অনলাইন ডেস্ক : পঞ্চায়েত-জেলাপরিষদ, পুরসভা থেকে শুরু করে বিধায়ক কিংবা সাংসদ তো দূর — এক সুস্মিতা দেবকে বাদ দিলে অসমে তৃণমূল কংগ্রেসের একজন নির্বাচিত ওয়ার্ড মেম্বার পর্যন্ত নেই। সাংগঠনিক ভিত-ও প্রায় শূন্যের কোঠায়। তারপরও শিলচর টাউন ক্লাবের মাঠে দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী, পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী জনসভায় দেখা গেল স্বতঃস্ফূর্ত জনতার উপচে পড়া ভিড়। এটাকে দুই তৃণমূল নেত্রী মমতা-সুস্মিতার ক্যারিশমা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
দলীয় প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাসের পালে হাওয়া তুলতে বুধবার শিলচরে নির্বাচনী জনসভা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা। পেয়েছেন অকুণ্ঠ জনসমর্থন ও ভালবাসা। যা বিরোধী শিবির তো বটেই, তাক লাগিয়ে দিয়েছে খোদ ঘাসফুল শিবিরের অনেক’কে-ও। অবশ্য এরকম যে একটা কিছু ঘটতে পারে, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি রিপুন বরা ঈঙ্গিত দিয়েছিলেন আগেই। বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগমনকে ঘিরে কর্মীমহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। তবে এত জনসমাগম হয়তো আশা করেননি তিনিও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পূর্বানুমানের ওপর ভিত্তি করে প্রথমদিকে অ্যারেনায় পাঁচ হাজারেরও বেশি আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সভা শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা আগেই সব আসন ভর্তি হয়ে যায়। অথচ সভাস্থলের প্রবেশদ্বারে তখনও গিজগিজ করছে মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে আরও কিছু আসনের ব্যবস্থা করা হয়। তারপরও সবাইকে বসার ব্যবস্থা করে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এজন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিনি দাবি করেন, আসন সংখ্যার প্রায় সমসংখ্যক কর্মী-সর্থক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দলীয় নেত্রীর বক্তব্য শুনেছেন, তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন। এদিন অবশ্য শিলচর তথা উপত্যকাবাসীকে হতাশ করেননি মমতা। প্রায় ত্রিশ মিনিটের বক্তব্যে তিনি উদ্বাস্তু সমস্যা, ছিন্নমূল মানুষের বিপন্নতা, ডি ভোটার, এনআরসি ছুট, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি ইত্যাদি নানা বিষয়কে ছুঁয়ে গিয়েছেন। আগুন ঝরিয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। বরাকের মানুষকে অভয় দিয়ে বলেছেন,’আপনারা ভয় পাবেন না। পশ্চিমবঙ্গ আপনাদের পাশেই আছে, আগামীতেও থাকবে। বিশেষ কোনও সমস্যা দেখা দিলে আপনারা পশ্চিম বঙ্গে গিয়ে বাড়িঘর বানাবেন। বাংলার দরজা আপনাদের জন্য খোলা।’ বিজেপির বিরুদ্ধে ‘সাম্প্রদায়িক’, ‘গণতন্ত্র বিরোধী শক্তি’ ইত্যাদি বাছা বাছা শব্দবাণ প্রয়োগ করে তিনি বলেন, বিজেপি শাসনে অতিষ্ঠ মানুষ ক্রমেই ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন। তাঁর কথায়, লোকসভা নির্বাচনে অসমে চার প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। এ শুধু ট্রায়াল মাত্র। ফাইনাল ম্যাচ এখনও বাকি। তিনি বলেন, খেলা হবে ২৬-র বিধানসভা নির্বাচনে। অসমের সবকটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী দেবে তৃণমূল।