অনলাইন ডেস্ক : একদিকে এবিভিপি, অন্যদিকে এন এস ইউ আই ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। বুধবার এসব ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে মারপিটে উত্তপ্ত হয়ে উঠে জিসি কলেজের পরিস্থিতি। এনিয়ে উভয় পক্ষ থেকে সদর থানায় পৃথক পৃথক এজাহার দায়ের করা হয়েছে। দুপক্ষেরই অভিযোগ, অন্যপক্ষ বিনা প্ররোচনায় তাদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে। এবিভিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে প্রতিপক্ষের আক্রমণে আহত হয়েছেন তাদের তিনজন। অন্যদিকে এনএসইউআইর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছেন আহত হয়েছেন তাদের কমপক্ষে দুজন।
সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ। বর্তমানে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন কলেজে নবাগতদের মধ্যে থেকে সদস্যভুক্তি অভিযান চালাচ্ছে। জানা গেছে সদস্যভুক্তির জন্য এবিভিপি এবং এনএসইউআই দুপক্ষই কলেজের বোটানি ডিপার্টমেন্টের ভবনের কাছে কিছুটা ব্যবধানে হেল্পডেক্স খুলেছিল। হঠাৎ করে কোনও কারনে দুপক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এরপর তা গড়িয়ে যায় হাতাহাতিতে।
এবিভিপির পক্ষ থেকে রোহিত চন্দ সহ অন্যান্যরা অভিযোগ করেছেন, দুপুরে হঠাৎ করে এন এস ইউ আইর সদস্যরা তাদের সংগঠনের সদস্যদের উদ্দেশ্য করে কটুক্তি শুরু করেন। এর প্রতিবাদ জানালে এন এস ইউ আই সদস্যরা এগিয়ে এসে শুরু করেন মারপিট। এতে এন এস ইউ আই সদস্যদের সঙ্গে সামিল হন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কয়েকজনও। পাঞ্চ সহ অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের মারপিট করা হয়।মার খেয়ে আহত হন এবিভিপির সাহারুল ইসলাম সদিয়ল , রোহন দাস এবং বুদ্ধ চন্দ এই তিনজন। সেসময় তাদের মহিলা সদস্যদেরও টানা হেচড়া করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন এবিভিপির কর্মকর্তারা। ঘটনা নিয়ে এবিভিপির পক্ষ থেকে সাহারুল ইসলাম সদিয়ল। সদর থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে অপরপক্ষের প্রাঞ্জল মালাকার, জাবির মহম্মদ, তানিশ দত্ত , শিবাশীষ পুরকায়স্থ, সামি বড়লস্কর ও সিদ্ধার্থ দাস সহ অন্যান্য কয়েকজনকে।
এবিভিপি সদস্যরা আরও অভিযোগ করেন, ঘটনার পর এনএসইউআই সদস্যরা অধ্যক্ষের চেম্বারে গিয়েও অশোভন আচরণ করেন। এছাড়া সন্ধ্যার পর লিঙ্ক রোডে তাদের এক মহিলা সদস্যর বাড়িতে গিয়ে এনএসইউআইর এক কর্মকর্তা ও তার বাবা মিলে হুমকি দিয়ে আসেন।
এনএস ইউ আইর পক্ষে জানানো হয়েছে, মার খেয়ে তাদেরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রাঞ্জল মালাকার ও শিবাশীষ দেব পুরকায়স্থ নামে দুজনের আঘাত বেশ গুরুতর। এনএসইউআই কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, প্রাঞ্জল সহ অন্যান্য কয়েকজন “অফ পিরিয়ড”-এ বসে থাকাকালীন তাদের উপর আচমকা আক্রমণ চালান এবিভিপির একদল সদস্য। আক্রমণকারী দলটির নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় পিনাক দত্ত, বুদ্ধ চন্দ, রোসন রায় ও অগ্নিভা নাথ সহ আরও কয়েকজনকে। এবিভিপির আক্রমণকারীরা পাঞ সহ অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রাঞ্জলদের বেধড়ক মারপিট করেন। এনএসইউআই জেলা সভাপতি জন্মজয় চৌধুরী সহ অন্যান্যরা অভিযোগ করেন, মার খেয়ে কলেজের অধ্যক্ষ বিভাস দেবের কাছে বিচার চাইতে গেলে তিনি কোনও পদক্ষেপই নেননি। বরং তার কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছে তিনি যেন আক্রমণকারী এবিভিপি সদস্যদের আড়াল করতে চাইছেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মারপিটের ঘটনা নিয়ে উভয় পক্ষ থেকে যে এজাহার দায়ের করা হয়েছে, এর ভিত্তিতে বর্তমানে শুরু হয়েছে খোঁজখবর।