অনলাইন ডেস্ক : গতবছর শ্যামা পূজায় বাহবা কুড়িয়েছিল সমুদ্র মন্থন থিম। এ বছর অন্ধ্রপ্রদেশের আদিযোগী মন্দিরকে থিম করে পুজোর ভাবনা সাজিয়েছে জানিগঞ্জ কালীপূজা কমিটি। সঙ্গে থাকছে আকর্ষণীয় থ্রিডি লেজার শো। এজন্য মুম্বাই থেকে যোগেশ সোনি ও কলকাতার শুভজিৎ ঘোষকে উড়িয়ে আনা হচ্ছে শিলচরে। তাছাড়া জানিগঞ্জের রাস্তার দুই মোড়ে চলছে অক্টোপাস ও টাওয়ার গেটের আদলে দু’টি সুবিশাল আলোর তোরণ বসানোর কাজ। পুজোয় বাড়তি পাওনা হিসেবে থাকছে সাংস্কৃতিক বিচিত্রানুষ্ঠানের আসর। মোট কথা দর্শনার্থী টানতে এবারও বিনোদনের কম্বোপ্যাক নিয়ে হাজির অর্ধশতাব্দী প্রাচীন এই পূজা কমিটি। শিলচরের সব পাড়াতেই এখন আলোর রোশনাই। আকর্ষণীয় মণ্ডপ-প্রতিমা, সঙ্গে চমকদার থিম। সব মিলিয়ে জমে উঠেছে কালীপুজোর প্রস্তুতি। সেই আবহে এবারও চমকদার পুজো আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে জানিগঞ্জে। পুজো কমিটির সভাপতি রাজকুমার (রাজু) পাল জানিয়েছেন এবার ৫৪তম বছরে পা রেখেছে তাঁদের এই পুজো। ফলে চেষ্টা চলছে পুজোকে যথাসম্ভব আকর্ষণীয় করে তোলার। কেননা, শহর শিলচর তো বটেই, উপত্যকার অন্য জেলার দর্শনার্থীদের-ও চোখ থাকে জানিগঞ্জের পুজোয়। তিনি জানান, আদিযোগী মন্দিরের আদলে ৩৬ ফুট উঁচু মণ্ডপটি তৈরি করছেন শিলচরের জয় দাস। মণ্ডপের ভেতরে থ্রিডি ম্যাপিংয়ের সাহায্যে ফুটিয়ে তোলা হবে শিবের বিভিন্ন রূপ। প্রতি পাঁচ মিনিটের বিরতির পর থাকবে ছয় মিনিটের লেজার শো। এই লেজার শো পরিচালনা করবে কলকাতার ওয়েব লেজার নামের একটি সংস্থা। এছাড়া আলোক সজ্জায়ও থাকবে বিশেষ চমক। কমিটির কর্মকর্তারা জানান, গোটা জানিগঞ্জ এলাকাটি সাজিয়ে তোলা হবে বাহারি আলোকসজ্জায়। অক্টোপাসের আদলে ৫০ ফুট উঁচু আলোর তোরণ বসানো হবে জানিগঞ্জ ও দেওয়ানজি বাজারের সংযোগ স্থলে। প্রায় একই আকারের অপর তোরণটি বসানো হবে জানিগঞ্জ-তুলাপট্টি মোড়ে। এটি হবে টাওয়ার গেটের আদলে। এলাকায় বসানো হবে আরও ১২টি আলোর কলকা। পুজো হবে শাস্ত্রীয় প্রতিমায়। প্রতিমা শিল্পী নবদ্বীপের পার্থ পাল। আলোকসজ্জায় রয়েছেন নবদ্বীপের অসীম হালদার। পুজো কমিটির উপদেষ্টা নন্দদুলাল সাহা জানান, ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় মণ্ডপ উদ্বোধন হবে শিলচর রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী গণধীশানন্দজী মহারাজের হাত ধরে। সঙ্গে থাকার কথা রয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, দুই সাংসদ পরিমল শুক্লবৈদ্য, সুস্মিতা দেব, বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী, কৌশিক রায়, মিহিরকান্তি সোম, প্রাক্তন সাংসদ রাজদীপ রায়, জেলাশাসক মৃদুল যাদব, পুলিশ সুপার নোমাল মাহাতো, বিজেপির প্রদেশ সম্পাদক কণাদ পুরকায়স্থ, প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ পাল, বিজেপির জেলা সভাপতি বিমলেন্দু রায় সহ জানিগঞ্জের প্রবীণেরা। পুজোর উদ্বোধন থেকে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত দর্শনার্থীরা মণ্ডপ দর্শন ও লেজার শো উপভোগ করতে পারবেন। কালীপুজার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত হবে মহাপ্রসাদ বিতরণ। প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে শ্যামাসঙ্গীত, রবীন্দ্র সঙ্গীত সহ বিচিত্রানুষ্ঠানের আসর। Zআহ্বায়ক প্রশান্ত পাল, পৃথ্বিশ পাল,সহ সম্পাদক দেবজিৎ পাল, রিক পাল, কোষাধ্যক্ষ বিমল সিপানি, কাজল পাল, দীপক পাল, উত্তম সরকারদের পাশে বসিয়ে কমিটির সহ-সভাপতি মূলচাঁদ বৈদ জানান, অন্য বারের মতো মেধাবী পড়ুয়াদের সম্মাননা প্রদান করা হবে এবারও। মাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল করেছে এমন ১১ পড়ুয়াকে প্রদান করা হবে দিলীপ কুমার পাল স্মৃতি সম্মননা। পূজা কমিটির সম্পাদক সাগ্নিক পাল (সায়ন) জানান, পুজোর দিনে যানজটের সমস্যা যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে পুলিশ প্রশাসন , ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় থাকবেন কমাটির স্বেচ্ছাসেবকরাও। তিনি উল্লেখ করেন, এ বছর পুজোর থিম সং প্রস্তুত করেছেন সংস্কৃতি কর্মী সায়ন বিশ্বাস।