অনলাইন ডেস্ক : দলের দুই সাংসদ গৌরব গগৈ ও রকিবুল হোসেনের সভার নাম করে এক সরকারি আধিকারিক এর কাছ থেকে “ডোনেশন” নিয়ে বিপাকে পড়লেন উধারবন্দ ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি পুলক রায়। এ নিয়ে তার কাছে কৈফিয়ৎ তলব করেছে জেলা কংগ্রেস।
আগামী ১৩ আগস্ট উধারবন্দ ব্লক কংগ্রেসের উদ্যোগে উধারবন্দে দলের এক সমাবেশ হবে। এতে উপস্থিত থাকবেন গৌরব গগৈ এবং রকিবুল হোসেন। এক চিঠিতে একথা উল্লেখ করে ওই আধিকারিকের কাছে “ডোনেশন”চেয়েছেন পুলক বাবু। পুলক বাবু এভাবে চিঠি দেওয়ার পর ওই অধিকারিক “ডোনেশন” হিসেবে তাকে দেন ২০ হাজার টাকা। বর্তমানে যার রসিদের কপিও দেখা যাচ্ছে অনেকের কাছে।
ডোনেশন চেয়ে পুলকবাবুর এভাবে চিঠি দেওয়া এবং এর পর টাকা নেওয়ার প্রমাণ হিসেবে রসিদের সূত্র ধরে বর্তমানে দলের অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। তিনি এভাবে ডোনেশন নিতে পারেন কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দলের অনেক কর্মীই বলছেন, ১৩ আগস্ট তো উধারবন্দে গৌরব গগৈ ও রকিবুল হোসেনের কোনও দলীয় কার্যসূচিতে যোগ দেবার কথাই নয়। তবে কি তিনি, দল এবং দলের নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে অর্থ পকেটস্থ করার কারবার ফেঁদে বসেছেন? দলীয় বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, পুলক বাবু শুধু ওই সরকারি আধিকারিক নন, গৌরব গগৈ এবং রকিবুল হোসেনের সমাবেশের নাম করে একইভাবে আরও অনেকের কাছ থেকে আদায় করেছেন অর্থ।
এনিয়ে পুলক বাবু কে জিজ্ঞেস করলে তিনি ওই সরকারি আধিকারিকের কাছ থেকে “ডোনেশন” হিসেবে ২০ হাজার টাকা নেবার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তার দাবি, অন্য কারও কাছ থেকে তিনি “ডোনেশন” নেননি। আর ২০ হাজার টাকা ডোনেশন নেওয়ার প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, ১৩ আগস্ট ব্লক কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস। তাই ওইদিন দলের কিছু কার্যসূচি রয়েছে। কথা রয়েছে সেসব কার্যসূচিতে যোগ দেবেন গৌরব গগৈ এবং রকিবুল হোসেন। যদিও এই দুজনের যোগদানের ব্যাপারটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। গত ২৬ জুলাই ওই আধিকারিকের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হলে কুশল বিনিময়ের সময় দুজনের মধ্যে ১৩ আগস্টের সমাবেশ নিয়ে কিছু কথা হয়। তখন তিনি আধিকারিককে অনুরোধ করেন এই কার্যসূচির জন্য কিছু ডোনেশন দিতে। এতে আধিকারিক তাকে বলেন লিখিতভাবে
ডোনেশন চাওয়ার জন্য। সরল বিশ্বাসে তিনি ব্লক কংগ্রেসের প্যাডে সিল-স্বাক্ষর করে আধিকারিককে চিঠি লিখে দেন। এরপর আধিকারিক তাকে দেন ২০ হাজার টাকা। তিনি এই অর্থ প্রাপ্তির রসিদও দেন। ভাবছিলেন শীঘ্রই জেলা কমিটিকে ব্যাপারটা জানিয়ে দেবেন। কিন্তু জানানোর আগেই এনিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। ডোনেশন নিলেও এর পেছনে তার অর্থ আত্মসাতের কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। তিনি দলীয় কাজেই লাগাতে চেয়েছিলেন তা।
যদিও এ নিয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ পালকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ব্যাপারটা এদিনই তিনি সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানতে পেরেছেন। জানার পর পুলক রায়ের কাছে এ নিয়ে কৈফিয়ত তলব করেছেন। অভিজিৎ স্পষ্টভাবে জানান, ১৩ আগস্ট উধারবন্দে গৌরব গগৈ ও রকিবুল হোসেনের কোনও দলীয় সমাবেশে যোগ দেওয়ার সূচী নেই। আর যদি থেকেও থাকতো তবে এভাবে কোনও আধিকারিকের কাছ থেকে “ডোনেশন” নিতে পারেন না পুলকবাবু। দলীয় নিয়ম অনুযায়ী, ডোনেশন নেওয়া যেতেই পারে, তবে এক্ষেত্রে দলের কোনও শুভাকাঙ্ক্ষী বা সদস্য যদি নিজে থেকে আগ্রহী হয়ে এগিয়ে আসেন, তবেই নেওয়া যায় তা। কিন্তু কোনও সরকারি আধিকারিকের কাছে গিয়ে দলের কোনও কর্মকর্তার “ডোনেশন” চাওয়ার অধিকার নেই। এবার পুলকবাবু তার এই ডোনেশন চাওয়ার কিভাবে ব্যাখ্যা দেন তা খতিয়ে দেখে প্রদেশ কংগ্রেসের অনুমতিক্রমে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।