে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। ভুক্তভোগী এবং স্থানীয়দের ঘটনা সম্পর্কে মুখ না খুলতে নাকি পুলিশ হুমকি দিচ্ছে, এ ধরনের অভিযোগও উঠেছে। কেবল তা-ই নয়, সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলতে পারেন, এই সন্দেহ করে ভুক্তভোগী যুবতীকে নাকি প্রায় প্রতিদিন থানায় এনে পুলিশ বসিয়ে রাখে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কয়েকজন।