অনলাইন ডেস্ক : ঘুষ নিতে গিয়ে পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার হাতে ধৃত কাছাড়ের জেলাশাসকের কার্যালয়ের উচ্চ বর্গের সহায়ক সৌম্যব্রত ভট্টাচার্যকে পাঠানো হয়েছে জেল হাজতে। এদিকে এই ঘটনার সূত্র ধরে কার্যালয়ের কর্মীদের চড়াসুরে সতর্ক করে দিলেন জেলাশাসক রোহন কুমার ঝা।
গত ১২ জুন কার্যালয়ের রাজস্ব শাখায় কর্মরত সৌম্যব্রতকে ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে পাকড়াও করে গুয়াহাটি থেকে আসা দুর্নীতি দমন শাখার একটি দল। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় গুয়াহাটিতে। গুয়াহাটিতে নিয়ে যাওয়ার পর আদালতের অনুমতিতে দুর্নীতি দমন শাখা তাকে ৪ দিনের জন্য হেফাজতে নেয়। হেফাজত পর্বে তার “ভয়েজ রেকর্ডিং” সহ আনুষঙ্গিক তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে তাকে ফের পেশ করা হয় আদালতে। আদালতের নির্দেশে তাকে পাঠানো হয় জেলহাজতে। তিনি বর্তমানে রয়েছেন গুয়াহাটির সেন্ট্রাল জেলে। এদিকে ১২ জুন সৌম্যব্রতকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন জেলাশাসক ছিলেন ছুটিতে। ছুটি শেষে ফিরে আসার পর মঙ্গলবার তিনি কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে এক সভায় যোগ দেন। জানা গেছে সভায় জেলাশাসক বলেন, তিনি বিমানবন্দরে থাকার সময় ঘটনার খবর পান। তারই কার্যালয়ের এক কর্মী এভাবে ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা পড়ার খবর পেয়ে লজ্জায় তার মাথা হেট হয়ে যায়।
কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা যখন চাকরিতে যোগ দেন তখন কত বেতন পেতে পারেন তা জেনেই যোগ দিয়েছেন। এরপর এভাবে অসাধু উপায় অবলম্বন কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
সৌম্যব্রত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত দিনে রেকর্ডরুমে কর্মরত থাকাকালীন ওই উচ্চ বর্গের সহায়ক একবার অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে ছিলেন। তখন তিনি তাকে সাসপেন্ড করেন। সাসপেনশন প্রত্যাহারের পর তাকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় রাজস্ব শাখায়। কিন্তু এরপরও সৌম্যব্রত নিজেকে শুধরাননি। চড়াসুরে বিরক্তি ঝরিয়ে তিনি বলেন, একজনকে শুধরানোর জন্য এরচেয়ে তিনি কিই আর বেশি করতে পারতেন। এরপর কর্মচারীদের উদ্দেশ্য আরও করে বলেন, অন্য কেউ এমন কার্যকলাপে জড়ালে তিনি ছেড়ে কথা বলবেন না কোনওভাবেই।
জেলাশাসক বলেন তিনি কর্মচারীদের সঙ্গে সমন্বয় গড়ে কাজ করার পক্ষপাতি। বিগতদিনে এর জন্য কর্মচারীদের নিয়ে বনভোজনেও গিয়েছিলেন। কিন্তু বনভোজনের গিয়ে তার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে
তা মোটেই সুখকর নয়। বনভোজনে একাংশ কর্মী যেভাবে অবভ্যতায় মেতে উঠেন, তা তার চোখে খুবই দৃষ্টিঊ ঠেকেছে, এনিয়েও তিনি সতর্ক করে দেন কর্মীদের।
খবর অনুযায়ী সভায় উপস্থিত দুই অতিরিক্ত জেলা শাসক ধ্রুবজ্যোতি হাজরিকা এবং যুবরাজ বরঠাকুর বলেন, একসময় কাছাড়ের জেলা শাসকের কার্যালয়ের কর্মীদের সুনাম ছিল রাজ্যজুড়ে। কিন্তু বর্তমানে তা তলানিতে ঠেকেছে, এটা খুবই লজ্জাজনক ব্যাপার। এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে কর্মীদের সততার সঙ্গে কাজ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তারা।