অনলাইন ডেস্ক : শেষ পর্যন্ত শোকজ করা হলো চন্দ্রনাথপুর এমই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৌসম দত্তকে। ৩০ নভেম্বর কাটিগড়ার বিইইও তিন দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর এই নির্দেশ দিয়েছেন।
কাটিগড়া শিক্ষা খন্ডের চন্দ্রনাথপুর এমই স্কুল বেশ কয়েকদিন ধরে সংবাদ শিরোনামে রয়েছে। সামাজিক মাধ্যমেও ওই স্কুল রীতিমতো ট্রেন্ডিং-এ। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মৌসম দত্তকে নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে সরগরম বিভিন্ন মহলও। একপক্ষ মৌসমবাবুর সমর্থনে মাঠে নামলেও আরেক পক্ষ পুরো উল্টো। প্রথমে অভিযোগ ছিল, প্রধান শিক্ষক মৌসম দত্তকে স্কুলে ঢুকে শারীরিক নিগ্রহ করেছে কিছু দুষ্কৃতি। ওই অভিযোগকে পাশ কাটিয়ে আরেক দলের দাবি, প্রধান শিক্ষক নাকি স্কুলের ছাত্রকে মারপিট সহ নানা অনৈতিক কাজ করে চলেছেন। এনিয়ে একসময় মাঠে নামে শিক্ষা বিভাগ। কাটিগড়ার বিইইও পুরো ঘটনার তদন্ত করতে এক কমিটি গঠন করেন। জানা যায়, ২৭ নভেম্বর পাঁচ সদস্যের ওই কমিটি চন্দ্রনাথপুর এমই স্কুলে তদন্তে যায়। তাঁরা তখন উভয় পক্ষের বয়ান রেকর্ড করে বিইইও রাজেশ চক্রবর্তীর কাছে পেশ করেন।
এদিকে, ওই তদন্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ৩০ নভেম্বর চন্দ্রনাথপুর এমই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মৌসম দত্তকে শোকজ নোটিশ দেন বিইইও। এতে তিন দিনের সময়সীমা দিয়ে জবাব দিতে মৌসম দত্তকে বলা হয়। ওই নোটিশে মোট ৮টি বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। বিইইও-র জারি করা নোটিশে বলা হয়, ক্লাস সিক্স-এর ছাত্ররা নিজে থেকেই তদন্ত কমিটিকে জানায়, তাদের ক্লাসের সুমন রায়কে মারধর করেছেন প্রধান শিক্ষক। এতে অন্য ছাত্রদের সহায়তা নিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া ওইদিন তদন্ত কমিটির সদস্যরা স্কুল চলাকালীন সময়ে কিছু ছাত্রদের স্কুল চৌহদ্দিতে কোদাল দিয়ে কাজ করতেও দেখেন। চন্দ্রনাথপুর এমই স্কুলে ক্লাস নাইন-এর ক্লাস চলতেও দেখেন তদন্তকারীরা। রীতিমতো উপস্থিতির খাতা ব্যবহার করে হাই স্কুলের কাজ এমই স্কুলে করতে থাকা ছাত্ররা জানায়, প্রতি মাসে একশো টাকা করে দিয়ে এই সরকারি এমই স্কুলে তারা হাই স্কুলের পড়া পড়ছে। বিইইও-র জারি করা নোটিশে আরও বলা হয়, চা বাগান স্কুলের জন্য সরকার নির্ধারিত সময় পরিবর্তন করে নিজের ইচ্ছা মতে স্কুল পরিচালনা করছেন প্রধান শিক্ষক। একইসঙ্গে ক্লাস এইট পাশ করা ছাত্রদেরও ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দিতে অনীহা প্রকাশ করেন মৌসম। নোটিশে প্রধান শিক্ষককে আরও বলা হয়, স্কুলের সময় বা এর পরেও ছাত্রদের দিয়ে কাজ করানোর প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাছাড়া স্কুলের ভেতর প্রধান শিক্ষক হিসেবে থাকা-খাওয়া ইত্যাদি নিয়ে সরকারি কোনও নির্দেশ দেখাতেও ব্যর্থ হন মৌসম দত্ত। একইসঙ্গে স্কুলকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবেও মৌসমবাবু ব্যবহার করে আসছেন বলেও তদন্তে ধরা পড়েছে। তাই উল্লেখিত বিষয় নিয়ে তিন দিনের মধ্যে নিজের বক্তব্য পেশ করতে চন্দ্রনাথপুর এমই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছেন কাটিগড়ার বিইইও রাজেশ চক্রবর্তী।